বান্দরবানে অপহৃত আওয়ামী লীগ নেতা মংপ্রু মারমার খোঁজ মেলেনি ২৮ দিনেও। আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) অস্ত্রধারী চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে জেলা শহরে অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত শতাধিক পাহাড়ী পরিবার।
রোববার (১০ জুলাই) সকালে বান্দরবান প্রেসক্লাবের সামনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নেয় পালিয়ে আসা পরিববারগুলো। এছাড়াও আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।
অপহৃত আওয়ামী লীগ নেতা মংপ্রু মারমার মুক্তি, পাহাড়ে চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবীতে অন্যান্যদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যসাপ্রু মারমা, রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হ্লাথুরী মারমা, যুবলীগ নেতা পাইলাঅং মারমা, সন্ত্রাসীদের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে আসা তালুকদার পাড়া কার্বারী (গ্রাম প্রধান) মংপু মারমা, মামলা বাদী হ্লামংচিং মারমাসহ সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধন শেষে সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে আসা পাহাড়ীরা জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় রোববার দুপুরে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা সভায় পাহাড়ে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জোরালো দাবী উঠে।
তালুকদার পাড়া কার্বারী (গ্রাম প্রধান) মংপু মারমা বলেন, ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা এবং আগুন দিয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে তালুকদার পাড়া, তারাছা এবং জামছড়ি পাড়া থেকে শতাধিক পাহাড়ী পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে জেলা সদরের আবাসিক হোটেলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছি।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক লক্ষি পদ দাস বলেন, আওয়ামী লীগকে পার্বত্যাঞ্চলে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতা মংপ্রু মারমাকে অপহরণ করা হয়েছে। পাহাড়ে জেএসএস সন্ত্রাসীদের আতঙ্কে সাধারণ মানুষেরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। চাঁদাবাজির টাকায় জেএসএস সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্রের মওজুদ বাড়াচ্ছে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, অপহৃত আওয়ামী লীগ নেতা মংপ্রু মারমার কোনো খোঁজ ২৮ দিনেও পাওয়া যায়নি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে দাবী করলেও তারা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ২৩ জুন রাতে জেলার জামছড়ি পাড়া থেকে বান্দরবান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মংপু মারমাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায় জেএসএস সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় অপহৃত নেতার মুক্তির দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে অনিদিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়ে দু’দফায় ৩ দিন বান্দরবানে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচী পালন করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু প্রশাসনের আশ্বাসে পরবর্তীতে অনিদিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচী স্থগিত করা হয়।
পাঠকের মতামত: