চকরিয়া নিউজ ডেস্ক ::
চারদিকে জলরাশি, মাঝখানে ছোট ভূখ-। নাম মহেশখালী। পান চাষের জন্য এই দ্বীপের পরিচিতি দেশবাসীর কাছে অনেক আগে থেকেই। এবার এই দ্বীপটি বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিতি হচ্ছে ডিজিটাল দ্বীপ হিসেবে। ‘কনভার্টিং মহেশখালী ইনটু ডিজিটাল আইল্যান্ড’ প্রকল্পের মাধ্যমে দ্বীপটিকে ডিজিটাল করা হয়েছে। কোরিয়ান টেলিকম ও আইওএম গোটা দ্বীপকে তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় নিয়ে এসেছে। দুই বছর আগে দ্বীপটিকে ডিজিটাল ঘোষণা করা হয়। আসলে দ্বীপটি কতটা ডিজিটাল হয়েছে তা দেখতে আজ ২৪ মে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার পরিদর্শনে যাচ্ছেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশে দুটি জায়গাকে পুরোপুরি ডিজিটাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। একটি হচ্ছে সিলেট অন্যটি মহেশখালী। আমি যতদূর জেনেছি এই দুই জায়গার কোথাও পুরোপুরি ডিজিটাল ব্যবস্থা নেই। শুধু নামেই ডিজিটাল। কাজে এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে। আমি দুটি জায়গাই পরিদর্শন করে কার্যকর ব্যবস্থা নেব। দুই বছর আগে দ্বীপটি কোরিয়া ও আইওএমের যৌথ অর্থায়নে ডিজিটাল দ্বীপ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু দ্বীপের মানুষ ডিজিটালের কতটা সুবিধা পাচ্ছে- কিংবা পাচ্ছে না এটা মনিটর করা হয়নি। আমি যত দূর জানি মহেশখালীর স্কুলগুলোতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম করা হয়েছে। কিন্তু এগুলোর কোন ব্যবহার নেই। একটা ভূখ-কে যখন ডিজিটাল করা হয় তখন ওই ভূখ-ের সব মানুষই ডিজিটাল সুবিধার আওতায় আসার কথা। আমার মনে হয় না সেখানকার মানুষ ডিজিটাল সুবিধার আওতায় এসেছে। যে সব ওয়াইফাই জোন করা হয়েছে ওই ওয়াইফাই জোনগুলোও নাকি অচল হয়ে পড়েছে। এ রকম ডিজিটাল সুবিধা তো দরকার নেই। ডিজিটাল কথাটার অর্থ পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হলে তাকে ডিজিটাল বলা চলে না। আমি এসব বিষয়গুলোই দেখতে যাচ্ছি। আমার উদ্দেশ্য ওই দ্বীপের সব মানুষ যাতে ডিজিটাল সুবিধার আওতায় আসে এবং তারা পুরো সুবিধা ভোগ করেন। স্কুলগুলোতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম যাতে চালু করা যায়। বিদেশী টাকায় দ্বীপটিকে ডিজিটাল করা হয়েছে। এখন এর সঠিক ব্যবহার আমাদের করতে হবে। দ্বীপটিতে কি করা উচিত আর কি করা যেতে পারে- এসব বিষয়ে আমি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আর কি কি কাজ করা যায় সেদিকটি ভেবে দেখা হবে। পরের দিন শুক্রবার মন্ত্রী প্রতিষ্ঠিত আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুল মন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেবে। ঢাকায় ফিরে মন্ত্রী মহেশখালী দ্বীপে আরও কি করা যায় তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন।
তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ৪শ’ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে পর্যটন শহর কক্সবাজার জেলার একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মহেশখালী। ৩৬২ দশমিক ১৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। ওই এলাকার মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘কনভার্টিং মহেশখালী ইনটু ডিজিটাল আইল্যান্ড’ শীর্ষক এক ব্যতিক্রমী প্রকল্পের মাধ্যমে দ্বীপটিকে ডিজিটাল করা হয়। কোরিয়ান টেলিকম (কেটি) ও ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাউগ্রেশন (আইওএম) যৌথভাবে কাজটি শেষ করেছে। মহেশখালী বাংলাদেশের অংশ হলেও এলাকাটি অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। এই দ্বীপ ভূমিতে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ সেবা দেয়া হবে। এখানকার মানুষের সঙ্গে আর শহরের মানুষের সঙ্গে কোন পার্থক্য থাকবে না। সমান সুযোগ-সুবিধা তারা ভোগ করবেন। এতে তাদের জীবন মানের উন্নয়ন হবে। তারা তখন ঘরে বসেই বিশ্বকে এক ভূ-খ- হিসেবে ভাবতে পারবে। তাদের আর নদী সাগর বিচ্ছিন্ন করে রাখতে পারবে না।
পাঠকের মতামত: