নাছির উদ্দিন আল নোমান :: কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা পোকখালীর গোমাতলীতে লবণ পরিবহনে অবৈধ চাঁদা আদায়ের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় একটি সমিতির নামে চিহ্নিত একটি চক্র নিয়মিত জোরপূর্বক এ চাঁদা আদায় করছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা ।
সরেজমিনে জানা যায়,কক্সবাজার পাউবো’র অধীন পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলী ৬ নং সুইচ গেইটটি বিধি মোতাবেক পোকখালী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইজারা নেয় আবদুল্লাহ নামের এক ব্যাবসায়ী। লবণ মৌসুমের শুরু থেকে ঐ সুইচ গেইট দিয়ে লবণ ব্যাবসায়ীরা দৈনিক ৩/৪ হাজার মণ লবণ লোড-আনলোড করে। তা থেকে ইজারাদার পক্ষ বিধিমোতাবেক রশিদ মুলে টোল আদায় করে আসছে।
কিন্তু লবণ মৌসুম শুরুর মাস দেড়েক পর থেকে হঠাৎ স্থানীয় চিহ্নিত একটি চক্র সুইচ গেইট দিয়ে লবণ আনা নেয়া করতে হলে তাদের প্রতিমণ লবণে ২/৩ টাকা হারে চাঁদা দিতে হবে বলে দাবি করে বসে। লবণ পরিবহনে নিয়োজিত ব্যাবসায়ী ও শ্রমিক মাঝিরা অবৈধ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে লবণ পরিবহনে বাঁধা সৃষ্টি করে এবং মারধরের হুমকি দেয়।এতে নিরুপায় লবণ মাঝি ও ব্যাবসায়ীরা ব্যাবসা রক্ষার স্বার্থে বাধ্য হয়ে নিয়মিত এ অবৈধ চাঁদা আদায় করে চলছে।
অপরদিকে বৈধ ইজারাদারকেও নিয়মিত রশিদ মুলে টোল আদায় করে ব্যাবসায়ীরা।এক কথায় স্বল্প মুল্যের এ লবণ মৌসুমে চাঁদাবাজদের নিকট জিম্মি হয়ে তাদের ব্যাবসা করতে হচ্ছে। যা তাদের উপর” মরার উপর খাড়ার ঘা” হিসেবে দেখা দিয়েছে।
এদিকে সরেজমিনে গেলে লবণ শ্রমিক মাঝি আবদুল গফুর, পিতা- মোস্তাক আহমদ, সাং-উত্তর গোমাতলী,পোকখালী এবং অপর মাঝি জামাল হোছন, পিতা-নুরুল ইসলাম সাং-উত্তর গোমাতলী,পোকখালী উপস্থিত সকল শ্রমিক ও ব্যাবসায়ীদের সামনে সাংবাদিকদের জানান, জসিম, পিতা-জকরিয়া, সাং- গোমাতলী কাটাখালী বারডইল্লা পাড়া পোকখালী,পেঠান পিতা-কবির আহমদ, সাং চরপাড়া,পোকখালী,কায়েস পিতা-ইলিয়াস সাং-পশ্চিম গোমাতলী,পোকখালী সহ তাদের চক্রের আরো কয়েকজন
পশ্চিম গোমাতলী ভুমিহীন সমিতি সুইচ গেইটটি ইজারা নিয়েছে দাবি করে তাদের কাছ থেকে বিনা রশিদে অবৈধ ভাবে জোর পূর্বক চাঁদা আদায় করে চলছে। প্রতিবাদ করলে কিংবা ইজারার অনুকুলে চাঁদার বিপরীতে রশিদ চাইলে তারা উল্টো হুমকি দিয়ে এ সুইচ গেইট দিয়ে লবণ পরিবহন করতে হলে তাদের চাঁদা দিতে হবে।নয়ত লবণ পরিবহন করতে দেয়া হবেনা বলে নানা ভাবে হয়রানির হুমকি দেয়।
উপস্থিত ব্যাবসায়ীরা জানান, তারা নিয়মিত পরিষদ থেকে পাওয়া বৈধ ইজারাদারকে রশিদ মুলে টোল আদায় করার পরও উপরোক্ত চিহ্নিত চক্রটি সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দিনের পর দিন চাঁদা আদায় করে চলছে।প্রতিবাদ করলে উল্টো তারা লবণ ব্যাবসা বন্ধের হুমকি দেয়।
উপরোক্ত অভিযোগের বিষয়ে পশ্চিম গোমাতলী ভুমিহীন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ আকবরের সাথে যোগাযোগ করা হলে চাঁদা আদায়ের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সুইচ গেইট তারা ইজারা নেননি, তবে যে জলপথ দিয়ে বোট প্রবেশ করে ঐখানে তার জায়গা রয়েছে। তাই সে সমিতির সদস্যদের জন্য গুদি খরচ নামে এ চাঁদা আদায় করছে।
অপরদিকে চেয়ারম্যান রফিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, বৈধ ইজারাদার ছাড়া কারো চাঁদা আদায়ের সুযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেবেন।
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার সুইটির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে ব্যাবস্থা নিবেন বলে জানান।
কক্সবাজার পাউবো’র এস.ও.নারায়নের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, রাজঘাট আর. ৬ নং সুইচ গেইটে এরকম কিছু ঘটেছে কিনা জানেন না। তবে এখন খোঁজ নিবেন বলে জানান।
উক্ত সুইচ গেইট দিয়ে লবণ পরিবহনে নিয়োজিত হাজারো শ্রমিক,মাঝি এবং লবণ ব্যাবসায়ীরাও জানান,দ্রুত এ বিষয়টি বিধি মোতাবেক ব্যাবস্থা না নেয়া হলে উভয়পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। তাই তারা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পাঠকের মতামত: