ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ভূমি মালিকদের বিষফোঁড়া দিয়ারা খতিয়ান

khotian_1আমান উল্লাহ আমান, টেকনাফ:
টেকনাফের দুই মৌজায় দিয়ারা খতিয়ান চুড়ান্ত হওয়ায় প্রকৃত ভূমি মালিকদের বিষ ফোঁড়া হয়ে দাড়িয়েছে। টেকনাফ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে দক্ষিন হ্নীলা ও টেকনাফ মৌজায় দিয়ারা খতিয়ান ছাড়া জমি রেজিষ্ট্রি সম্পাদন করছেনা সাব-রেজিষ্ট্রার। অপরদিকে, উপজেলা ভূমি অফিস বি,এস দাগ দিয়ারা খতিয়ানের সাথে না মিললে খতিয়ান সৃজন করছেনা। এর ফলে সাধারন ভূমি মালিকগণ পড়েছে দু’টানায়।

সুত্রে জানা যায়, গত ১৯৯৪ সনে সরকার জইল্যার দ্বীপকে জরীপের আওতায় আনার জন্য সেটেলমেন্ট অফিসকে নিদের্শ প্রদান করে। এর প্রেক্ষিতে জরীপকারীদল জইল্যার দ্বীপের পাশাপাশি জমি দক্ষিন হ্নীলা ও টেকনাফ মৌজাকে অন্তর্ভূক্ত করে। জরীপকারী দল ভূমি মালিকদের অনুপস্থিতিতে অফিসে বসে, নিজেরদের মনগড়া তথ্য নিয়ে চলে যায়। চলতি বছরে ওই জরীপের চুড়ান্ত ভলিয়ম ভূমি ও সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে প্রেরণ করে। এরপর উক্ত সেটেলমেন্ট অফিস স্ব-স্ব মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জরীপকৃত মৌজায় জারিকৃত মৌজার দিয়ারা জরীপের মাধ্যমে জমি রেজিষ্ট্রি সম্পাদন করার জন্য আদেশ প্রদান করে। এর প্রেক্ষিতে ভূমি ও সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস ভূমি মালিকদের কে দিয়ারা জরীপ ছাড়া জমি ক্রয় বিক্রয় করা যাবেনা মর্মে জানিয়ে দেয়া হয়।

এদিকে দূই মৌজার ভূমি মালিকগণ এই দিয়ারা জরীপ নিয়ে পড়েছে বিপাকে। তাদের কাছে এখন দিয়ারা খতিয়ান বিষ ফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে। ভূমি মালিকগণ এ খতিয়ান সম্পন্ন করতে উভয় অফিসে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেছে। কিন্তু ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, ১৯৯৪ সালের পর যে সমস্ত ভূমির খতিয়ান বি, এস মূলে সৃজিত হয়েছে এবং ক্রয় বিক্রয় হয়েছে তারাই পড়েছে সব চেয়ে বিপাকে। কেননা, সৃজিত খতিয়ান মূলে সৃজিত দাগের পরিবর্তে দিয়ারা দাগ মিল না হলে খতিয়ান সম্পন্ন করা যাচ্ছেনা। দিয়ারা ভলিয়মে দেখা যায়, দুই মৌজার অনেক ভূমি মালিকের ভূমি থাকা স্বত্ত্বেও তাদের দিয়ারা খতিয়ান হয়নি। এমনকি অনেকের নাম ঠিকানা পর্যন্ত নেই।

এবিষয়ে জালিয়াপাড়ার মৃত হাজী নজির আহমদ চেয়ারম্যানের পুত্র মোঃ আলম জানান, টেকনাফ মৌজার বি, এস ১২৭০ নং, ১৫৩৮ নং ও ১৫৩৭ নং খতিয়ানে ২০.৬৯ একর সম্পত্তি আমার পিতার নামে থাকলেও দিয়ারা জরীপে পিতা কিংবা ওয়ারিশগণের নামে কোন খতিয়ান বা ভলিয়মে নেই। এধরনের অনেক ভূমি মালিকের জমির নাম নিশানা নেই। ভূলে ভরা দিয়ারা জরীপ নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, অতি শিগগিরই ইহা সংশোধনের দাবী জানান।

এদিকে উল্লেখিত বিষয়াদী সংশোধন না হওয়ায় ভূমি মালিকেরা জমি বিক্রয় ও ক্রয় করতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে। কয়েকজন ভূমি মালিক জানিয়েছেন, আমরা এমন বিপদে আছি, আমাদের বিপদে আপদে জমি বিক্রয় করতে পারছিনা। সাব রেজিষ্ট্রি অফিস দিয়ারা খতিয়ান বাধ্যতামুলক করায় জমি বিক্রি করতে পারছিনা। এই জরীপের মজার বিষয় হচ্ছে যে, স্বল্প ভূমি মালিকগণ প্রচুর ভূমির মালিক হতে পেরেছে। ভলিয়মে তাদের নাম ও ঠিকানা স্পষ্ট। মুল মালিকারা পড়েছে বিপাকে ও হতাশায়।

এবিষয়ে ভূমি মালিকগণ চুড়ান্ত দিয়ারা জরীপ পূনঃ সংশোধনের দাবী জানিয়েছেন।

এব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোমেনা আকতার জানান, দিয়ারা খতিয়ান চুড়ান্ত হয়ে গেছে। খতিয়ানে ভূলত্রুটি বিষয়ে অবগত রয়েছি। ছোট ছোট বিষয়গুলো সংশোধন করার এখতিয়ার থাকলেও বড় বিষয়গুলো আদালতে যাওয়া ছাড়া বিকল্প নাই।

 

পাঠকের মতামত: