ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

চিরিঙ্গা মজিদিয়া মাদরাসা মাকের্টের ব্যবসায়িদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ

বার্তা পরিবেশক :: চকরিয়া পৌরশহরের হাসপাতাল রোডে মজিদিয়া মাদরাসা মাকের্টের ব্যবসায়িদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। ওইমহলকে চাঁদা না দিলে দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে থাকা ব্যবসায়িদের উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছেন। তাদের হুমকিতে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ে স্থানীয় ব্যবসায়িরা।

এঘটনায় গত ১৮ মে নাছির উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করার কথা জানিয়েছেন মজিদিয়া দারুচছুন্নাহ পৌর দাখিল মাদরাসার সভাপতি ও ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিবুল হক। নাছির উদ্দিন সোসাইটি বাইতুর মাওয়া জামে মসজিদের সভাপতি ও ৮নং ওয়ার্ডের মাষ্টারপাড়া মৃত বদরুদ্দোজা হেলালীর পুত্র।

গত ২০মে দুপুর ১২টার দিকে চকরিয়া পৌরএলাকার ৮নং ওয়ার্ডের বাইতুশরফ রোডে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিলর মুজিবুল হক বলেন, ১৯৮২ সালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও কয়েকজন শিক্ষানুরাগী মিলে চকরিয়া সরকারি হাসপাতাল রোডে মজিদিয়া দারুচছুন্নাহ পৌর দাখিল মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাদরাসাটি সুনামের সহিত পরিচালিত হয়ে আসছে।

১৯৮৫ সালে মাদরাসার সহকারি শিক্ষক মাওলানা আবদুর রহমান হেলালীর আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালিন জেলা প্রশাসক হাসপাতাল রোডের সাত শতক জমি বরাদ্দ দেন। ওই জমির উপর পর্যায়েক্রমে গড়ে তুলেন মাদরাসাটির চারতলা ভবন। মার্র্কেটের ভবনের উপরের দুই তলায় মাদরাসা, নিচের দুই তলায় দোকানসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠাকে ভাড়া দেওয়া হয়। এরপর থেকে মার্কেটের ব্যবসায়িরা মজিদিয়া দারুচছুন্নাহ পৌর দাখিল মাদরাসার নামে চিরিঙ্গা ইসলামী ব্যাংক শাখায় ১৬০৬২ নং হিসাবে নিয়মিতভাবে ভাড়া পরিশোধ করে আসছেন। মার্কেটের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভাড়ার টাকা দিয়ে মাদরাসাটির শিক্ষকদের বেতন ও অন্যান্য খরচ মেটানো হয়।
কাউন্সিলর মুজিব আরও বলেন, মাদরাসটির ছাত্র সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জায়গার সংকট হয়। পরবর্তী ২০০৪ সালে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কোচপাড়া এলাকায় জায়গা ক্রয় করে মাদরাসা স্তানান্তর করা হয়। ইতোমধ্যে সরকারিভাবে ভবন বরাদ্দ পেয়ে সুষ্ঠুভাবে মাদরাসাটি পাঠদান দিয়ে আসছেন।

গত ১৫ মে চকরিয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের মাষ্টারপাড়ার মৃত বদরুদ্দোজা হেলালীর পুত্র নাছির উদ্দিন মজিদিয়া মাকের্টের ব্যবসায়িদের কাছে চাঁদা দাবী করেন। ব্যবসায়িরা কিসের চাঁদা জিজ্ঞাসা করলে উল্টো প্রাণনাশের হুমকিও দিয়ে যাচ্ছেন নাছির উদ্দিনকে। তাকে চাঁদা না দিলে দোকান তালাবদ্ধ ও সামনে বালুর ফেলার হুমকি দিয়েছেন।

এমতাবস্থায় মাদরাসা পরিচালনা কমিটি বসে নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সিদ্ধান্ত নেন। গত ১৮ মে মাদরাসার সুপার মাওলানা নুরুল আবছার ছিদ্দিকী বাদি হয়ে নাছির উদ্দিনকে আসামী করে চকরিয়া উপজেলা জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি কক্সবাজার পুলিশ ব্যুরো ইনভেষ্টিগেশনকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

চাঁদাবাজদের অব্যাহত হুমকিতে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন মজিদিয়া মাদরাসা মাকের্টের শতাধিক ব্যবসায়ি। তারা চক্রটি নানাভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। দোকানে তালা ও সামনে বালু ফেলা হবে বলে জানিয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়িদের। দ্রæত সময়ে এসব চাঁদাবাজদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবী করেন ব্যবসায়িরা।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, মাদরাসা সুপার মাওলানা নুরুল আবছার ছিদ্দিকী, ব্যবসায়ি কামাল উদ্দিন, ডা. নুরুল কবির, নাজেম উদ্দিন, প্রকাশ চন্দ্র দাশ, সুমন কান্তি দাশ ও মাওলানা আবদুর রহমান হেলালী।

নাছির উদ্দিন গং এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের জোর দাবি জানিয়েছেন ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক/কর্মচারী, ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীরা। অন্যথায় ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করা হবে বলেও ঘোষণা দেন তারা।

পাঠকের মতামত: