ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

চিকিৎসকের শাস্তির দাবী স্বজনদের

চকরিয়ায় চিকিৎসকের অবহেলায় ব্যবসায়ি মৃত্যুর ঘটনায় তিনসদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন 

নিজস্ব প্রতিবেদক ::
চিকিৎসকের অবহেলায় গত ৭ মে ব্যবসায়ি ফোরকানুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ১২ মে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিন চিকিৎসক দিয়ে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। রোগীর চিকিৎসায় কোন ধরণের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শোভণ দত্ত।

জানা যায়, গত ৫ মে সাড়ে ৫টার দিকে চকরিয়া পৌরশহরের কোচপাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ি ফোরকানুল ইসলাম (৩৫) পেটের ব্যাথা নিয়ে তার স্বজনরা চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। দুইদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর ফোরকানের রোগ নির্ণয় করতে পারেনি চিকিৎসকরা। গত ৭ মে তার শারিরিক অবস্থা অবনতি হলে স্বজনরা চকরিয়া মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে ডা.কবির আহমদকে দেখানোর পর কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে ফোরকানকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফোরকানকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওইদিন রাত দশটার দিকে মৃত্যুরকুলে ঢলে পড়েন। তার মৃত্যু নিয়ে স্বজনদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছে।
ফোরকানুল ইসলামের ভাই এমরানু ইসলাম বলেন, পেটে ব্যাথা নিয়ে তার ভাই ফোরকানকে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কর্মরত চিকিৎসক তার ভাইকে বেডে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেননি। মাঝে মধ্যে একটু দেখে চলে যান। নার্সরাও আচার ব্যবহার ভাল করেনি। দুইদিন চিকিৎসায় কোন উন্নতি দেখলাম না। তারা কোন রোগও নির্ণয় করতে পারেনি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে সেখানে মারা যায় তার ভাই।
চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউসার উদ্দিন কচির বলেন, তার সম্বন্ধী ফোরকানুল ইসলাম পেটের ব্যাথা নিয়ে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির দুইদিন পরও কোন চিকিৎসা দেননি চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা তার ভাইকে চিকিৎসা দিচ্ছে না বলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শোভণ দত্তকে বিষয়টি বুঝানোর পরও তিনি গুরুত্ব দেননি বলে জানান কাউসার উদ্দিন কছির। তাদের অবেহলার কারণে অকালে মৃত্যুরকুলে ঢলে পড়েছেন ফোরকান।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক ও নার্সদের নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালের বেহাল অবস্থা। এখানে চিকিৎসা সেবা নাই বললে চলে। সাধারণ রোগীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ওইদিন কর্মরত চিকিৎসক, ডা. শোভণ দত্ত সহ নার্সদের অন্যত্রে বদলি এবং শাস্তি দাবী করেন তিনি।
এদিকে ব্যবসায়ি ফোরকানুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় গত ১২ মে তিন সদস্য বিশিষ্ট্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. খালেদ হোসেন, দন্ত চিকিৎসক ডা. মহিউদ্দিন ও ডা. নুরুল আজমকে নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়। তারা আগামী তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শোভণ দত্ত।
তিনি আরও বলেন, আমাকে হাসপাতালের প্রশাসনিক কাজ গুলো দেখতে হয়। রোগীর স্বজনরা বিষয়টি বলার পর তাৎক্ষণিক খোজ খবর নিয়েছি। এরপরও চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অবহেলা বা অনিয়ম প্রমাণিত হলে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: