মহেশখালী প্রতিনিধি ::
মহেশখালীর মাতারবাড়িতে স্থাপিতব্য প্রথম কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ১৪১৪ একর জমির ৬৭৮ জন মালিকের কপাল ফিরেছে। অবশেষে তাদের জমির ন্যায্যমূল্য বাবদ প্রায় দ্বিগুণ চড়া মূল্যে পুনরায় ক্ষতিপূরণ পেতে চলেছেন। একই সাথে তালিকাভুক্ত ১৪২২ জন শ্রমিকও পাচ্ছেন জনপ্রতি আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ।
সম্প্রতি মাতারবাড়ির প্রথম কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণের টাকা পুনঃনির্ধারণ কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে তিন ক্যাটগরির জমির মূল্য পুনঃনির্ধারণ করায় অনেক জমির মালিক ৩-৪ গুণ টাকা বেশি পাবেন। যারা ইতিপূর্বে লবণ মাঠ শ্রেণীর জমি বাবদ একর প্রতি ১১ লাখ টাকা হারে মূল্য পেয়েছেন। সম্প্রতি বৈঠকে লবণ মাঠ শ্রেণীর জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে একর প্রতি ২৭ লাখ টাকা। এ ছাড়া নাল জমিসহ সকল শ্রেণির জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি একরে ৩০ লাখ টাকা। যা পূর্বে ছিল ২৫ লাখ টাকা।
অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য পুনঃনির্ধারণ কমিটির সদস্য মাতারবাড়ির চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ জানিয়েছেন, কোল্ড পাওয়ারের কর্মকর্তাদের সাথে জমির মূল্য নিয়ে আমার বনিবনা না হওয়ায় এতদিন মূল্য নির্ধারণ করা যায়নি। তারা (নুন মাঠ) শ্রেণীর জমির মূল্য কম দিতে চাওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। মাতারবাড়ির লোকজন জমি দিয়ে এখন শান্তি পাবে। দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় মানুষ স্বস্থিতে আছে। তিনি বলেন,মহেশখালী কুতুবদিয়ার সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক ও জেলা আ’লীগ সভাপতি এডঃ সিরাজুল মোস্তফার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে জমির মালিক ও শ্রমিকরা পুনঃনির্ধারিত মূল্যে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী’র অগ্রাধিকার ভিত্তিক এ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় মানুষ কোন শর্ত ছাড়াই জমি ছেড়ে দিয়েছিল। এখন আর কোন দুঃখ নেই। জমির মালিকরা অন্ততঃ শান্তি পাবে জমির ন্যায্যমূল্য পাওয়ায়। অধিকাংশ জমির মালিকই একর প্রতি আরো ২৭ লাখ ও ৩০ লাখ টাকা করে পাবেন। তারা পূর্বে পেয়েছেন ১১ লাখ ও ২৫ লাখ টাকা হারে। প্রথম কিস্তিতে ১৪২২ জন শ্রমিক পাচ্ছেন তাদের তিপূরণের টাকা। এটি চলমান থাকবে।
জেলা পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ রুহুল আমিন জানিয়েছেন, এটি ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের জন্য অত্যন্ত সু-খবর। তারা জমির প্রকৃত মূল্য পাচ্ছেন। আমরা চাই এবার দ্রুত গতিতে যেন টাকা বিতরণ করা হয়। এনজিও সংস্থা সুশীলন ক্ষতিপূরণে এটাকা বিতরণের কাজ করবে বলে জানা গেছে।
ইতিপূর্বে টাকা উত্তোলন নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় মানুষ অনেক দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। এদিকে শ্রমিকদের পেশা পরির্বতনের কারণে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে এখন সুফল পেতে যাচ্ছেন। প্রথম দফায় ১৪২২ জন শ্রমিক তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছেন। তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা হবে আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত।
মগডেইল এলাকার শ্রমিকরা জানান, পেশা হারিয়ে অধিকাংশ শ্রমিক বেকার হলেও আমরা হাল ছাড়িনি। প্রধানমন্ত্রী শ্রমজীবী মানুষকে বিমুখ করেন না এটি পূর্ণ আস্থা ছিল আমাদের। আজকে সেই প্রত্যশা আমাদের পূরণ হয়েছে। এখন দ্রুতগতিতে টাকা বিতরণ করলে মানুষ উপকৃত হবে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও মূল্য নির্ধারণ কমিটির প্রধান মো. আলী হোসেন মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কোন সমস্যা নাই, যারা জমির মালিক আছেন, বিগত সময়ে যারা টাকা পেয়েছেন, তারা পুনরায় টাকা পাবেন। এনজিও সুশিলন এ কাজটি সম্পন্ন করবে।
পাঠকের মতামত: