নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ::
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের হিমছড়ি পয়েন্টে ভেসে আসা বিশালাকার দুই মৃত তিমির কঙ্কাল শিক্ষা ও গবেষণায় ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সৈকতের বালুচরে পুঁতে রাখা তিমিগুলোর কঙ্কাল দুই মাস পর উত্তোলন করে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তবে কঙ্কালগুলো সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটে সংরক্ষণের কথা ভাবছেন সমুদ্র বিজ্ঞানীরা।
মাত্র একদিনের ব্যবধানে গত শনি ও শুক্রবার মরা তিমিগুলো কক্সবাজার সৈকতের হিমছড়ি এলাকায় ভেসে আসে। তবে বিশালাকার এই দুটি তিমির মৃত্যুর কারণ জানতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। অবশ্য তিমির মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান ও কঙ্কাল সংরক্ষণে জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিন আল পারভেজকে প্রধান করে ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানান, তিমির মৃতদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্যে দেয়া হয়েছে। কক্সবাজার বন বিভাগের (দক্ষিণ) বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) হুমায়ুন কবির বলেন, বালুচরে পুঁতে রাখা তিমির কঙ্কাল দুই-আড়াই মাস পর তুলে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে। এ সময়ের মধ্যে দুই এলাকায় বনরক্ষীরা পাহারা দিবে। তবে সমুদ্র বিজ্ঞানীরা কঙ্কালগুলো সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটে সংরক্ষণের প্রয়োজন বলে মনে করেন।
কক্সবাজারস্থ বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. শফিকুর রহমান চকরিয়া নিউজকে জানান, তিমির কঙ্কাল গবেষণা কাজে ব্যবহারের জন্যে সংরক্ষণের চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।
কক্সবাজারস্থ বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান আরো জানান, দুই তিমিই ব্রাইডস হোয়েল প্রজাতির। একটি দৈর্ঘ্যে ৪৬ ফুট ও আরেকটি ৪৪ ফুট। দুই তিমির শরীরে বড় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি জানান, অন্তত ১০-১২ তিন আগে গভীর সাগরে মারা যাওয়ার পর তিমিগুলো ভেসে এসেছে।
গত শনিবার ঘটনাস্থলে কক্সবাজার বন বিভাগের (দক্ষিণ) ডিএফও হুমায়ুন কবির বার্ধক্যজনিত কারণে তিমিগুলোর মৃত্যু হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। তবে মৎস্য বিজ্ঞানীরা এতে ভিন্নমত দিয়েছেন।
সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম চকরিয়া নিউজকে জানান, ব্রাউডস হোয়েল জাতের তিমি ৫০ থেকে ৫৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক এ জাতের তিমি বাঁচেও ৫০-৫৫ বছর। একেকটির ওজন ২৫ থেকে ৩৫ টন পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফলে এখানে ভেসে আসা তিমি দুইটার এককটার ওজনও কমপক্ষে ২৫ টন হবে।
পাঠকের মতামত: