নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার আলোচিত সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোসাইন চৌধুরীকে বরখাস্ত করা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের বিষয়টি দায়িত্বশীল কোন পক্ষ স্বীকার না করায় এই ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তবে একটি প্রভাবশালীমহল বরখাস্তের চিঠিটা প্রকাশ পাওয়ার পর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
গরু, মহিষ চুরি ও নানা অপরাধসহ তিনটি মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান চার্জশীটে অর্ন্তভূক্ত হওয়ায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় তাকে বরখাস্ত করেছেন। ওই মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বরখাস্তের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ১০ জানুয়ারি মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোসাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে গরু, মহিষ চুরি, ভূমি দখল ও চোরাকারবারীসহ নানা অপরাধের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। এরমধ্যে তিন মামলায় চার্জশীট দেওয়া হয়েছে। অন্য দুটি মামলায় চার্জগঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। মামলাগুলো আদালতে বিচারধীন রয়েছেন। এই কারণে স্থানীয় সরকার আইনের বিধিমতে ৮ জানুয়ারি নবী হোসাইন চৌধুরীকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। চেয়ারম্যান পদটিও শূন্য ঘোষণা করা হয়।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোসাইন চৌধুরীকে বরখাস্ত করা একটি চিঠি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পৌছার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। কিভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাও বিষয়টি নিয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।
এবিষয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করা হয়েছে মর্মে কোন চিঠি তার কাছে এখনো আসেনি। চিঠি হাতে পেলে জানানো হবে।
এব্যাপারে সাহারবিল ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোসাইন চৌধুরী বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে সত্য। কিন্তু অনেক চেয়ারম্যানের সাঁজা হওয়ার পরও বরখাস্ত হয়নি। কেন আমাকে বরখাস্ত করবে, মূলত তাকে ফাঁসানোর চেষ্ঠা করছেন বলেও দাবী করেন তিনি।
জানা যায়, সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবী হোছাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২০২১ সালে মহেশখালী থানায় গরু ও মহিষ চুরির অভিযোগে দুটি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশীটও দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
সম্প্রতি নবী হোছাইন চৌধুরী উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের জন্য জামিন নেন।
গত ১৫ ডিসেম্বর ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইন চৌধুরী কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট আবুল মনছুর সিদ্দিকী জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। ৭দিন কক্সবাজার কারাগারে থাকার পর ২১ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান নবী কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জামিন লাভ করেন।
পাঠকের মতামত: