ছোটন কান্তি নাথ ঃ
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারের চকরিয়ার বিএমচর ইউনিয়নের ‘ছৈনাম্মারঘোনা মুজিব কিল্লা’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রবিবার (২৩ মে) এই মুজিব কিল্লা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় কর্তৃক মুজিব কিল্লা নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে ‘ছৈনাম্মারঘোনা মুজিব কিল্লা’ এর নির্মাণকাজ শেষ করা হয় সম্প্রতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রবিবার থেকে উম্মুক্ত হয়ে গেছে এই মুজিব কিল্লা।
ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীন চকরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান জানান, মূলত এই মুজিব কিল্লা নির্মাণ করা হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় গবাদী পশুগুলোকে নিরাপদে রাখার জন্য। যখনই দুর্যোগ কেটে যাবে তখন গবাদী পশুগুলোকে মালিকেরা নিজের হেফাজতে নিয়ে যাবেন। বাকী সময় এই মুজিব কিল্লা যে কোন সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ জনস্বার্থে ব্যবহার করার সুযোগ অবারিত রয়েছে।
ছৈনাম্মারঘোনা মুজিব কিল্লা উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম এমএ। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, দুই ভাইস চেয়ারম্যান মকছুদুল হক চুট্টু ও জেসমিন হক জেসি চৌধুরী, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মুজিব কিল্লা প্রকল্পের প্রকৌশলী বাকী বিল্লাহ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান, মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী চকরিয়ার টিম লিডার সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা, বিএমচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউল আলম, বিএমচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ।
ছৈনাম্মারঘোনা মুজিব কিল্লা উদ্বোধনের আগে স্থানীয় জনগণের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ জাফর আলম বলেন, ‘বৃহত্তর চকরিয়ার উপকূলীয় এলাকার বদরখালীতে একটি মুজিব কিল্লা থাকলেও তা ব্যবহার অনুপযোগী ছিল। সেই অবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চকরিয়া উপকূলের মানুষের জন্য বিএমচর ইউনিয়নের ছৈনাম্মারঘোনায় মুজিব কিল্লা নির্মাণ করে দিয়েছেন প্রাকৃতিক যে কোন দুর্যোগের সময় মানুষের পালিত গবাদী পশুগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার জন্য। এজন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বাচনী এলাকার জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিকতভাবে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
এমপি জাফর আলম বলেন, ‘ছৈনাম্মারঘোনা মুজিব কিল্লাটি নির্মাণ করা হয়েছে মাটি ভরাটের মাধ্যমে উঁচু জায়গার ওপর। তাই ভারী বৃষ্টিপাতের সময় চারিদিকের মাটি সরে যেতে পারে বিধায়, এই মুজিব কিল্লা টেকসইভাবে সংরক্ষণের জন্য চারিদিকে মাটি ফেলে ও ঘাসসহ গাছের চারা রোপন করার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।’
উল্লেখ্য, মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলে রবিবার দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে ১১০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ৩০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, ৩০টি জেলা ত্রাণ গুদাম-কাম-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্র ও পাঁচটি মুজিব কিল্লার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি একইসাথে ৫০টি মুজিব কিল্লার ভিত্তিপ্রস্তর ও স্থাপন করেন।
পাঠকের মতামত: