জসিম মাহমুদ, টেকনাফ :: টেকনাফ থেকে বিচ্ছিন্ন শাহপরীর দ্বীপ সড়ক সংস্কারে একনেক অনুমোদিত প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন দাবিতে মানববন্ধন করেছে শাহ পরীর দ্বীপ বাসী। মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে দ্বীপের উত্তর পাড়ার ভাঙা এলাকায় এই মানব বন্ধন অনুষ্টিত হয়েছে। এতে শাহপরীরদ্বীপের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
মানবন্ধনে অংশগ্রহণ করা দ্বীপের বাসিন্দারা টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়কের হারিয়াখালী থেকে উত্তর পাড়া পর্যন্ত ৫.১৫ কিলোমিটার বিচ্ছিন্ন সড়ক সংস্কারে একনেকে অনুমোদিত প্রায় ৬৭ কোটি টাকার প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান।
মানববন্ধনে উপস্থিত দ্বীপের প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক জাহেদ হোসেন বলেন, টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়কের হারিয়াখালী থেকে উত্তর পাড়া পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়ক বিগত ৭ বছর ধরে বিচ্ছিন রয়েছে। ২০১২ সালে পশ্চিমের বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি ঢুকে সড়কটি বিলীন হয়ে গিয়েছিল। এখন বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পথে, জোয়ারের পানিও ঢুকেনা তবু সড়কটি দ্রুত সংস্কারে কোন উদ্যেগ নেই। তাই আমরা মানববন্ধনের মাধ্যমে দাবি জানিয়েছি, দ্বীপের বাসিন্দাদের যাতায়তের একমাত্র মাধ্যম শাহপরীর দ্বীপ সড়কের ভাঙা অংশটি দ্রত সংস্কারের জন্য।
দ্বীপের সমাজ সেবক ও সাবেক ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান জানান, দ্বীপের ৪০ হাজার মানুষের যাতায়তের একমাত্র পথ টেকনাফ- শাহপরীর দ্বীপ সড়ক। কিন্তু এ সড়কের হারিয়াখালী থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার পথ বিলীন হয়ে যাওয়ায় দ্বীপের বাসিন্দাদের যাতায়তে ভোগান্তির শেষ নেই। বিশেষ করে সারা বছর রোগী, বৃদ্ধ ও নারীদের যাতায়তে কষ্ট লেগে থাকে।
কলেজ ছাত্র আব্দুল বাসেদ বলেন, আমরা জেনেছি সড়কের ভাঙা অংশ সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে একনেক অনুমোদিত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন বিলম্বিত হচ্ছে। আমরা দ্বীপের ৪০ হাজার মানুষের ভোগান্তির অবসানে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া দক্ষিণ পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনোয়ারা বেগম বলেন, ভাঙা সড়ক দিয়ে সাধারণত পুরুষেরা কষ্ট হলেও যাতায়ত করেন। কিন্তু নারী, কলেজ ছাত্রী, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসা সেবা পেতে এ সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। দ্বীপের বাসিন্দাদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ৭ বছরের দূর্ভোগের অবসানে একনেক অনুমোদিত সড়ক সংস্কার প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরী।
প্রসঙ্গত, শাহপরীর দ্বীপ থেকে টেকনাফ সদরে যাতায়তের একমাত্র পথ টেকনাফ- শাহপরীর দ্বীপ সড়ক। বিগত ২০১২ সালে সাগরের জোয়ারের আঘাতে দ্বীপের বেড়িবাঁধটি বিলীন হয়ে যায়। অরক্ষিত বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে সড়কের হারিয়াখালী থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫.১৫ কিলোমিটার অংশ বিলীন হয়ে যায়। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে দ্বীপের বাসিন্দারা সড়কের ওই অংশে নৌকা নিয়ে কষ্টে যাতায়ত করে আসছিল।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ (সওজ) সূত্র জানায়, টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ সড়কের ক্ষতিগ্রস্থ অংশ সংস্কারের জন্য ৬৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গত ২০১৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় প্রকল্প অনুমোদনের দীর্ঘ এক বছর পার হয়ে গেলেও এখনো কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে সওজ কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, টেকনাফ-সাবরাং হারিয়াখালী থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫.১৫ কিলোমিটার সড়কের সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পেয়েছে। প্রকল্পটির দরপত্র একদফা বাতিল হয়েছে, দ্বিতীয় দফায় একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিয়েছেন। তবে তারাও যাতায়াত খরচের জন্য ৯ শতাংশ টাকা দেখিয়েছে। দরপত্রটি সুপারিশ কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। সুপারিশ কমিটি অনুমোদন দিলে কাজটি দ্রুত শুরু করা সম্ভব হবে
পাঠকের মতামত: