ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় ছাত্রের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ::
অতিরিক্ত ঘুমের ইনজেকশন দেয়ার ফলে কক্সবাজার ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মৃত্যু বরণ করা ব্যক্তির নাম সৈয়দুল ইসলাম। তিনি উখিয়া ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র এবং সোনার পাড়ার প্রবাসী মাওলানা কামাল উদ্দিনের পুত্র।

রোগীর স্বজনেরা জানিয়েছেন, পেট ব্যাথা নিয়ে গত বুধবার সকালে সৈয়দুল হককে আল ফুয়াদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে ছয়টি পরীক্ষা দেয়া হয়। চিকিৎসা দেয়ার পর কোনো উন্নতি হয়নি। উন্নতি না হওয়ায় অস্থিরতা দেখা দিলে ঘুমের ইনজেকশন দেন চিকিৎসক। এরপর ছটপট করতে করতে মৃতুর কোলে ঢলে পড়ে। আকস্মিক এমন মৃত্যুতে তরুণ সৈয়দুল হকের স্বজেনরা শোকে পাগলপ্রায়। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে দাবি জানিয়েছেন রোগীর স্বজনেরা।

ফুয়াদ আল খতীব হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন খালেদ বলেন, এ বিষয়ে তিনি অজ্ঞ। তবে বিষয়টি মেডিকেল প্রধান ভাল জানবে। ফুয়াদ আল খতীব হাসপাতালের পরিচালক জামায়াত নেতা ডা. শাহ আলম বলেন, এখানে আমার বলার কিছু নেই। স্ব স্ব বিভাগে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা এ বিষয়ে বক্তব্য দিবে।

জানা যায়, কক্সবাজারে জামায়াত নিয়ন্ত্রিত বেসরকারী হাসপাতাল ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালে চিকিৎসার নামে গলাকাটা বাণিজ্য করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে কতিপয় মহলকে ম্যানেজ করে নানা অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে রোগীদের কাছ থেকে।

জানা গেছে, যুদ্ধাপরাধে দায়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর মালিকাধীন হাসপাতাল কক্সবাজার শহরের ‘ফুয়াদ আল খতিব’। মীর কাশেম আলীর পক্ষে দীর্ঘদিন এটি পরিচালনা করে আসছেন জামায়াতপন্থি চিকিৎসক ডা. শাহ আলম। বর্তমানে ডা. শাহ আলম হাসপাতালটির চেয়ারম্যান।

স্থানীয়রা এটিকে আল ফুয়াদ হাসপাতাল হিসেবেই চিনে। আল ফুয়াদ হাসপাতালে অপারেশন, সিজার, পরীক্ষা—নিরীক্ষা, ভর্তি ও চিকিৎসার নামে বেপরোয়াভাবে গলা কাটছে রোগিদের। এক প্রকার জিম্মি করে টাকা আদায় করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এই হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় একের পর এক রোগির মৃত্যু বা পঙ্গু হওয়ার ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন একটি ঘটনারও ব্যবস্থা নেয়নি। এ কারণে দিনদিন রোগিদের সাথে বেপরোয়া আচরণ করে যাচ্ছে আল ফুয়াদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগ আছে, কতিপয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা জামায়াতের এই হাসপাতাল থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আশ্রয়—প্রশ্রয় দেয়। একারণে বারবার অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে হাসপাতালটি।

পাঠকের মতামত: