ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪

সৈকতে চলছে এনজিওর গাড়ি, হুমকিতে জীব-বৈচিত্র্য

ডেস্ক নিউজ ::
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়িতে চলছে শত শত এনজিওর গাড়ি। সমুদ্র সৈকতের পরিবেশ ধ্বংস করে ও জীব-প্রকৃতি হত্যা করে বেলাভূমিকে সড়কে পরিণত করেছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করা এনজিওরা।

গত দুই সপ্তাহে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলি পয়েন্ট থেকে বেলি হ্যাচারি পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতে যানবাহন চলাচলের ফলে হাজার হাজার লাল কাকড়া মারা গেছে। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সৈকতের বিরল কলমি লতাসহ সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র। এনজিওর গাড়ির চাপা পড়ে মারা গেছে সামুদ্রিক কচ্ছপও।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে রক্ষার জন্য দ্রুত বেলা ভূমিতে যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতায়াত করে শতাধিক এনজিওর কয়েক হাজার গাড়ি। অতিরিক্ত গাড়ির চাপে গত বর্ষায় কক্সবাজারের কলাতলি থেকে বেলি হ্যাচারি পর্যন্ত সড়কটি নষ্ট হয়ে যাণ। অতিরিক্ত গাড়ির চাপ ও বর্ষার পানিতে সড়কটিতে বড় বড় গর্ত হয়ে যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় কক্সবাজার পৌরসভা। ৩ কিলোমিটার লম্বা সড়কটির সংস্কারের জন্য ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এনজিওদের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য সাময়িক ভাবে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ব্যবহারের পরামর্শ দেয় কক্সবাজার পৌরসভা।

কিন্তু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিওগুলো দ্রুত আয়েশি যাতায়াতের জন্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলি পয়েন্ট থেকে বেলি হ্যাচারি পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতে যানবাহন চলাচল শুরু করে।

এ ব্যাপারে ‘আমরা কক্সবাজারবাসি’ সংগঠনের নেতা কলিম উল্লাহ বলেন, এনজিওরা এখন কোনে কিছুই মানছে না। তারা এখন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ধ্বংস করছে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত শুধু বাংলাদেশেরই না, পুরো বিশ্বের সম্পদ। দ্রুত বেলাভূমিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা দরকার।

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, যানবাহন চলাচলের ফলে সামুদ্রিক সম্পদ ও পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে পুরো এলাকাটিতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিবে।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, কক্সবাজার পৌরসভা কলাতলির মেরিনড্রাইভ সংযোগ সড়কটি মেরামতের কাজ শুরু করেছে। এই সড়ক ব্যবহারকারীদের বিকল্প সড়ক হিসেবে কক্সবাজার টেকনাফ সড়ক ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ওই বিকল্প সড়ক দিয়ে গেলে একটু সময় বেশি লাগবে।

বৃহত্তর স্বার্থে সকলকে বিকল্প সড়কটি ব্যবহার করতে বলেন কক্সবাজার পৌর মেয়র।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় পরিবর্তন ডটকমকে জানান, কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ রোডের সংযোগ সড়কের কাজ চলছে। মেরিনড্রাইভ রোডের জরুরী যাতায়াতের জন্য সৈকতের পাশে একটি বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়ছে। তবে বিকল্প এই সড়কে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়নি।

সমুদ্র সৈকতের বেলাভূমিতে যানবাহন চলাচলের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে পরামর্শ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

পাঠকের মতামত: