কক্সবাজার প্রতিনিধি :: বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের তাণ্ডবে শংকিত হয়ে পড়েছেন জেলেরা। ডিসেম্বর মাসেই অন্তত ৬টি ফিশিং ট্রলার জলদস্যুর হামলার শিকার হয়েছে। এতে অন্তত ১৮ মাঝি-মাল্লাহ আহত হয়েছেন।
গতকালও দুইটি ফিশিং ট্রলারে জলদস্যুর হামলায় ৪ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন।
মহেশখালীর সোনাদিয়া চ্যানেলের পশ্চিমে জলদস্যুদের তাণ্ডবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন মাঝি-মাল্লারা। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত বলে জানালেন তাঁরা।
গতকাল সোনাদিয়া চ্যানেলে হামলার শিকার একটি ট্রলারের মালিক আমির হোসেন জানিয়েছেন হঠাৎ জলদস্যুদের উৎপাতে আমরা উদ্বিগ্ন।
কোটি-কোটি টাকা বিনিয়োগ করে আমরা মহা বিপদের মধ্যে রয়েছি। এই অবস্থা সৃস্টি হলে সাগরে যাওয়ার জন্য মাঝি-মাল্লাহ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
তিনি আরো জানান মায়ের দোয়া ও রিফাত নামে ২টি মাছ ধরার ট্রালারের প্রায় ৫ লাখ টাকার মাছ লুট করেছে। এ সময় জলদস্যুর গুলিতে ৪ জেলে গুলিবিদ্ধিসহ মোট ১৫ জন জেলে আহত হয়েছে। গত ২১ ডিসেম্বর রাত ১১ টার দিকে বঙ্গোপসাগরে গুলিদার নামক স্থানে এঘটনা ঘটে।
এঘটনার খবর পেয়ে কক্সবাজার জেলা পুলিশের একটি টিম আহতদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন, বাশি মাঝি, জাগির হোসেন,এন্ডা মিয়া, নছর উল্লাহ, শামসু আলম, জাহাঙ্গির আলম, তারেক, সোলতান, ছালামত উল্লাহ, সাকের উল্লাহ, মোঃ হোছন, মনছুর আলী, আনজু মিয়া, আলী মাঝি, আব্দুল্লাহ, পুতু মিয়া, মাহাম্মদ, এরা সবাই মহেশখালী উপজেলার কুতুবজুম ইউনিয়নের বাসিন্দা।
এদের মধ্যে আহত বাঁশি মাঝির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। এছাড়াও গুলিবিদ্ধ অন্যাদের অবস্থা গুরতর বলে জানা গেছে।
আহত জেলে মোহাম্মদ হোছন জানান, হঠাৎ করে সাগরে মাছ ধরার সময় জলদস্যুরা হানা দেন, আমরা ট্রলার না থামালে তারা গুলি ছুঁড়ে, এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। তারা ট্রলারে এসে মারধর করে সব লুট করে নিয়ে যায়। জলদস্যুরা বাঁশখালী, কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায় কুতুবজুম ইউনিয়নের সোনাদিয়া ওয়ার্ডের মেম্বার একরামের নেতৃত্বে পুনরায় জলদস্যুরা সংগঠিত হয়েছে। এতে কুতুবদিয়া ও বাঁশখালীর জলদস্যুরাও যুক্ত হয়েছে। একরাম একজন তালিকাভুক্ত জলদস্যু। তার বিরুদ্ধে বিগত সময়ে অসংখ্য জলদস্যুতার অভিযোগ রয়েছে।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল হাই জানিয়েছেন, খবর পেলেই তাৎকক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অসংখ্য জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জলদস্যুতা দমনে পুলিশ সব সময় সক্রিয় আছে এবং থাকবে।
এ বিষয়ে কোস্ট গার্ড কক্সবাজার ষ্টেশনের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার জানান, সাগরে কোন বোট ডাকাতি হলে নির্দিষ্ট তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে অভিযানে যাওয়ার আগেই জলদস্যুরা জেনে যায়। ফলে অপারেশন সবসময় সফল হয়না।
তিনি আরো বলেন, সাগরে জলদস্যু দমনে কোস্টগার্ড সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে। আগামীতে অভিযান আরো জোরদার করা হবে। কোন জলদস্যু রেহায় পাবেনা।
পাঠকের মতামত: