নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
#নদীর তীর দখল উচ্ছেদ দ্রুত হবে: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
# ১২ হাজার একর বনভূমি উদ্ধার করে বনবিভাগকে ফিরিয়ে দেয়া হবেঃ পরিবেশ ও পরিবেশ উপদেষ্টা
জেলা শহরের প্রধান নদী বাঁকখালী এখন দখল-দূষণে মৃতপ্রায়। শহরের ময়লা–আবর্জনা ফেলে নদীর তলদেশ ভরাট চলছে। নদীর জায়গা দখল ও প্যারাবন ধ্বংস করে গড়ে তোলা হয়েছে কয়েক হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা। আর এই দখল-দূষণ সরেজমিনে দেখে হতবাক হয়েছে সরকারের দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট দুইটি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাটসহ বিভিন্ন অংশ সরেজমিনে পরিদর্শনে যান নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
কস্তুরাঘাটে পৌঁছে দুই উপদেষ্টা বাঁকখালী নদীর সীমানা সংলগ্ন মানচিত্র দেখেন। এইসময় কক্সবাজার পৌরসভার ময়লার স্তুপ, দখলে দেখেন দুই উপদেষ্টা যান পেশকার পাড়ার অংশে। যেখানে এখনও জোয়ার-ভাটার পানি আছেন এবং ট্রলার ভিড়ে এমন স্থান দখলের দৃশ্য দেখে হতবাক হন দুইজন। কথা বলেন গণমাধ্যমের সাথে।
এসময় নদীর তীর দখল উচ্ছেদ দ্রুত হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেছেন, আমি বন্দর করবো, বাকিরা দখল করতে তা হয় না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এসব অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে। নদীর নির্ধারিত সীমানা রয়েছে। যা গেজেট আকারে আছে। এর মধ্যে যারা দখল করে আছে তাদের সরে যেতে বলা হয়েছে। তা না হলে উচ্ছেদ করা হবে। অনেক বছর ধরে এই দখল প্রক্রিয়া। নদী বন্দর করতে হলে নদী দরকার। নদীর তীর দখল উচ্ছেদ দ্রুত হবে। সরে যেতে আর সময় দেয়া হবে না।
এসময় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, কক্সবাজার থেকে অনুমানিক ১২ হাজার একর বনভূমি উদ্ধার করে বনবিভাগকে দিয়ে দেয়ার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা তথাকথিত উন্নয়ন এবং ব্যক্তির স্বার্থে ব্যবহারের জন্য দেয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের কয়েকটি কাজ আমরা অগ্রাধিকার হিসেবে ধরেছি মন্তব্য করে তিনি বলেন, কক্সবাজারের ৭ শত একটা বন প্রশাসকে, ১৫৫ একর বনের জায়গা নিয়ে একজন ব্যক্তির নামে স্থাপনা হচ্ছে। ২০ একর জমিতে ফুটবল ট্রেনিং সেন্টার হওয়া কথা ছিল। বেজাকে দিয়ে দিয়ে চিংড়ি ঘের করা জায়গা। সব নিয়ে নেয়া হবে।
‘কক্সবাজারের মানুষের অনেক দিনের দাবি বাঁকখালীকে দখল ও দূষণ মুক্ত করার’- এমন মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, আগে যখন পরিবেশ কর্মী ছিলাম এসেছিলাম। এখন এসেছি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলদের সাথে এসেছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বলছে দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে। কোন কোন ক্ষেত্রে আইন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, হাইকোর্ট থেকে স্থিতি অবস্থা নিয়ে আছে হয়েছে। এসব আইনীভাবে মোকাবেলা করা হবে।
কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের পাশে যেখানে নিমার্ণ কাজ চলছে দেখেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, তার যদি লাগাম টেনে ধরা হন হয় তবে সাধারণ মানুষের সী বীচ ব্যক্তির সী বীচ বা প্রতিষ্ঠানের সী বীচ হয়ে যাবে। এটা হতে দেয়া যাবে না।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রতিবেশ সংকটাপন্ন ইসিএ এলাকায় কার প্রতিষ্ঠান আছে তা আমার দেখার বিষয় নয়। আমার কাজ ইসিএ এলাকায় অনুমোদন ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠান আছে কিনা তা দেখা। অনুমোদন ছাড়া যার প্রতিষ্ঠান থাকবে তা উচ্ছেদ করা হবে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ৫১ একর উচ্ছেদ করা হবে বলে মন্তব্য করে তিনি।
পাঠকের মতামত: