ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় মানবপাচারকারী মিজান লাপাত্তা!

পেকুয়া প্রতিনিধি ::

পেকুয়ায় ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি মিজান লাপাত্তা হয়েছে। বিজ্ঞাপন প্রচার করে মানবপাচারে লিপ্ত ছিল। ধরপাকড়ের ভয়ে ওই মিজান বর্তমানে আতœগোপনে রয়েছে। এদিকে মালয়েশিয়া, ওমান ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মানুষ পাঠানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ওই শীর্ষ মানবপাচারকারী। অপরদিকে তার হাতে প্রতারিত হয়ে নিঃস্ব হয়েছে পেকুয়ার অনেক মানুষ। গত ছয় মাস ধরে মানুষের টাকা মেরে মিজান লাপাত্তা হয়েছে। প্রতারিত শতশত মানুষ তার খোঁজে অস্থীর হচ্ছেন।

মিজানুর রহমান উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বাইন্যাঘোনা এলাকার মো.আলীর ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি। বিগত কয়েক বছর ধরে ওই ছাত্রদল নেতা আদম পাচারের সাথে জড়িয়ে পড়ে। তবে বিভিন্ন এজেন্সি ও ইমেগ্রেশনের লোভনীয় লঘু সম্বলিত বিজ্ঞাপন প্রচার করে মানবপাচারে জড়িত হয়েছে। সুদর মধ্যপ্রাচ্যের ওমান, দুবাইসহ বেশ কিছু দেশে মানুষ পাঠানোর প্রস্তাব দিয়ে ব্যানার, ফেষ্টুন ও পোষ্টারে ছাপিয়ে পেকুয়ার মানুষকে তার প্রতি দৃষ্টি আকৃষ্ট করে।

জানাগেছে মিজানের কোন বৈধ ট্র্যাভেল এজেন্সি নেই। কিন্তু তিনি বিদেশ প্রেরনের জন্য অহরহ মানুষের সাথে লেনদেন করেছেন। এদের অনেককে বিদেশ পাঠিয়েছেন। পাঠানো লোকগুলো যে ভিসা হাতে ধরিয়ে দিয়েছে এগুলো অধিকাংশ নকল। বিমান বন্দরে ইমেগ্রেশনে অনেককে বাংলাদেশে নকল ভিসার কারনে ফেরত পাঠায়। অপরদিকে কিছু কিছু লোকজন বাংলাদেশের ইমেগ্রেশন পাস হলেও সেদেশের ইমেগ্রেশনে নকল ভিসার দায়ে ধরা পড়ে। এদের অনেক ওইসব দেশে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাগারের অনধ প্রকোষ্টে বছরের পর বছর মানবেতর দিনাতিপাত করছেন।

জানাগেছে মিজানের কাছ থেকে ভিসা নিয়ে তার প্রতিবেশি রেজাউল করিম প্রকাশ বাবু (২৯) বিগত দু’বছর আগে ওমান পাড়ি দেন। ইমেগ্রেশনে পাস হওয়ার পর বাবু সেদেশে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। এরপর তিনি ছয়মাস ওমান জেলে ছিলেন। জানাগেছে বাবুকে আকামা না দেয়ায় সেদেশের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। কিন্তু ভিসা প্রদানকারী মিজানের সাথে তার চুক্তি হয় ২লাখ ৬০হাজার টাকা। আকামা, ভিসা ও সেদেশে কর্মের ব্যবস্থা সবকিছু মিজান করবেন। আকামা না থাকায় গ্রেফতার হয়ে বাবু ছয়মাস জেল খাটার পর তিনি বাংলাদেশে চলে আসেন। তবে তাকে দেশে ফিরে আনতে তার পিতা বাংলাদেশ থেকে বিমান টিকেটের জন্য উল্টো ২০হাজার টাকা পাঠান।

এদিকে মিজানের খপ্পরে পরে সর্বশ্রান্ত হয়েছে অসংখ্য যুবক ও মানুষ। তাকে এ প্রতারনায় সহায়তা করেছে তার আপন চাচা কাছিম আলী প্রকাশ খতিয়ান কাছিম। মিজানের মুলত জিম্মাদার হয়েছে অধিকাংশ লেনদেনে তার চাচা ওই কাছিম আলী। এছাড়া মিজানের পিতা মো.আলীও ছেলেকে অন্যায় ওই কাজে সহযোগিতা করেছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। মালয়েশিয়ায় সাগর পথে অনেক মানুষ অবৈধভাবে পাঠিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মিজান। মগনামা জেটিঘাট ও কাটাফাঁড়ি পয়েন্ট দিয়েও অনেক লোকজন ট্রলার যোগে মালয়েশিয়া পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে কুতুবদিয়া ও উত্তরাঞ্চলের সন্ধ্যান না পাওয়া লোকজনের নিকটাতœীয়রা তাদের স্বজনের খোঁজ নিতে মিজানের শরনাপন্ন হওয়ার চেষ্টা করছে। মিজান লাপাত্তা হওয়ায় তারা বাড়িতে এসে ফিরে যাচ্ছেন।

পাঠকের মতামত: