চকরিয়া সংবাদদাতা ::
চকরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এক ছাত্রীর সাথে ৬বছর ধরে অনৈতিক সম্পর্ক ও ধর্ষণের অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মুরাদুল করিম সিফাতসহ ৩জনের নামে আদালতে মামলা করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ছাত্রী (ছদ্মনাম চুমকি) বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, কক্সবাজারে গত ২৩এপ্রিল উক্ত মামলাটি (নং সিপি-১৫২/১৯) দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিকেশন (পিবিআই), কক্সবাজারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।
মামলার আর্জি ও ২৪ এপ্রিল দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, তার পিতার বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাওতে। চকরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে লেখা-পড়া করার সুবাদে বিগত ২০১৩ সালে পরিচয় হয় চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের ছিকলঘাটস্থ মুক্তিযোদ্ধা মৃত আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর ছোট ছেলে মুরাদুল করিম সিফাতের। সেই থেকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে দীর্ঘ ৬ বছর পযর্ন্ত নানা অনৈতিক ও শাররীক মেলামেশায় লিপ্ত হয়। এমনকি তার (ধর্ষিতা নারী)র অন্যত্রে যোগ্য পাত্রের সাথে বিয়ের প্রস্তাব আসলে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়িয়ে দিয়ে বিয়ে বন্ধসহ চরিত্র হননের হুমকি দেন এবং উক্ত হুমকির মাধ্যমে তার কাছ থেকে (ধর্ষিতা ছাত্রী) নগদে কয়েক দফায় ৯০ হাজার টাকা ও ২ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেন। এরপর তাকে (সিফাত) বিয়ে চুড়ান্ত করতে একাধিকবার বললেও আজ-কাল বলে কালক্ষেপন করতে থাকেন।
বিগত ৬ বছরের সম্পর্ক ও বিয়ের প্রস্তাবকে চুড়ান্ত রূপ কাবিননামা সম্পাদনের জন্য সর্বশেষ গত ২ মার্চ’১৯ইং রাত ৯টার দিকে তার (বাদী) বাড়িতে গিয়ে বিভিন্নভাবে ফুসলিয়ে পবিত্র কোরআন শরীফ নিয়ে শপথ করে একজন ধর্মীয় মৌলভীকে ডেকে তাদের বিবাহ সম্পাদিত হয়েছে মর্মে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সহবাস (ধর্ষণ) করে। ওই ঘটনার পর গত ১৬ এপ্রিল রাত৯টার দিকে তিনি (ছাত্রী) সিফাতের বাড়িতে কাবিননামা সম্পাদনের জন্য গেলে অভিযুক্ত সিফাত ও তার মা-ভাইদের নির্দেশে কোন ধরণের কাবিননামা দিবেনা বলে হুমকি দেন। বিষয়টি ছাত্রীর মা-ভাই ও আত্মীয় স্বজনের কাছে অবহিত করলে তারাসহ গত ১৭ এপ্রিল অভিযুক্ত সিফাতের বাড়িতে যান। ওই সময় বিবাহ কিংবা কাবিননামা সম্পাদন করবেনা বলে হুমকির এক পর্যায়ে বেধম মারধর করেন। ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রীকে স্থানীয় লক্ষ্যারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা কাইছারের নেতৃত্বে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে চকরিয়া জমজম হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বিষয়টি চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল করিম সাঈদী এবং কক্সবাজার সদর থানাকে অবহিত করেন। ফলে স্থানীয় শালিসে কোন সমাধান না হওয়ায় ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, কক্সবাজারে অত্র মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখিত ধর্ষক মুরাদুল করিম সিফাত (২৭) কে ১ নং আসামী এবং হামলা ও ইন্ধনের অভিযোগে তার ভাই রেজাউল করিম সেলিম (৩৮) কে ২নং ও মাতা নেছারা বেগম (৫৫)কে ৩নং আসামী করা হয়েছে।
স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে ভূক্তভোগী ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রী (ছদ্মনাম চুমকি) জানান, তার পিতা নাই, একজন এতিম, বিয়ের প্রলোভনে নির্যাতিত, ধর্ষিত হওয়া সত্ত্বেও যদি বিজ্ঞ আদালত ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের মাধ্যমে ন্যায় বিচার বঞ্চিত হলে তার আত্মহত্যা করার ছাড়া কোন উপাই নাই। তাই তিনি স্বামীর ন্যায্য অধিকারটুকু পেতে বিজ্ঞ আদালতসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন।
পাঠকের মতামত: