ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ার পশ্চিম বড় ভেওলা ইউপি নির্বাচন

নৌকা পেতে জালিয়াতির আশ্রয়, কেন্দ্রে বৈধ কমিটির অভিযোগ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: চকরিয়ার মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলার নিয়ন্ত্রণাধীণ পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তথা নৌকা প্রতীক পেতে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রবিউল এহেছান লিটনের বিরুদ্ধে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে তার নাম না থাকলেও তিনি অস্তিত্ববিহীন একটি কমিটি গঠন করে সেই কমিটির মাধ্যমে তাকে (রবিউল) দলের একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে রেজুলেশন তৈরির পর তা জেলা আওয়ামী লীগ বরাবর জমা দেওয়া হয়। সেই অবৈধ কমিটির একক প্রার্থীর রেজুলেশন মোতাবেক জেলা আওয়ামী লীগও রবিউল এহেছান লিটনের নাম কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছে। দলীয় প্রতীক নৌকা দিতে জেলা কর্তৃক কেন্দ্রে প্রেরিত তালিকায় রবিউলের নাম এক নাম্বারে দেওয়া হয়েছে।

এসব অভিযোগ এনে তদন্তপূর্বক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে গতকাল বুধবার। সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচিত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগটি সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের অভিযোগ সেলে জমা দেওয়া হয়।

অভিযোগে জানানো হয়, আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণের জন্য কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক গত ১৫ অক্টোবর দলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয় তিনজনের নাম জেলা কমিটির বরাবর প্রেরণ করার। সেই হিসেবে যথাক্রমে মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা, ইউনিয়নের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ও মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাইছারুল হকের নামসহ সভার রেজুলেশন জেলা আওয়ামী লীগের কাছে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু রবিউল এহেছান লিটন নামের এক ব্যক্তি তার মতো করে একটি ভুয়া কমিটি গঠনসহ তাকে একক প্রার্থী করা হয়েছে মর্মে রেজুলেশনসহ জেলা আওয়ামী লীগের কাছে জমা দেয়। জেলা আওয়ামী লীগও সেই তথ্য যাচাই না করে রবিউলের নাম কেন্দ্রের কাছে এক নাম্বারে পাঠিয়েছে।

পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল জানান, প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ভুয়া কমিটি গঠন করে জেলা কমিটির কাছে জমা দেওয়ার বিষয়টি অবগত হওয়ার পর আমরা দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি।

তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘ভুয়া কমিটি গঠন ও মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া রবিউল এহেছান লিটন দলের কোন পদ-পদবী এমনকি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্যও নয়। বিগত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষেও কাজ করেছিলেন অভিযুক্ত রবিউল। এসব বিষয় আমরা দলের প্রধানের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীলরা তৃণমূলের মতামতকে কোনো গুরুত্বই দিচ্ছে না। তাদের বিভিন্ন ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক দিতে পছন্দসই ব্যক্তিদের নাম সর্বাগ্রে পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রে।

তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট রবিউল এহেছান লিটন বলেন, ‘যারা নিজেদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে কেন্দ্রের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে তারা পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কেউ নন, তাদের কমিটির কোনো বৈধতা নেই। ওই কমিটি গঠনের সময় জেলা আওয়ামী লীগের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। তাই তাদের কমিটির কোনো ধরণের বৈধতা যেহেতু নেই, সেহেতু অভিযোগেরও ভিত্তি নেই।’

রবিউল দাবি করেন, পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বৈধ কমিটির সভাপতি হচ্ছেন এরফান উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল। তবে তৃণমূলের দাবি, এই কমিটি একেবারেই ভুয়া।

 

পাঠকের মতামত: