ঢাকা,মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪

মাংশের বাজারে মগের মুল্লুক!

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :::   কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও, চকরিয়া সদর ও পার্শ্ববর্তী খুটাখালী বাজারে পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে জবাইকৃত গরু-মহিষের মাংস বেচাকেনায় সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে ক্রেতাদের উপর চালিয়ে যাচ্ছে গলাকাঁটা বাণিজ্য! ২১ এপ্রিল রবিবার সকালে এমনতর চিত্র দেখা গেছে।
প্রশাসন কতৃক নির্ধারিত মাংসের মূল্য উপেক্ষা করে সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকে গরু-মহিষের মাংস বিক্রিতে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, মাংস ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপের ভিত্তিতে পবিত্র শবে বরাত ও মাহে রমজান উপলক্ষে মাংস বিক্রিতে মুল্য তালিকা নির্ধারণ করা হলেও তা মানা হয়নি । েেপৗর মেয়রের তালিকা অনুযায়ী প্রতিকেজি (গরু মহিষ) হাড়বিহীন মাংস ৫৫০ টাকা, আড়াইশত (২৫০) গ্রাম হাড়সহ প্রতিকেজি (গরু-মহিষ) মাংস ৫০০ টাকা ও ছাগলের মাংস প্রতিকেজি ৬৫০ টাকা বিক্রি করতে বলা হলেও তা পালন করেনি সংশ্লিষ্ট মাংশ ব্যবসায়ী কসাইরা। প্রতি মাংশ বিক্রি করা হচ্ছে হাড়সহ সাড়ে ৫শত টাকা এবং শুধুমাত্র মাংশ ৬শত টাকা থেকে সাড়ে ৬শত টাকা পর্যন্ত।
তিনি বলেন, মাংস বিক্রিতে ডিজিটাল স্কেল পরিমাপ ব্যবহার করতে হবে। সনাতন পদ্ধতির পাল্লা পরিমাপে ব্যবহার করা যাবেনা। আইন লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট মাংস দোকানীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু অসাধু মাংশ বিক্রেতা তা মানছেনা। মাংশ বিক্রি করা হচ্ছে মান্ধাতা আমলের উমাচরণ পাল্লা দিয়ে। ফলে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে মাংশ ক্রেতারা।

প্রশাসনের বাজার মনিটরিং এবং ভ্রাম্যমান আদালত কার্যক্রম ব্যবস্থা ঝিমিয়ে পড়ার কারণে অসাধু কসাইরা এ সুযোগ হাতে নিয়েছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।বলতে গেলে একপর্যায়ে সাধারণ ক্রেতারা মাংস ব্যবসায়ী কসাইদের কাছে সম্পূর্ণরূপে জিম্মি।
তারা সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে মাংসে অতিরিক্ত দাম হাকিয়ে ‘মগের মুল্লুক’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।
স্ব স্ব এলাকার জনপ্রতিনিধিদের নিরব ভুমিকার কারনে সাধারণ ক্রেতাদের খেশারত দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সচেতন ভোক্তাদের অভিযোগে জানা যায়, ঈদগাঁও-খুটাখালী ২টি বাজার চড়ামূল্যে নীলামে নেয়া হয়। পরে আবার সাব নীলাম দিয়ে দ্বিগুন অর্থ হাতিয়ে নেয় নীলামকারীরা। দেখা গেছে, এসব বাজার নিয়ন্ত্রন করছে গুটি কয়েক ব্যবসায়ীরা।

বাজার নীলাম ডাককারীরা নীলামে অতিরিক্ত অর্থ পূঁজি খাটানোর টাকা ক্রেতাদের উপরও চালাচ্ছে অতিরিক্ত টোলের নামে গলাকাঁটা বাণিজ্য। বাজারে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ সাইনবোর্ড টাংগানোর নিয়ম থাকলেও এ নিয়ম এখানে মানা হচ্ছেনা।
মাংস বাজার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে, তার মধ্যে প্রশাসন নির্ধারিত দরের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা নেয়া, ওজনে কারচুপি, বাটখারা, ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা, সিন্ডিকেট, পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই জবেহ করা, নির্ধারিত কসাইখানা না থাকা, যত্রতত্র স্থানে পশু জবেহ করা, লাইসেন্স ছাড়া মাংস বিক্রি ও অতিরিক্ত দামের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা জারী থাকলেও এ নির্দেশনা মানছেন না মাংস ব্যবসায়ীরা।
ঈদগাঁও-খুটাখালীর মাংস বাজার পরিদর্শন করে জানা যায়, প্রতিকেজি গরুর মাংস হাড়ছাড়া ৬৫০ টাকা, হাঁড়সহ মাংস প্রতিকেজি ৬শত টাকা, মহিষের খুরাও নলার হাড়ঁগুড়া করে মাংসে মিশিয়ে বিক্রি করছে। প্রতি কেজিতে কি পরিমাণ হাঁড় দিতে হয় তাও মানছেননা ব্যবসায়ীরা।
অসাধু ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের গরুর মাংসের পরিবর্তে মহিষের মাংস দিয়ে প্রতারনা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়াও রুগ্ন গরু ও মহিষের মাংসের উপর রক্ত প্রলেপ দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার নামে প্রতারণা চালাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।এক কথায় দালালদের হাতে নিয়ন্ত্রিত মাংস বাজার।

পাঠকের মতামত: