বিএনপির সদ্য ঘোষিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রায় ১৫ মাস ধরে ভারতের শিলংয়ে অবস্থান করছেন । ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে দায়ের করা মামলায় শিলংয়ের বাইরে যেতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তার ওপর। দেশের বাইরে থাকলেও রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাননি বিএনপির এক সময়ের এই তুখোড় নেতা। শিলংয়ে বসেই তিনি দেশে নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নেতা-কর্মীদের ফোন করে দলের দুর্দিনে ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। সিলেটসহ বিভিন্ন জেলার তার অনুসারীরাও রাজনৈতিক বিষয়ে পরামর্শ নেওয়ার জন্য ছুটে যান শিলংয়ে সালাহউদ্দিনের কাছে।
সূত্র জানায়, শিলংয়ে অবস্থান করলেও সালাহউদ্দিনের বেশি সময় কাটে দেশের রাজনীতি নিয়ে। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের
পাশাপাশি সেখানে দেখা করতে যাওয়া দলীয় অনুসারীদেরও সময় দিচ্ছেন তিনি। প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন। ফেসবুকেও তিনি সরব রয়েছেন সরকারের সমালোচনায়। সরকারের দুর্বলতা ও ব্যর্থতা তুলে ধরে তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদ শেয়ার করছেন। তবে গত কয়েক দিন ধরে সালাহউদ্দিনের শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছে না বলে জানান তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। হাসিনা আহমেদ জানান, সালাহউদ্দিন আহমেদের শারীরিক অবস্থা খুব ভালো নয়। হার্ট, কিডনি, হাঁটুর ব্যথা ও ব্যাক পেইন বেড়ে গেছে। শিলংয়ে তিনি নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে শিলংয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদের কাছে তার ভাতিজা তপন ও তারেক আছেন জানিয়ে হাসিনা আহমেদ বলেন, ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার জন্য তিনি শিলং যেতে পারছেন না। আগামী ঈদুল আজহার পর তিনি শিলং যাবেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মনোনীত হওয়ায় সালাহউদ্দিন খুশি কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হাসিনা বলেন- ‘তিনি (সালাহউদ্দিন) সব সময় ম্যাডামের (খালেদা জিয়ার) প্রতি আস্থাশীল। ম্যাডাম তাকে যেখানেই রাখবেন সেখানেই তিনি খুশি থাকবেন। তবে স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়ায় সালাহউদ্দিনের এলাকার নেতা-কর্মীরা খুব খুশি হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, নিখোঁজের আগ থেকে সিলেট বিএনপির একটি বলয়ের সঙ্গে সালাহউদ্দিনের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর কিছুদিন সিলেট বিএনপির অভিভাবকেরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সিলেট বিএনপির বিবদমান সব পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ করতে তাকে কেন্দ্র থেকে দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল। সেই সূত্রে সিলেটের বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শিলংয়ে সালাহউদ্দিন আটক হওয়ার পর সিলেট বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের একাধিক নেতা সেখানে ছুটে যান। সালাহউদ্দিনকে আইনি সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারেও কাজ করেন তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেট বিএনপির এক শীর্ষ নেতা জানান, রাজনৈতিক যে কোনো কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তারা সালাহউদ্দিনকে ফোন দেন। ফোনে সালাহউদ্দিনের পরামর্শ নেন। সালাহউদ্দিনও মাঝে-মধ্যে ফোন দিয়ে সিলেটের রাজনীতির খোঁজ-খবর নেন। প্রসঙ্গত, ৬৩ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত বছরের ১২ মে ভারতের শিলংয়ের গলফ লিংক এলাকায় সালাহউদ্দিনকে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। এরপর তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় অনুপ্রবেশের মামলা। সেই মামলায় সালাহউদ্দিন এখন শিলংয়ে শর্তসাপেক্ষে জামিনে রয়েছেন।
পাঠকের মতামত: