নিউজ ডেস্ক :: রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন অভিযানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না তা তদন্তের অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) আইসিসির এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রসিকিউশনের আবেদনের পর বিচারকরা এই অনুমোদন দিয়েছেন। এখন অনুমোদন দেওয়ায় রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগের তদন্তে এটাই হচ্ছে প্রথম কোনও আন্তর্জাতিক আদালতের উদ্যোগ।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। জাতিগত নিধনের ভয়াবহ বাস্তবতায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় অংশটি বাংলাদেশে পালিয়ে এলেও জাতিসংঘের হিসাবে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ এখনও সেখানে থেকে গেছে। জাতিসংঘ এই সামরিক অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে আখ্যা দেয়।
আইসিসির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এটা বিশ্বাস করার যৌক্তিক ভিত্তি রয়েছে যে, ব্যাপকভাবে এবং/অথবা পদ্ধতিগত সহিংস কর্মকাণ্ড ঘটানো হয়ে থাকতে পারে, যা মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত পাড়ির পেছনে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়ে থাকতে পারে। চেম্বার তাই বাংলাদেশ/মিয়ানমারের পরিস্থিতি তদন্তের অনুমোদন দিয়েছে।’
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর বর্বর হত্যাকাণ্ড ও ভয়াবহ নির্যাতন চালানোর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনায় মামলা দায়েরের একদিন পর এ অনুমোদন দিলো আইসিসি। আর্জেন্টিনায় মামলাটি করেছে রোহিঙ্গা বিষয়ক ও লাতিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। এরও আগে গত সোমবার জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে গাম্বিয়া।
গত বছর সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গাদের বিতাড়নে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের জন্য মিয়ানমারের বিচারের এখতিয়ার হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রয়েছে বলে সিদ্ধান্ত আসার পর প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়। এ তদন্ত শেষে পূর্ণ তদন্ত শুরুর জন্য আইসিসির কৌঁসুলি ফাতোও বেনসুদার একটি আবেদন করেন।
পাঠকের মতামত: