আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::
সিরিজ বোমা হামলা চালিয়ে শ্রীলঙ্কার গীর্জা, হোটেলে ৩২১ জনকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। রোববার ইস্টার সানডের সকালে ভয়াবহ ওই হামলায় আহত হয়েছেন আরো অন্তত পাঁচ শতাধিক মানুষ।
মঙ্গলবার আইএস পরিচালিত সংবাদমাধ্যম আমাক নিউজ অ্যাজেন্সিতে শ্রীলঙ্কায় হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়া হয়েছে। মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে দেশটির চরমপন্থী ইসলামিক গোষ্ঠী ন্যাশনাল তাওহীদ জামাতকে হামলার মূল সন্দেহভাজন হিসেবে দায়ী করে সরকার। এছাড়া মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা জানান, তারা শ্রীলঙ্কা হামলার সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের হামলার ধরনের কিছু আলামত পেয়েছেন।
ইস্টার সানডের সকালে শ্রীলঙ্কার তিনটি গির্জা, তিনটি বিলাসবহুল হোটেল ও আরো দুটি স্থাপনায় সংঘবদ্ধ বোমা হামলায় ৩২১ জনের প্রাণহানি ও আরো ৫ শতাধিক মানুষ আহত হয়। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩৮ জন বিদেশি নাগরিক। এর মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিমের একজন নাতিও রয়েছেন।
দেশটিতে এক দশকের গৃহযুদ্ধ অব্সানের পর এটাই ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী এক নৃশংসতা।
শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী হামলার পর সোমবার অনলাইনে প্রশংসা করে আইএস সমর্থকরা। অনলাইনে জঙ্গি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী মার্কিন সাইট ইনটেলিজেন্স গ্রুপ জানায়, ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে গোলাগুলির প্রতিশোধ হিসেবে শ্রীলঙ্কার হামলাকে দেখছে আইএস। একই সঙ্গে তারা এই হামলার ঘটনায় উল্লাস প্রকাশ করেছে। তাদের এই উল্লাস প্রকাশের একদিন পর চরমপন্থী ইসলামি এই জঙ্গিগোষ্ঠী শ্রীলঙ্কায় হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিলো।
সোমবার সাইট ইনটেলিজেন্স গ্রুপের পরিচালক রিটা কাটজ বলেছিলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইএসের সমর্থকরা শ্রীলঙ্কায় হামলার প্রশংসা করে হতাহতের ঘটনায় উল্লাস প্রকাশ করেছে। আইএস পরিচালিত চ্যানেলে শ্রীলঙ্কায় বিস্ফোরণের বুনো উল্লাস করা হয়েছে। এতে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের যেন আল্লাহ কবুল করে নেন সেই প্রার্থনাও করা হয়।
এদিকে, মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রুয়ান উইজেওয়ারদানা পার্লামেন্টে দেয়া এক বক্তৃতায় দাবি করেন, গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলার প্রতিশোধ নিতেই ইসলামি চরমপন্থীরা ইস্টার সানডেতে হামলা চালিয়েছে।
গত ১৫ মার্চ জুমার নামাজের সময় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে শেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী সন্ত্রাসী ব্রেন্টন ট্যারান্ট সশস্ত্র হামলা চালায়। অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত এই সন্ত্রাসীর গুলিতে ৫০ মুসল্লির প্রাণহানি ঘটে।
রুয়ান উইজেওয়ারদানা বলেছেন, তদন্তে দেখা গেছে ক্রাইস্টচার্চে মুসলিমদের বিরুদ্ধে হামলার প্রতিশোধ হিসেবে রোববারের হামলা হয়েছে। তবে তার এই দাবির পক্ষে কোনো ধরনের প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি লঙ্কান এই মন্ত্রী।
পাঠকের মতামত: