পেকুয়া প্রতিনিধি :: পেকুয়ায় কাঠ ব্যবসায়ীদের একমাত্র রেজিস্টারভুক্ত সংগঠন পেকুয়া বাজার কাঠ ব্যবসায়ী সমিতি মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। বর্তমান মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি ফরিদুল আলম তার একক নেতৃত্বে সমিতির কার্যক্রম চালাতে গিয়ে সাধারণ সদস্যদের মতামতকে অগ্রাহ্য করারও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি গত চার বছর ধরে তিনি দায়িত্ব পালন করলেও সাধারণ সদস্যদের নিয়েও কখনো সাধারণ সভা করেনি। দেয়নি আয় ব্যয়ের হিসাব। যার কারণে সাধারণ সদস্যরা মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটি ভেঙে দিয়ে দ্রুত নির্বাচনের দাবী তুলেছেন। গণতান্ত্রিক পন্থায় দ্রুত নির্বাচন দিয়ে সমিতির কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার দাবী জানিয়ে পেকুয়া সমবায় অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপও কামনা করেন সদস্যরা।
জানা গেছে, পেকুয়া বাজার কাঠ ব্যবসায়ী সমিতিতে প্রায় দেড়শ মত সদস্য রয়েছে। বিগত প্রায় ৪বছর আগে সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে ফরিদুল আলম সভাপতি ও দিদারুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন পদে আরো বেশ কয়েকজন নির্বাচিত হয়। নির্বাচনের পর সভাপতির একচেটিয়া নীতির কারণে সাধারণ সম্পাদক সমিতির সকল কার্যক্রম থেকে সরে পড়েন। সভাপতির অগণতান্ত্রিক নীতির কারণে সমিতির নির্বাচিত অন্য সদস্যরাও তাদের কার্যক্রমে ঝিমিয়ে পড়েন। যার কারণে বিগত প্রায় ৪ বছরে একবারে জন্যও সমিতির সাধারণ সভা করে আয় ব্যয়ের হিসাব দাখিল করেনি। কেউ এর প্রতিবাদ করতে চাইলে বিভিন্নভাবে তাদেরকে দেয়া হয় হুমকি। এছাড়াও সভাপতি সদর শেখের কিল্লা ঘোনার বাসিন্দা হওয়ায় তার প্রভাবে সব সময় ভীতির মধ্যে থাকে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা সমিতির সদস্যরা। বড় বড় নেতার সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে এমন হুঙ্কার দিয়ে কেউ ভোটের কথা বললে তাদেরকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করবে বলেও হাকাবকা করেন এমন অভিযোগ সাধারণ সদস্যদের।
সমিতির বেশ কয়েকজন সাধারণ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা সমিতি রেজিস্ট্রেশন করে নির্বাচন করে নির্বাচিত নেতা বানিয়েছি কারণ আয় ব্যয়ের হিসাব ঠিক রাখা ও যতাসময়ে নির্বাচন দেয়ার জন্য। কিন্তু সভাপতি ফরিদুল আলম সমিতির চার বছর হতে চললেও কখনো আয় ব্যয়ের হিসাব দেয়ার জন্য সাধারণ সভা করেনি। তার মন যা চেয়েছে সেইভাবে সমিতির কার্যক্রম চালিয়েছে। আমাদের কল্যাণের মাসিক জমা টাকার কোন হিসাব তার কাছে রয়েছে কিনাও আমাদের জানা নাই। এছাড়াও সমিতির মেয়াদ শেষ হয়েছে বিগত প্রায় ১বছর আগে। নির্বাচন দেয়ার কোন পরিবেশ তার মধ্যে আমরা দেখতেছিনা।
পেকুয়া সমবায় দপ্তরের সমবায় কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে সদস্যরা আরো বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হউক। সমিতির কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে ও আয় ব্যয়ের হিসাব যতাসময়ে আদায় করার জন্য নির্বাচনের কোন বিকল্প নাই। আমরা চাই সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পন্থায় নির্বাচন হয়ে নেতা নির্বাচিত হউক।
বর্তমান পরিচালনা কমিটির এক সদস্য বলেন, নির্বাচন করার সময় সাধারণ সদস্যদের আমি অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। কিন্তু সভাপতির একচেটিয়ানীতির কারণে সাধারণ সদস্যদের কোন ধরণের পায়দা করতে পারলাম না। আয় ব্যয়ের হিসাব চাওয়াতো দূরের কথা বৈঠকে আমাদেরকে কোন ধরণের কথা পর্যন্ত বলতে দেননা। বর্তমান কমিটির মেয়াদ বিগত প্রায় ৭/৮ মাস আগে শেষ হয়েছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিদারুল ইসলাম বলেন, আমি কিছু বলতে পারব না।
সমিতির সহ-সভাপতি আবু ছালেক বলেন, কমিটি এবং সমিতির বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।
সভাপতি ফরিদুল আলম বিষয়টি পরে জানাবেন বলে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
পেকুয়া সমবায় অধিদপ্তরের সমবায় কর্মকর্তা বলেন, কমিটির বিষয় আমি তাদেরকে বার বার বলার পরও তারা আমার সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ করতেছ না। আমি আবার বলব যদি না আসে কমিটি ভেঙে দেবো।
পাঠকের মতামত: