পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :
পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের আবদুল্লাহ আল ফারুক (২৫)। পবিত্র কোরআন বুকে ধারণ করার পাশাপাশি মুজিব আদর্শের সৈনিক হিসাবে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল।
পবিত্র কোরআন হাফেজ হওয়ায় ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে গিয়ে নানা জনের নানা মন্তব্য শুনেও শেখ হাসিনার সারথি হিসাবে রাজনীতি করে গেছে। সেই আদর্শবান সৈনিককে রবিবার বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্মমভাবে পাঠিয়ে হত্যা করে। সোমবার পবিত্র কোরআন বুকে ধারণ করে পরাজিত সৈনিকের মত অন্তিম শয়নে শায়িত হলেন ছাত্রলীগ কর্মী আবদুল্লাহ। পরিবারের স্বপ্ন ধুলায় মিশিয়ে দিলেন বিএনপির ক্যাড়ারেরা।
এ যন্ত্রনা ধারণ করে পিতৃহারা সন্তানের মা আয়েশা বেগম বিলাপ করে বলেন, পবিত্র কোরআন হাফেজ হওয়ার পরও শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার আদর্শ মেনে রাজনীতি করতে গিয়ে কখনো পরিবার থেকে বাধা সৃষ্টি করা হয়নি। ছেলের স্বপ্ন ছিল শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ভাল একটি চাকরি করে তার মা ও ভাই বোনদের সুঃখে রাখবে। কিন্তু ঘাতকেরা তা হতে দেয়নি। মা পুত্রের হত্যাকারীদের দ্রুত আটক করে আইনের আওতায় এনে শাস্তিদাবী করেন।
এদিকে সোমবার বিকাল ৪টায় রাজাখালীর এয়ার আলী খান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। হাজার হাজার জনতার উপস্থিতিতে নামাজে জানায় উপস্থিত হন সদ্য বিপুল ভোটে নির্বাচিত নৌকার প্রার্থী জাফর আলম। ওই সময় জাফর আলম বলেন, ছাত্রলীগ কর্মী আবদুল্লাহ বিএনপির সন্ত্রাসী নেতাদের হাতে নিজের জীবন দিয়ে আমাকে এমপি নির্বাচিত করেছেন। এ ত্যাগের বিনিময়ে আমি চকরিয়া-পেকুয়াবাসীর সেবা করতে চাই। পরে হাফেজ আবদুল্লাহর বাড়িতে যান জাফর আলম। নিজ উদ্যোগে ৫লাখ টাকার অনুদান দেয়ার পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাছে আবদুল্লাহর পরিবারের কথা জানাবেন বলে আশ্বস্ত করে বলেন, নেতাকর্মীরা ধৈর্য ধরুন। আইনে মাধ্যম থেকে খুনিরা কিছুতেই পার পাবেনা।
জানা গেছে, ৩ বোন ৫ ভাইয়ের মধ্যে নিহত হাফেজ আবদুল্লাহ ৩য় সন্তান। ১০ বছর আগে পিতা আবুল কালামকে হারিয়ে মা ও চাচাতের হাতে বড় হয়েছেন। পিতার স্বপ্ন ছিল ছেলে পবিত্র কোরআন হাফেজ হবে। স্বামীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে স্ত্রী আয়েশা বেগম কোন অবহেলা করেননি। শত অভাবের মাঝেও পবিত্র কোরআন হাফেজ হওয়ার পাশাপাশি চট্টগ্রামে অবস্থান করে টিউশনি করে সংসার চলত। শত কষ্ট করে সংসার চালালেও কখনো পিছপা হননি আওয়ামী রাজনীতি থেকে। চট্টগ্রাম থেকে যখন বাড়িতে আসনে তখনি ছাত্রলীগের সভা সমাবেশে তার উপস্থিতি ছিল সরব। ঠিক চট্টগ্রামেও ছাত্রলীগের বিভিন্ন মিটিংয়ে তার উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়।
ঠিক ভোটের ২দিন আগে বাড়িতে আসেন নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য। রবিবার তার ভোটের কেন্দ্র ছিল রাজাখালী ইউনিয়নের মাতবর পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। ওই কেন্দ্রে বিএনপি ক্যাড়ারের স্বশস্ত্র হামলায় হাফেজ আবদুল্লাহ নিহত হওয়ার পাশাপাশি তার দুই চাচা গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুরর পহর গুনছে।
এদিকে ঘটনার দুইদিন পার হলেও হত্যার ঘটনায় মামলা ও আসামী আটক হয়নি। তৃণমূল আ’লীগ নেতাকর্মীদের দাবী ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আটক করা হউক।
পাঠকের মতামত: