ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

বিদেশের মাটিতে রোহিঙ্গাদের আরও একটি ঈদের প্রস্তুতি

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া ::

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে কয়েক দফায় প্রাণ ভয়ে পালিয়ে এসে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা। ঈদ উল আজাহা উপলক্ষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সরকারি-বেসরকারি ভাবে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিদেশের মাটিতে আরও একটি ঈদ উদযাপন করবে রোহিঙ্গারা।

উখিয়া টেকনাফের প্রায় ৩২টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা পরিবারগুলো ঈদ যেন ভালভাবে উদযাপন করতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার ও দাতা সংস্থাগুলোও।

এ বছর উখিয়া টেকনাফের ৩২টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া ২ লাখ ১০ হাজার পরিবারের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণের লক্ষ্যে কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত বিতরণের জন্য আড়াই হাজারের মতো পশু পাওয়া গেছে। বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় শরণার্থী ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশন অফিস ইতোমধ্যে তালিকা প্রণয়ণের কাজ প্রায় চূড়ান্ত করেছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয়দের মাঝেও বিতরণ করা হবে কোরবানির মাংস। ঈদের নামাজের জন্য প্রতিটি ক্যাম্পে থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা।

কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোরবানির ঈদ নিয়ে নিজেদের মাঝে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে রোহিঙ্গাদের।

এছাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের কমপক্ষে নয়শ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় হবে বলে জানা যাচ্ছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় জানায়, ঈদ উপলক্ষে তুরস্কভিত্তিক এনজিও ডায়নেট ফাউন্ডেশন ৫০ হাজার কেজি মাংস বিতরণ করবে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মাঝে। ওই এনজিও’র এশিয়ার কডিনেটর ওজোজাহান জানিয়েছেন, বিশ্বের ১৬০টি দেশে তারা কোরবানির মাংস বিতরণ করে। এতে সর্বোচ্চ বিতরণ হবে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে। এছাড়া রংপুরসহ বাংলাদেশের আরো কিছু এলাকায় ও তারা কোরবানির মাংস বিতরণ করবে তারা।

গত ঈদের দিন উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন শিবির ঘুরে দেখা গিয়েছিল শিশুরা সকাল থেকেই সেজেগুজে, নতুন জামা-কাপড় পরে ক্যাম্পের রাস্তায় হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দে মেতে উঠেছে।

এছাড়া শিশুদের জন্য কুতুপালংয়ে বেশ কয়েকটি জায়গায় নাগরদোলা, চড়কিসহ মিনি মেলা বসেছিল।

গত ২০১৭ সালের কোরবানি ঈদের মাত্র কয়েকদিন আগে ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী সংগঠন আরসা রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলা চালায়। প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নিপীড়নমূলক অভিযান শুরু করে। এর ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

পাঠকের মতামত: