কক্সবাজারের উপকুলীয় দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে আগামী পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ আশংকাজনকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন ইউনিয়নের কিছু মুখোশধারী প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে জাল ভোট দেয়ার লক্ষ্যে মোটা অংকের বিনিময়ে এসব রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসছে বলে একাধিক সূত্রে প্রকাশ। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের নজরদারী না থাকায় সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গাদের আগমন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অপরদিকে এসব রোহিঙ্গারা বিনাবাধায় মহেশখালী প্রবেশ করে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পাহাড়ী এলাকা ও চর এলাকায় এসে বিভিন্ন ছোট বড় ঝুপড়ি ঝর তৈরী করে সেখানে বিভিন্ন ধরনের মাদক দ্রব্য বিক্রি ও পতিতা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক রোহিঙ্গা যুবক সাগরে জলদস্যুতা,ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছে। ফলে একদিকে যেমন আইনর্শৃংখলা পরিস্থির চরম অবনতি হচ্ছে অপরদিকে উঠতি বয়সের যুব সমাজ ধংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অনেক রোহিঙ্গা পেশা হিসাবে বিভিন্ন মাছ ধরা ট্রলারে চাকুরী নিয়ে গভীর সমুদ্রে গিয়ে এদেশের মাঝি মাল্লাদের হত্যা করে বোট এবং সরাঞ্জামাদি নিয়ে মায়ানমার উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায়।
জানা যায়, প্রশাসনিক ভাবে কোন ধরনের নজরদারী না থাকায় এসব রোহিঙ্গারা সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ ও উখিয়ার শরণার্থী ক্যাম্প হতে পালিয়ে এসে আনোয়াসে মহেশখালীতে প্রবেশ করতে পারায় তারা নিরাপদ আশ্রয় স্থল হিসেবে মহেশখালীকে বেচে নিয়েছে।
উপজেলা পৌরসভার সমুদ্র চর এলাকা,বড় রাখাইন পাড়া,কুতুবজোমের দক্ষিন পশ্চিমেরএলাকা,ঘাটভাঙ্গা,ছোট মহেশখালী,জাইল্লা পাড়া,মুদির ছড়া,শাপলাপুর ,কালারমার ছড়া,হোয়ানকের পাহাড়ীএলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট সরকার সৃজিত বিশাল বনায়নের গাছ কেঠে পাহাড়ী জমি দখল করে তৈরী করা হয়েছে শতশত ঘরবাড়ি। পাহাড় ও চরএলাকার কোন কোন স্থানে ঝুপড়ি বসতঘর আর কিছু কিছু স্থানে মাটির গুদাম ,কাচাঁ ঘরবাড়িতে অবস্থান করছে এসব রোহিঙ্গারা। তাদের এধরনের বসবাসে যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।মহেশখালী পৌরসভার সমুদ্র চর এলাকা ,কুতুবজোমের দক্ষিন পশ্চিমেরএলাকা, সোনাদিয়া ,ছোট মহেশখালী,শাপলাপুর ,কালারমার ছড়া ,হোয়ানকের পাহাড়ী,চরপাড়া এলাকায় অবৈধভাবে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের একাধিক জনের সাথে আলাপ করে জানা যায়, তারা রাতদিন সাগরে পোনা আহরন ,পাহাড় কাটা ,গাছ কাটার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে। আলাপ কালে এসব রোহিঙ্গারা জানায়, পাহাড়ী বা চর এলাকায় অবস্থানকৃত বসতঘর গুলোর মালিক তারা নয়। স্ব-স্ব এলাকার প্রভাব শালী লোকজন রায়তী হিসাবে তাদেরকে দখলে রেখেছে মাত্র। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,গোরকঘাটা চর পাড়া,ঘটিভাংগা,মুদিরছড়ার বিশেষ একটি মহল এসব রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে বিদেশী মদ,মাদক দ্রব্য চোরাচালান মালেশিয়ায় মানুষ পাচার কাজে ব্যবহার করে আসছে বলে জানা গেছে । মহেশখালীতে বাল্য বিবাহের প্রবনতা রোহিঙ্গাদের,ক্ষেত্রে বেশী লক্ষ্য করা গেছে।কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি চর ও পাহাড়ী এলাকায় অবৈধ ভাবে ঘর তৈরী করে মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের ভাড়া দিয়ে সরকারী খাস জমি দখলে রেখেছে। মহেশখালীর এসব পাহাড়ী এলাকায় ৩ হাজার এর ও বেশী ছোটবড় ঘরবাড়ি গড়ে উঠেছে।এক হাজারের বেশী রয়েছে বস্তিবাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, এসব বস্তি ঘরবাড়িতে বর্তমানে বসবাস করছে ২৫’হাজারের বেশী রোহিঙ্গা নারী পুরুষ। পাহাড়ী এলাকা ও চরপাড়ার সচেতন অধিবাসীরা জানায়, রোহিঙ্গা বসতি বেড়ে যাওয়া সাথে বিভিন্ন চুরি ডাকাতি,চিনতাই,রাহাজানি বাল্যবিবাহ,মাদক দ্রব্য চোরাচালান,পাহাড়ী এলাকায় অস্ত্র তৈরী কাজ ও চিংড়ী ঘের দখল লুটপাট জলদ্যুসুতা, অপহরণ করার কাজে রোহিঙ্গাদের বেশী ব্যবহার করা হচ্ছে। সুত্রে প্রকাশ,কিছু প্রভাপশালী জনপ্রতিনিধির ছত্রছায়ায় এবং তাদের গোপন সহযোগীতায় অনেক প্রবাসী ও রোহিঙ্গারা মোটা অংকের বিনিময়ে নিজেদেরকে বাংলাদেশী বলে নতুন ভোটার তালিকায় নাম অর্ন্তÍভূক্ত করে বিভিন্ন এলাকায় ভোটার হয়েছে বলে সুত্রে প্রকাশ বলে জানা গেছে। সারা দেশে অভিযান চললেও মহেশখালীতে রোহিঙ্গারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।এখন ও পর্যন্ত মহেশখালীতে রোহিঙ্গা নিধন অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলাকার স্থানীয় প্রশাসন ও সচেতন মহলের অভিমত তড়িৎ গতিতে চর,পাহাড়ের গহীন অরন্যে ও সাগর উপকূলের জনার্কীণ স্থানে চিরুনী অভিযান চালালে এসব রোহিঙ্গাদের আটক করা না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
পাঠকের মতামত: