এম.এ আজিজ রাসেল :: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ফুটবলের মাঠের ন্যায় রাজনীতির মাঠও। তবে এই মাঠ খুবই কঠিন। ফুটবলে যেমন ভাল খেলে চ্যাম্পিয়ন হতে হয় তেমনি রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থেকে নেতাকর্মীদের চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। যারা এই রাজনীতির মাঠে ভাল খেলবে না তারা পিছিয়ে পড়বে।
রবিবার (৩১ জানুয়ারী) কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কক্সবাজার পৌরসভা আয়োজিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণী প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের পিতা শেখ লুৎফুর রহমান ছিলেন একজন দক্ষ খেলোয়াড়। বঙ্গবন্ধুও নিজেও ক্রীড়াপ্রেমী ছিলেন। তাঁর সুযোগ্য পুত্র শেখ কামাল আবাহনী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে দেশে আধুনিক ফুটবলের সূচনা করেছিলেন। তাঁদের রক্তের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা খেলাধুলা প্রেমী। তিনি কক্সবাজারে একটি ফুটবল স্টেডিয়ামের অনুমোদন দিয়েছেন। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশে ১৮ একর জমি এটি গড়ে তোলা হবে। যার ধারণ ক্ষমতা হবে ১ লক্ষ দর্শকের। এই স্টেডিয়াম নির্মাণ হলে কক্সবাজারের ফুটবল এগিয়ে যাবে বহুদূর।
তিনি বলেন, আমি নিজেও একজন ফুটবল পাগল। কক্সবাজারে ফুটবল প্রেমীদের এমন উৎসাহ দেখে অতীত মনে পড়ে গেল। এতো মানুষ দেখে বিশ^াস হয়না বাংলাদেশে করোনা রয়েছে। এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে আপন মহিমায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে মৃত হওয়া ফুটবল।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রধান উদ্যোক্তা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এড. সিরাজুল মোস্তফা, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আহবায়ক প্যানেল মেয়র-২ হেলাল উদ্দিন কবিরের সঞ্চালনায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাজাহান আলী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার সুইটি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক মুকুল, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ জমিস উদ্দিন, অনুপ বড়ুয়া অপু, জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক সোহেল ও ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতানসহ কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ।
ফাইনাল খেলায় মুখোমুখি হয় শক্তিশালী সদর উপজেলা বনাম সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় টেকনাফকে ২-০ গোলে বিধ্বস্ত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে সদর উপজেলা।
পরে বিজয়ী ও বিজিত দলকে চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ ট্রফি তুলে দেন অতিথিরা।
টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছে সদর উপজেলার মিড ফিল্ডার শেফায়েত, টুর্নামেন্ডে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছে কুতুবদিয়া দলের মেজবাহ ও ম্যাচ সেরা হয় সদর উপজেলার দলনায়ক হানিফ। এই টুর্নামেন্টে ফাইনাল খেলে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরে যান জেলা ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও কোচ মাসুদ।
এর আগে রাখাইন শিল্পীদের নান্দনিক পরিবেশনা সবার নজর কাড়ে। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় খেলা। ফাইনাল খেলা ঘিরে স্টেডিয়ামে বসে ফুটবল প্রেমীদের মিলনমেলা। ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে ফাইনালে। রেকর্ড সংখ্যক দর্শকে ইতিহাস হয়ে উঠে এই ফাইনাল। অনেকে টিকেট কিনেও ঢুকতে পারেনি খেলা দেখতে। উৎসুক দর্শকদের সামাল দিতে হিমশিম খেয়ে উঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকরা। খেলা চলাকালীন স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে না পেরে উচ্ছৃঙ্খল কিছু যুবক ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) সেলিম উদ্দিনসহ আহত হয় ১০ জন। পরে জনবল বাড়িয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পাঠকের মতামত: