ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া লেগেছে

আবদুচ ছালাম কাকলী : আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে মহেশখা-কুতুবদিয়া (কক্সবাজার ২) আসনে পর পর ২বার নির্বাচিত সাবেক সাংসদ আলমগীর ফরিদের নামসহ ৩শত আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার টেবিলে যাওয়ায় মহেশখালীও কুতুবদিয়ায় বিএনপি’র নেতা কর্মীরা উল্লাসিত হয়ে পড়েছে। পাশা-পাশি আওয়ামীলীগ নেতারাও এখন নড়েছড়ে বসতে শুরু করেছে। আলমগীর ফরিদের নাম আসায় এখন আওয়ামীলীগের শুভকাঙ্খিরা বর্তমান সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিকও ওসমান গণি ওসমানকে প্রার্থী দেওয়ার জন্য চিন্তা ভাবনা করছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রকাশ। কারণ মহেশখালী-কুতুবদিয়ার হেভিয়েট নেতা আলমগীর ফরিদের তালমিলিয়ে জোরালো নির্বাচন করতে হলে এই ২ নেতার বিকল্গ নেই।

সরে জমিনে অনুসন্ধান করে জানা যায়, ১৯৯১ সলের নির্বাচনে বিএমপি রশিদ মিয়াকে পরাজিত করে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ইছহাক মিয়া সাংসদ নির্বাচিত হয়। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে এককভাবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আলমগীর ফরিদ নির্বাচন করলে জামায়াতের প্রার্থী মাষ্টার শফিক উল্লাহ, আওয়ামীলীগের (বর্তমান জেলা সভাপতি) এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফাও জাতীয় পাটির উইং কমান্ডার জহির নির্বাচন করলে আলমগীর ফরিদের কাছে ওই ৩ প্রার্থী বিপুল ভোটে হেরে যান। তিনি সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় উন্নয়ন করায় এ ২ উপজেলায় বিএনপি’র কর্মীর ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। এটাকে পুঁজি করে ২০০১ সালে নির্বাচনে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন চার দল থেকে আলমগীর ফরিদ ধানের শীষ নিয়ে, আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন জোট থেকে এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম নির্বাচন করলে আওয়ামীলীগের এ প্রার্থী বিপুল ভোটে হেরে যান আলমগীর ফরিদের কাছে। ২০০৬ সালের শেষ নাগাত ১/১১ সময় আলমগীর ফরিদসহ দলের বাঘা-বাঘা মন্ত্রীরা জেলে যায়। পরবর্তীতে ২০০৮সালের শেষেরদিকে নির্বাচনে চার দল থেকে জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদ ও আওয়ামীলীগ থেকে ড. আনচারুল করিম নির্বাচন করলে হামিদুর রহমান আযাদের কাছে হেরে যান। কিন্তু নির্বাচনের ২ বছর পর রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হলে তিনি বহু মামলা মাথায় নিয়ে আত্মগোপন হয়ে যান। এখনও তিনি আত্মগোগনে রয়েছে। সাপকথা মহেশখালী-কুতুবদিয়ার বহু জামায়াত নেতা রাষ্ট্রদ্রুহি মামলাসহ বহু মামলা মাথায় নিয়ে গা ডাকা দেয়ায় এ আসনে জামায়াতের সকল ধরণের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে হামিদুর রহমান আযাদকে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন জোট থেকে প্রার্থী দিলে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর বিজয় হতে মাথা ব্যাথা করতে হবেনা। এমনকি আওয়ামীলীগ নেতাদের মিছিল, মিটিংও গণসংযোগও করতে হবে না। সব কিছু বিবেচনা করে বিএনিপ’র মহা-সচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বাধীন গঠিত নির্বাচন কমিটি অতিহ্যবাহী কক্সবাজার-২ আসনটির বিজয় নিশ্চিত করতে আলমগীর ফরিদের বিকল্প কোন প্রার্থী দলের মধ্যে না থাকায় এ আসনের তালিকায় এককভাবে আলমগীর ফরিদের নাম লিপিবদ্ব করেছে। তারেক জিয়ার টেবিলে এ তালিকা যাওয়ার পূর্বে জাতীয় পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশ হওয়ার পর পরই এ সংবাদ মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি’র নেতা কর্মীরা উল্লাসিত হয়ে পড়েছে। অপর দিকে যুদ্ধ অপরাধী মামলায় পলাতক থাকা ডা: আব্দুল আজিজ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তাফার ভগ্নিপতি ও আব্দুশুক্কুর ফকির জেলা সভাপতির বেয়াইন (তালত ভাই), যুদ্ধ অপরাধী মামলার আসামী মরহুম সাবেক সাংসদ রশিদ মিয়া ড. আনছারুল করিমের ভগ্নপতি ও অপর পলাতক আসামী মৌলভী জকরিয়া সিকদার তাঁর চাচাত ভাই হয়। সাফ (র্মুদা) কথা এই দুই নেতার আত্মীয়-স্বজনরা যুদ্ধ অপরাধী মামলার আসামী হওয়ায় এ দু’নেতার উপর বহু আওয়ামীলীগ নেতারা প্রার্থী মানতে নাকোচ। ১৯৯৬,২০০১ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম ও ড. আনচারুল করিম পরাজিত প্রার্থী চিন্তা করে বর্তমান সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক ও ওসমান গণি ওসমানকে প্রার্থী দিলে বিএনপি’র প্রার্থী আলমগীর ফরিদের সাথে লড়াই হবার সম্ভাবনা বলে মন্তব্য করছে রাজনীতি টেবিল থেকে গ্রামে-গঞ্জের চা দোকানের টেবিলে। এখন গত ২ দিন ধরে মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় চলছে বিএনপি’র প্রার্থী আলমগীর ফরিদ ও আওয়ামীলীগ নেতা আশেক উল্লাহ রফিক এবং ওসমান গণি ওসমানকে নিয়ে চুলছেড়া বিশ্লেষণ। এদিকে গ্রাম-গঞ্জের র্তৃণনেতা কর্মীরা জানান, আলমঙ্গীর ফরিদের গোষ্টিগত জনবল শক্তি ও ডাল-পালা রয়েছে। কিন্তু আশেক উল্লাহ রফিকের গোষ্টিগত ডাল-পালা ও জনবল শক্তি নেই। আলমঙ্গীর ফরিদের গোষ্টিগত ডাল-পালাই এক মাত্র আশেক উল্লাহ সম্ভল। এ অবস্থায় আলমগীর ফরিদ প্রার্থীর তালিকা আসায় আওয়ামীলীগ নেতা ও ভোটররা মনে করেন, মাতারবাড়ী, ধলঘাটা, কালারমারছড়া, হোয়ানক ও শাপলাপুরসহ এ ৫টি ইউনিয়নের ভোটারের সংখ্যা কুতুদিয়া উপজেলার চেয়ে বেশী। অন্যদিকে মহেশখালী পৌরসভা, বড় মহেশখালী, ছোট মহেশখালী ও কুতুবঞ্জুম ইউনিয়ন হচ্ছে আলমগীর ফরিদের ঘাঁটি। এ হিসেবে উত্তর মহেশখালীতে ওচমাণ গণি ওচমাণের বাড়ী। সব কিছু হিসাব- নিকাশ করে ভোটররা জানান, ওচমাণ গণি ওচমাণকে প্রার্থীদিলে বিএমপির প্রার্থী আলমগীর ফরিদের সাথে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে বলে অনেকের ধারণা। তবে, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া বাসী অপেক্ষা আছে আওয়ামীলীগ থেকে কাকে প্রার্থী দিচ্ছেন।

পাঠকের মতামত: