মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :: কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলায় গত মাসের ২৪ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের মাঝে ত্রাণের টিন বিতরণের জন্য করা উপকারভোগীদের তালিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে গতকাল ৯ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে পেকুয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনিয়মের মাধ্যমে তৈরীকৃত তালিকা মতে কথিত উপকারভোগীদের মাঝে ত্রাণের টিন বিতরণের সময় ব্যাপক হট্টগোলের কারণে বিতরণ বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। উপজেলার টইটং, পেকুয়া সদর ও উজানটিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের উপকারভোগীদের পেকুয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এনে প্রত্যেক উপকারভোগীর মাঝে দুই বাইন টিন ও ৬হাজার টাকার চেক করে বিতরণ শুরু করেন পেকুয়া পিআইও অফিস। এদিন সন্ধ্যা নাগাদ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে টিন বিতরণের সময় তালিকা তৈরীতে ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে দাবি করে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানান পেকুয়া সদর ইউপি সদস্য মো: ফোরকান। ইউপি সদস্য প্রতিবাদ করলে উপস্থিত স্থানীয় কয়েকজন সচেতন ব্যক্তিও প্রতিবাদ শুরু করেন। এসময় উপকার ভোগীদের মাঝে টিন বিতরণ বন্ধ করে দেয় পেকুয়া পিআইও অফিসের সহকারী প্রকৌশলী মো: গিয়াস উদ্দিন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টইটং, পেকুয়া ও উজানটিয়া ইউনিয়নের ঘূর্ণিঝড় হামুনে ক্ষতিগ্রস্ত দুই শতাধিক উপকারভোগীর মাঝে ত্রাণের টিন বিতরণ করা হচ্ছে। সন্ধ্যার দিকে বিতরণের সময় হট্টগোল তৈরী হওয়ায় টিন বিতরণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি এ প্রতিনিধির কাছে স্বীকার করেছেন।
পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো: ফোরকান বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের তান্ডবে আমার ওয়ার্ডের অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। আমি অসহায় গরীব দেখে দেখে ৫টি নাম দিয়েছি ত্রাণের টিনের জন্য। এখন টিন বিতরণস্থলে এসে দেখি আমার দেওয়া ৫জনের মধ্যে একজনের নামও ওঠেনি বিতরণের তালিকায়। এ ধরনের অনিয়ম ও বৈষম্য কোনভাবে মানতে পারিনা। ইউপি সদস্য আরো বলেন, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা যদি ত্রাণের টিন না পায়, তাহলে সরকারি টিনগুলো কার জন্য এসেছে?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৪ অক্টোবর পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ঘূর্ণিঝড় হামুনে প্রায় দুই হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। ঘূর্ণিঝড়ের পর সরকারের পক্ষ থেকে পেকুয়ার সাত ইউনিয়নে ১৮মে:টন চাল ও নগদ দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব বরাদ্দ উপজেলা পিআইও অফিস থেকে জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে উপজেলার সাত ইউনিয়নে উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয়। উপ-বরাদ্দের পর উপজেলার সাত ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করে বিতরণ করে দেয়। তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত উপকারভোগীদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত না করে ত্রানের টিনের তালিকায় স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তালিকা তৈরী করা হয়েছে। আর সে তালিকা মতে অনিয়মের মাধ্যমে ত্রানের টিন বিতরণ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো: আবু তাহের এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় হামুনে বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রানের টিন বিতরণ করা হচ্ছে। তালিকায় কোন অনিয়ম হলে সেটি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
পাঠকের মতামত: