নিজস্ব প্রতিবেদক,চকরিয়া
চকরিয়া লামা আলীকদম সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাহিন্দ্রাসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবিতে ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে পাহাড়ি জনপদের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে এই সড়কে কার্যত বন্ধ ছিল গণপরিবহন চলাচল। এ অবস্থার কারণে চকরিয়া, লামা ও আলীকদমে যাতায়াতকারী যাত্রী-সাধারণ সারাদিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। যাত্রী সাধারণ সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনালে গিয়ে বাস, জীপ, সর্টবডি গাড়ি না পেয়ে পুনরায় বাড়িতে ফেরত যেতে বাধ্য হয়েছে।
এদিকে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া পরিবহণ মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছেন- অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বৈঠকে বসার আহবান জানায় আলীকদম থানা পুলিশ। সেই আহবানে সাড়া দিয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিকের একটি প্রতিনিধি দল সর্টবডি যোগে চকরিয়া থেকে সুরাজপুর-ইয়াংছা সড়ক দিয়ে আলীকদমের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন।
এসময় পথিমধ্যে দুপুর বারোটার দিকে সড়কের চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুরস্থ নিভৃত-নিসর্গ পার্কের কাছে সেগুন বাগান এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার চালক-শ্রমিক ও তাদের ভাড়াটে কিছু দুবৃর্ত্ত সিএনজি গাড়ি দিয়ে ব্যারিকেড বসিয়ে আলীকদমগামী মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দের উপর হামলা চালায়। এ অবস্থার কারণে তারা আর আলীকদম থানায় বৈঠকে যেতে পারেনি।
এ সময় সিএনজি শ্রমিক ও দুবৃর্ত্তদের হামলায় আহত হয়েছেন তিনজন চালক ও শ্রমিক। তারা হলেন- জীপচালক আবদু ছালাম (৪৫), শ্রমিক জামাল উদ্দিন (৫৫) ও রুহুল কাদের (৩৫)। আহতদের চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
হামলার ঘটনাটি পরিকল্পিত দাবি করে এবং হামলার প্রতিবাদে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণে পরিবহণ মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনালস্থ সংগঠনের প্রধান কার্যালয়ে জরুরী সভা করে। ওই সভা থেকে তাঁরা হামলার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান। এ সময় পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে হামলার ঘটনায় আইনগত সহযোগিতা কামনা করেছেন।
জরুরি সভায় পরিবহণ মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন- যতদিন পর্যন্ত চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাহিন্দ্রাসহ তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ করা হবে না ততদিন ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। তাঁরা বলেন, চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কে তিন চাকার গাড়ি যাত্রী নিয়ে চলাচলের কারণে সড়ক দূর্ঘটনা বেড়েছে।
তাই এসব গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে কক্সবাজারের চকরিয়া ও বান্দরবান জেলাসহ ওই জেলার লামা ও আলীকদম উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে ইতোমধ্যে আবেদন করেন বাস-জীপ মালিক ও শ্রমিক সংগঠন। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর আবেদন করলেও সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত সেই দাবির কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই মঙ্গলবার ভোর থেকে শুরু হওয়া অনির্দিষ্টকালের এই পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তাঁরা।
ধর্মঘট চলাকালে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে জরুরী সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম-লোহাগাড়া-চকরিয়া-লামা-আলীকদম-বদরখালী-মহেশখালী-সুয়ালক-বান্দরবান সড়ক যানবাহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা পারভেজ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন একই সমিতির সভাপতি নুরুল হোসেন, ফরিদ আহমেদ, আরকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জহিরুল ইসলাম, চকরিয়া-লামা-আলীকদম রোড কমিটির সভাপতি রফিক আহমদ, আরকান সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের কক্সবাজার জেলার যুগ্ম সম্পাদক কামাল আজাদ,জীপ মালিক সমিতির সম্পাদক জাফর আহমদ, লামা-আলীকদম শ্রমিক ইউনিয়ন রোড় কমিটির সম্পাদক রফিক উদ্দিনসহ বাস ও জীপ মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ##
পাঠকের মতামত: