নিজস্ব প্রতিবেদক. কক্সবাজার :: করোনা সংক্রামনের কারনে প্রায় ২ বছর ধরে স্কুল কলেজ বন্ধ,কিন্তু সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য বরাদ্ধ থেকে নেই তবে সেই বরাদ্ধ আসলে কতটুকু জনকল্যাণে ব্যয় হচ্ছে সেই প্রশ্ন সবার।
সম্প্রতী কক্সবাজারের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরুরী সংস্কারের জন্য প্রতিটি স্কুলে ২ লাখ টাকা করে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া টাকার খোঁজ নিতে গেলে উঠে আসে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতির তথ্য। বেশির ভাগ স্কুলেই এই ক্ষুদ্র মেরামতের টাকা লুটপাট হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবার সরকারের এই টাকা খরচ এবং বিল উঠানো নিয়ে আমলা তান্ত্রিক জটিলতা এবং পদে পদে ঘুষ বানিজ্যের কারনে অর্ধেক টাকা পথেই খরচ হয়ে যায় বলে জানান স্কুল সংশ্লিষ্টরা।
অভিযোগে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলায় প্রায় দেড় শতাধিক স্কুলে সরকারের পক্ষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে জরুরী সংস্কারের জন্য ২লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার ৩৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যার মধ্যে ঈদগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাইজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ লরাবাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয়, ভোমরিয়াঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ মাইজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাহাসিয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইছাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর লরাবাক সিকদারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ওয়াহেদার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্বপোকখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব নাপিতখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খানঘোনা সরকারিপ্রাথমিক বিদ্যালয়, ধর্মেরছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্যভারুয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ খুরুশকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য খুরুশকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডিকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহসনিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কলাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য ঝিলংজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চান্দেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাহারছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম চৌফলদন্ডি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চৌফলদন্ডি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,নতুন মহাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পশ্চিম চৌফলদন্ডি হাকিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিত গোমাতলী চরমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,আবুশামা সওদাগর রেজিস্ট্রাট প্রাথমিক বিদ্যালয়,ঘোনপাড়া রেজিস্ট্রাট প্রাথমিক বিদ্যালয়, চান্দেরঘোনা রেজিস্ট্রাট প্রাথমিক বিদ্যালয়,পুকুরিয়াঘোনা রেজিস্ট্রাট প্রাথমিক বিদ্যালয়,ঘোনারপাড়া কাদেরিয়া রেজিস্ট্রাট প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঈদগাঁও চরপাড়া রেজিস্ট্রাট প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উল্টাখালী রেজিস্ট্রাট প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এর মধ্যে মধ্য ঝিলংজা এবং চান্দের পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরুরী সরস্কারের টাকা কোথায় কিভাবে খরচ করা হয়েছে জানতে চাইলে পরিচালনা কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য জানান, আমরা জানিইনা এখানে ২ লাখ টাকা করে বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক কি করেছেন তা আমরা জানিনা। এদিকে চান্দের পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম বলেন,বরাদ্ধ পাওয়ার পরে এখানে অনেক কাজ আছে সব কাজ সমাধান করতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। তাছাড়া স্কুলে ২ লাখ টাকার চেয়ে অনেক বেশি কাজ পড়ে আছে। ঈদগাঁও চরপাড়া রেজিস্ট্রাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেসমিন আক্তার বলেন, টাকা পেয়েছি ঠিক আছে আমাদের টা নতুন সরকারি হয়েছে এখানে কাজের শেষ নাই,এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,সরকার যতটাকা দেয় সব টাকা আমাদের কাছে পৌছে না, এগুলো অনেক ধাপ পেরিয়ে আসে। তবে কমিটির কাউকে ঠিকমত জানান নি এবং এর প্রয়োজনীয় তা নাই বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক বলেন, সরকার ঠিকই স্কুলের উন্নয়নে টাকা দিচ্ছে তবে এখানে যারা কর্মকর্তাদের সাথে বেশি তেল মারতে পারে তারা ঘনঘন বরাদ্ধ পায় আর আমরা ৪/৫ বছর পরে পাই। যেমন ঈদগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতি বছর পায় এছাড়া বিশেষ বরাদ্ধ সহ সব কিছু উনারা পায় এই টাকা কোথায় কিভাবে খরচ হয় একটু খোঁজ নিলে আসল অনিয়ম বেরিয়ে আসবে।
এছাড়া উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার, উপজেলা অফিসার, ট্রেজারী অফিস, জেলা অফিস সহ সব জায়গায় পদে পদে টাকা না দিলে কেউ স্বাক্ষর করে না। তাহলে আপনারা বলেন কিভাবে সঠিক ভাবে কাজ করবো। তাই কিছু টাকা ঘাটে ঘাটে চয়ে যায় তবে একেবারে শত ভাগ লুটপাট হয় এই কথা সঠিক না। তবে ঘাটে ঘাটে টাকা দিলে কাজের মানও ভাল করা যায়না। অন্যান্য দপ্তরের চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অনেক জবাবদিহিতা আছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, জরুরী সংস্কারের টাকা নিয়ে কোথাও বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে বলে আমার জানা নেই। কেউ প্রমান সহ দিলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
পাঠকের মতামত: