ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী বিদ্রোহী প্রার্থীরা, আ.লীগে অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচনী মনোনয়ন বোর্ড কোন বিদ্রোহী প্রার্থীকে দলের মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে চকরিয়া উপজেলার একাধিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হওয়া চেয়ারম্যানরা দলের মনোনয়ন পাওয়া এবার ক্ষিণ হয়ে এসেছে।

পাশাপাশি দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে গেল নির্বাচনে ১৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে ছিলেন এইধরণের অন্তত ২০-৩০জন আওয়ামীলীগ নেতা এবার আওয়ামীলীগের কাছে দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন। তদমধ্যে শুধুমাত্র বদরখালী ইউনিয়নে আছে দলের চারজন বিদ্রোহী প্রার্থী।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের নৌকা পেয়েছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরে হোছাইন আরিফ। ওই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করে ভোটযুদ্ধে ছিলেন আরও চারপ্রার্থী। তাঁর মধ্যে আওয়ামীলীগ নেতা খাইরুল বশর আনারস প্রতীকে (৪২১৩) ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।

আওয়ামী লীগের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী আনম হেফাজ সিকদার চশমা প্রতীকে (৪১৬৭) ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন। আর ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী মোহাম্মদ আলী চৌধুরী মোটরসাইকেল প্রতীকে (২১০১) ভোট এবং আওয়ামী লীগের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী বদরখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবুল কাশেম ভুট্টো সিকদার (একে ভুট্টো সিকদার) টেলিফোন প্রতীকে পেয়েছিলেন মাত্র ৪০ ভোট। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নুরে হোছাইন আরিফ নৌকা প্রতীকে পেয়েছিলেন ১৭৭৯ ভোট। যদিও নির্বাচনে এইধরণের ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে নুরে হোছাইন আরিফ দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীরা ভোট যুদ্ধে থাকার বিষয়টি গণমাধ্যম এবং আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকারের নির্বাচনী দলীয় মনোনয়ন বোর্ড এর ঘোষণা অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী বিদ্রোহী প্রার্থীরা এবার দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করে যারা পরাজিত হয়েছেন তাঁরাও দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন না। ইতোপুর্বে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে যারা নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন কিংবা পরাজিত হয়েছেন এমন কাউকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেবেনা।দলের মনোনয়ন বোর্ডে যাদের নাম প্রস্তাব করা হবে তাঁরা অতীতে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে করেছে কিনা যাচাই-বাচাই করা হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন বোর্ড (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) এর সিদ্ধান্তের বিষয়টি সর্ম্পকে আমরা অবগত আছি। কেন্দ্র থেকে যেভাবে নির্দেশনা আসবে প্রার্থী মনোনয়নের তালিকা প্রেরণের ক্ষেত্রে সবকিছু সে ভাবে হবে। প্রয়োজনে জেলা আওয়ামীলীগের সর্বশেষ নির্দেশনা কী তা জেনে তারপরও আমরা ব্যবস্থা নেবো।

তবে এ ক্ষেত্রে সাধারণ ভোটারের প্রশ্ন! যেসব নেতা-কর্মীরা এলাকায় বিতর্কিত তাদেরকে দল মনোনয়ন দেয় কেন? পক্ষান্তরে তারা কম ভোট পায়,    কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থীরা ভোট পায় অনেক বেশী। এতে দলীয় নেতা-কর্মীরা বুঝতে পারে দলীয় সিদ্ধান্তে অনেক সময় ভূল থাকে । তাই আগামীতে প্রার্থী বাচাইয়ে ভোটারের মনোনীত ও জনপ্রিয় মানুষকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন সাধারণ নেতা-কর্মীরা।

পাঠকের মতামত: