ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

রোহিঙ্গা শিবিরে রেড ক্রিসেন্টের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম

প্রেসবিজ্ঞপ্তি ::
কক্সবাজারে মিয়ানমারের রাখাইন অঙ্গরাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুতদের ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস) উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে।

দেড় শতাধিক রেড ক্রিসেন্ট কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবকগণ রাতভর অগ্নিনির্বাপক কর্মী, শিবিরের বাসিন্দা এবং অন্যান্য সংস্থার সাথে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার করতে এবং আগুন নির্বাপণের লক্ষ্যে কাজ করেছেন। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এই ক্যাম্পসমূহে আনুমানিক ১২৩,০০০ জন লোক বাস করে।

এম এ হালিম, হেড অব অপারেশন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, কক্সবাজার বলেন:

“এত অল্প সময়ের মধ্যে আগুন কতটা ধ্বংসাত্মক হতে পারে তা সত্যিই হৃদয়বিদারক। এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড শুরু হওয়ার সাথে সাথেই দমকল বাহিনী ও অন্যান্য সংস্থার কর্মীরা আগুন নিভাতে ও বিপদগ্রস্থ হাজার হাজার লোককে উদ্ধার, নিরাপদে সরিয়ে নিতে এবং তাত্ক্ষণিক ত্রাণ সরবরাহের জন্য ছুটে আসে।“

“আমরা খাবার ও পানি এবং অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহের পাশাপাশি আশ্রয় হারিয়েছে এমন লোকদের জন্য জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করছি। আসন্ন বর্ষা ও মৌসুমী ঝড়কে বিবেচ্নায় রেখে কক্সসবাজারে নিয়োজিত মানবিক সংস্থাগুলোর নিরবিচ্ছিন্ন তৎপরতা প্রয়োজন।”

রাখাইন অঙ্গরাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত ৯০০,০০০-এরও বেশি লোক বাংলাদেশ সরকার এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থার সহায়তায় ঘনবসতিপূর্ণ এই ক্যাম্পসমূহে বসবাস করছে।

সঞ্জীব কুমার কাফলে- প্রধান, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিস (আইএফআরসি), বাংলাদেশ, বলেন:

“পৃথিবীর অন্যতম সহনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য এই অগ্নিকান্ড আবারো একটি ভয়াবহ আঘাত। অনেক লোক তাদের দেশ থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এখানে নতুন করে শুরু করা হাজার হাজার মানুষ আবারো একটি ভয়াবহ অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হল।”

“স্বেচ্ছাসেবক এবং দমকল কর্মী, যারা এই আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে এবং লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে তারা অগণিত জীবন বাঁচিয়ে প্রকৃত বীরের ভূমিকা পালন করেছে। কোভিড -১৯ এর কারণে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এই অগ্নিকান্ড ক্যাম্পের জনজীবন আরো কঠিন করে তুলছে।”

অগ্নি নির্বাপন ও উদ্ধারকাজে প্রাথমিক পর্যায়ের সাড়াদানকারীদের মাঝে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (বাংলাদেশ সরকার এবং বিডিআরসিএসের যৌথ প্রয়াস) ১,৫৫৮ ক্যাম্প স্বেচ্ছাসেবীরা অন্যতম ভূমিকা পালন করে। এই স্বেচ্ছাসেবীরা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি এবং অন্যান্য জরুরী পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক সাড়া প্রদানের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ১৯৯১ থেকে পরিচালিত বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মিয়ানমার রিফিউজি রিলিফ অপারেশন (এম আর আর ও) কার্যক্রমের স্বেচ্ছাসেবীগণও এই উদ্ধারকাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২০১৭ সালে শুরু হওয়া চলমান পপুলেশন মুভমেন্ট অপারেশনের অংশ হিসাবে, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, আইএফআরসি এবং অন্যান্য দেশের রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সহায়তায় ক্যাম্পে বসবাসকারী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উভয়কেই স্বাস্থ্যসেবা, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি; আশ্রয়ন, জীবিকা ও মৌলিক চাহিদা এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রমের পাশাপাশি নারী ও সর্বাধিক ঝুঁকিগ্রস্থ সম্প্রদায়ের সুরক্ষা সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০১৭ সালে অপারেশন শুরু থেকে এযাবৎ, বিডিআরসিএস প্রায় দশ লক্ষ মানুষকে মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে।

পাঠকের মতামত: