ঢাকা,শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

রোহিঙ্গাদের তহবিল ৫৬৪৪ কোটি টাকা নিয়ে প্রশ্ন

অনলাইন ডেস্ক ::

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে যে সহযোগিতা এসেছে, তার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এক সেমিনার থেকে। বিশাল ত্রাণ ও বড় অঙ্কের টাকা কোথায় গেছে, তার হিসাব নেওয়ার দাবিও তুলেছে কেউ কেউ। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বেসরকারি সংস্থা কোস্ট ট্রাস্ট আয়োজিত ওই সেমিনারে কক্সবাজারের অর্থনীতি এবং পরিবেশের পুনর্বাসনের জন্য আলাদা উন্নয়ন পকিল্পনা প্রণয়নের পরামর্শ দেওয়া হয়। কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল করিম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক আব্দুস সালাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ উইংয়ের মহাপরিচালক নাহিদা সোবহান, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সাপো, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) বাংলাদেশ প্রধান জর্জ জিওগারি, কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের আবাসিক প্রধান এ কে এম মুসা, ইউএনএইচসিআরের বাংলাদেশ প্রতিনিধি পাপা কাইসমা সিলাসহ অন্যরা।

মূল প্রবন্ধে কোস্ট ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক মুজিবুল হক মনির বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় জাতিসংঘ অঙ্গসংস্থাগুলো থেকে এখন পর্যন্ত ৬৮ কোটি ডলার পাওয়া গেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ পাঁচ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। প্রতিটি রোহিঙ্গার জন্য ৫৭ হাজার টাকা এসেছে। এই তহবিলের কত অংশ রোহিঙ্গাদের জন্য আর কত অংশ সংস্থাগুলোর প্রধান কার্যালয় বা মাঠপর্যায়ে তাদের পরিচালন ব্যয় বাবদ খরচ হয়েছে এই বিষয়েও তথ্য প্রকাশ করা উচিত। আন্তর্জাতিক এনজিও এবং জাতিসংঘ অঙ্গসংস্থাগুলো তাদের পরিচালন ব্যয় কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার মানে হলো তারা সরাসরি প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে স্থানীয় অংশীদারদের দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।

পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল করিম বলেন, ‘নিরাপদ প্রত্যাবাসনের আগ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের অধিকার এবং মর্যাদা রক্ষায় আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে।

আমাদেরকে শুধু উন্নয়ন সহায়তার স্বচ্ছতা নয়, উন্নয়ন সহায়তার কার্যকারিতা নিয়েও ভাবতে হবে।’ এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক আব্দুস সালাম বলেন, প্রত্যাবাসন বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কাজ করা উচিত নয়। এনজিওগুলোর কাজ মানবিক সহায়তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাঈম গওহর ওয়ারা বলেন, ‘অনেকে বলে যে স্থানীয় এনজিওগুলোর সক্ষমতা নেই। তাই যদি হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের কর্মী নিয়ে যাচ্ছে কেন? অস্বস্তিকর হলেও আমাদের প্রশ্নটা তুলতে হবে যে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের নামে কত টাকা সংগ্রহ করেছে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ উইংয়ের মহাপরিচালক নাহিদা সোবহান বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য টেকসই, নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন। এই মানবিক সংকটে বৃহত্তর সমন্বয় খুব প্রয়োজন। স্থানীয় এনজিওগুলোকে এই সমন্বয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ করতে হবে।

পাঠকের মতামত: