ঢাকা,বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

সেনাবাহিনীকে ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহবান প্রধানমন্ত্রীর

CTG-News-PM-নিজস্ব প্রতিবেদক ::

জাতির যে কোন প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলন, কর্ণেল কমান্ড্যান্ট অভিষেক ও নবম টাইগার্স পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এ আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।  সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছ বলে এসময় জানান প্রধানমন্ত্রী ।

ঘন কুয়াশার কারণে নির্ধারিত সময়ের কিছু পর বেলা ১১ টা ৫৫ মিনিটে  চট্টগ্রাম সেনানিবাসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ই বি আর সি প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে রেজিমেন্টের সুসজ্জিত দল তাঁকে অভিবাদন জানায়। এসময় অতিথিদের মধ্যে তিন বাহিনী প্রধান, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবম টাইগার্স পূনর্মিলনীর মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা মেজর এম এ গণি, রেজিমেন্টের পথিকৃত জেনারেল এম এ জি ওসমানী সহ যাদের ত্যাগ ও পরিশ্রমে রেজিমেন্ট গড়ে উঠেছে তাঁদের স্মরণ করেন।

প্রধান মন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় আশা করেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিষ্ঠার সাথে তাঁদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এদেশের জনগনেরই অংশ। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এ বাহিনীর প্রধান অঙ্গ। এর পাঁচটি ব্যাটেলিয়ন আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সাহসী অংশগ্রহণ করেছিল। দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্বকে সুরক্ষার পাশাপাশি উন্নয়নে এ রেজিমেন্টের সদস্যগন সবসময় জনগনের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, অবকাঠামো নির্মাণ ও অন্যান্য জাতি গঠনমূলক বিভিন্ন কাজে তাদের অবদান প্রসংশনীয়। শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, বিদেশেও যেমন শান্তি রক্ষা মিশনেও অত্যান্ত সততা, নিষ্ঠা ও সফলতার সাথে অবদান রেখে যাচ্ছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য হিসেবে আপনাদের উপর রয়েছে বিশাল দায়িত্ব। কঠোর প্রশিক্ষনের মাধ্যমে আপনারা নিজেদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলবেন। আমাদের সরকার সেনাবাহিনীর উন্নয়নে খুবই আন্তরিক।

জাতীর পিতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এ দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কাজেই আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই সেনাবাহিনীর উন্নয়ন করে। সেনাবাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা, আধুনিক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করা ও আধুনিক অস্ত্রসস্ত্রে দিয়ে সমৃদ্ধ করা আমাদের লক্ষ্য।

সেনাবাহিনীর উন্নয়নে আমরা ইতোমধ্যে ১০ পদাতিক ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা করেছি। এছাড়া সিলেটেও ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠনে কাজ করে যাচ্ছি।

সেনাবাহিনীকে আরো বেশি কার্যকর ও যুগোপযোগী করার জন্য প্রচুর অত্যাধুনিক সরঞ্জাম সংযোজন করা হয়েছে।

২০১৭-১৮ তে সেনাবাহিনীতে আরো ৩০০টি বিটিআর-৪০ এপিজি সংযোজিত হতে যাচ্ছে। যা তাদের সক্ষমতাকে অনেক বেশি বাড়িয়ে তুলবে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টর জন্য পুরাতন রাইফেলের পরিবর্তে নেটিভ ও পিএম-৯৮ রাইফেল সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া আনুষাঙ্গিক আরো অনেক আধুনিক সরঞ্জাম ও অস্ত্র সংযোজন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যার মধ্যে এটিজিডব্লিউ ও অটো-১৯ গ্রেনেড লাঞ্চার উল্লেখযোগ্য।

পাশাপাশি আধুনিক পদাতিক সৈনিকের প্রতিটি সদস্যকে সুসজ্জিত করার লক্ষ্যে হেড টু হেড কমিউনিকেশন সরঞ্জাম, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট এর মতো আনুসঙ্গিক জিনিস কেনার প্রক্রিয়া চলমান আছে ও কিছুকিছু কেনা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশের উন্নয়ন , পাশাপশি সশস্ত্র বাহিনীকে সমৃদ্ধ করা। আপনারা এদেশেরেই সন্তান । এদেশের গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে আছে আপনারই আপনজন। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের কল্যান করা আপনাদেরই দায়িত্ব।

দিনের কর্মসূচীর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বিকেল তিনটায় অক্সিজেন মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল সহ কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন শেষে আগ্রাবাদে চিটাগং চেম্বার আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।

পাঠকের মতামত: