ওমর ফারুক হিরু, কক্সবাজার :: করোনা ভাইরাস সংক্রমনের এই সংকটে টিকা নেওয়ার পরেও মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা সহ নানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় করোনা সংক্রমনের সময়েও অনেকের মাঝে সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে। তারা রক্ষা করছেনা সামাজিক দুরত্ব। ব্যবহার করছেননা মাস্ক। লকডাউন চলাকালেই এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে। এটিকে খুবই ঝুঁকিপূর্ন বলছেন সচেতন নাগরিকরা।
গতকাল রোববার বেলা ১১ টার দিকে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল গেইটে দেখা যায়, রোগীর স্বজন সহ বেশ কিছু লোকজন হাসপাতালে প্রবেশের চেষ্টা করছেন। কার আগে কে যাবে এই চেষ্টায় রীতিমত জটলা লেগে গেছে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে গেইটে দায়িত্বে থাকা যুবক চেষ্টা করছে অপ্রয়োজনে কাউকে প্রবেশ না করাতে।
তিনি যাচাই করে প্রকৃত রোগীর স্বজন অথবা জরুরী কাজে আসা ব্যক্তিকে’ই একমাত্র প্রবেশ করতে দিচ্ছে। এতে লোকজনের জটলার সৃষ্টি হয়। ওখানে কে রোগী আর কে স্বজন তাও বুঝা যাচ্ছিলনা। গাঁ ঘেষা ঘেষি করে অবস্থান করা লোকজনের মধ্যে ছিলনা সামাজিক দুরত্ব। তারা মানছিলেন না স্বাস্থ্যবিধি।
এতে বিরক্ত ও বিভ্রত ছিল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সচেতন লোকজন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি জানান, হাসপাতালে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী আসে। তাদের সাথে আসেন স্বজনরা। এই রোগে’র ভাইরাস যখন একজন থেকে অন্যজনের কাছে ছড়ায়- সেই ক্ষেত্রে অন্তত হাসপাতালের গেইটে এমন দৃশ্য কোন ভাবেই উচিৎ নয়।
জটলা থেকে দুরে সরে আসা সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবক জানান, এমন জটলার দৃশ্য দেখে ওই মুহুত্বে হাসপাতালে প্রবেশ করতে চাননা তিনি। কারণ তার সামনেই বেশ কয়েকজন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী আনা-নেওয়া হয়েছে। আর এরই মধ্যে মানুষ ভীড় ঠেলে যাতায়াত করছে।
জাবেদ হোসেন নামে চিকিৎসা নিতে আসা আরেক যুবক জানান, এই অবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়ী। হাসপাতালের ভিতরে যেমন সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা এবং মাস্ক ব্যবহার আবশ্যক করে রাখা হয়েছে, একইভাবে হাসপাতালের বাইরেও একই পরিবেশ তৈরী করা উচিৎ। কারণ এখানেই করোনা রোগীরা আসে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শাহীন মোহাম্মদ আব্দুর রহমান চোধুরী চকরিয়া নিউজকে জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমন থেকে বাঁচতে অবশ্যই সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে। মাস্ক ব্যবহার করতে হবে এবং নিয়ম অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। এমনকি করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ার পরেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
হাসপাতালের গেইটে’র এই অবস্থার ব্যাপারে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। কিন্তু লোকজনকে বুঝাতে এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে তারা হিমসিম খাচ্ছে। একদিকে হাসপাতালেই লোকবল কম অন্যদিকে লোকজনের মধ্যে সচেতনতার অভাব। যার ফলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে ম্যানেজিং কমিটির মিটিংএ এই বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে। হাসপাতালের বাইরে শৃংখলা রক্ষায় জনপ্রতিনিধিরা সহযোগিতা করার কথা রয়েছে। তবে এই সংকটে নিজ এবং অন্যের জীবন রক্ষার্থে সবার সচেতন হওয়া আবশ্যক।
পাঠকের মতামত: