আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
‘সেফ জোন’ (নিরাপদ অঞ্চল) তৈরি করতে বাংলাদেশের দেয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার সরকার। মিয়ানমারের ভেতরে সীমান্তের কাছে ওই অঞ্চল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির কার্যালয়ের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে দেশটির জাতীয় দৈনিক মিয়ানমার টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
স্টেট কাউন্সিলর অফিসের মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ইউ জ্য তে বলেছেন, নিরাপদ অঞ্চল তৈরির পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার। একবার প্রতিষ্ঠা হয়ে গেলে আন্তর্জাতিক কর্তারা এর নিয়ন্ত্রণ নেবেন।
গত সপ্তাহে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রসের মাধ্যমে নিরাপদ অঞ্চল তৈরির জন্য মিয়ানমারকে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে নেই পি দোতে ইউ জ্য তে নিরাপদ অঞ্চল তৈরির প্রস্তাবের ব্যাখ্যা করেন। একই সঙ্গে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে কেন অংশ নেবেন না সে বিষয়েও কথা বলেন তিনি।
সু চির কার্যালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, রাখাইন রাজ্যের দুটি সম্প্রদায়ের পুনর্বাসন ও মানবিক সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যেই জাতিসংঘের সম্মেলনে অংশ নেয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন স্টেট কাউন্সেলর।
ইউ জ্য তে বলেন, অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা, সুরক্ষা এবং নিরাপত্তায় গুরুত্বারোপ ও পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য তিনি সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। এছাড়া সু চির সফর বাতিলের পেছনে সন্ত্রাসীদের হামলা ও প্রেসিডেন্ট ইউ তিন কিয়াওয়ের অসুস্থতাও রয়েছে।
আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে জাতীয় ঐক্য এবং শান্তি প্রক্রিয়া সম্পর্কে ভাষণ দেয়ার কথা ছিল সু চির। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় এই উপদেষ্টা অধিবেশনে অংশ নেয়ার পরিকল্পনা বাতিল করলেও ভাইস প্রেসিডেন্ট ইউ হেনরি ভ্যান থিও অংশ নেবেন।
গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির পুলিশের ৩০টি তল্লাশি চৌকি ও একটি সেনাক্যাম্পে হামলা চালায় রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা। এ হামলার জেরে রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গাবিরোধী ক্লিয়ারেন্স অপারেশনে ৩ লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির সরকার।
ইউ জ্য তে বলেন, রোহিঙ্গাদের ৪৭১টি গ্রামের মধ্যে ১৭৬টি অর্থাৎ ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ গ্রাম এখন জনমানবশূন্য। এছাড়া ৩৪টি গ্রামে অল্প কিছুসংখ্যক মানুষ অাছে। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে চলমান সামরিক অভিযান প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বলে দাবি করেছে মিয়ানমার সরকার।
পাঠকের মতামত: