মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের বারাইয়াকাটা গ্রামে গত ১৬ এপ্রিল ‘ছেলেধরা’ অপবাদ দিয়ে বৃদ্ধা নারী কালা ভূতি (৫৫) এর উপর অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় ১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গত ২১ এপ্রিল রাতে পেকুয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন নির্যাতনের শিকার কালা ভূতির ভাই কুতুবদিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের হাজী মফজল মিয়া পাড়া গ্রামের ছদর আহমদের পুত্র জয়নাল আবেদীন। যার মামলা নং ১২।
আর মামলাটি তদন্ত করছেন পেকুয়া থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই শফিকুর রহমান। মামলা হলেও এ ঘটনায় জড়িতরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। মামলা প্রত্যাহারের জন্য আসামীরা বাদীকে নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মামলার আসামীরা হলেন, পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের কাদিমাকাটা গ্রামের আবদুন নুরের পুত্র নাজিম উদ্দিন (৩০), একই ইউনিয়নের বারাইয়াকা গ্রামের মৃত আবুল কাসেমের পুত্র ও পেকুয়া উপজেলা বিআরডিবি অফিসের মাঠ পরিদর্শক আবদুল জব্বার (৩৩), আলমগীরের পুত্র শাহাব উদ্দিন (২২), রাজাখালী বামুলা পাড়া গ্রামের মৃত বজল আহমদের পুত্র আবুল কাসেম (৩৩), নুরুচ্ছবির পুত্র আনসার (৩৩), বারাইয়াকাটা গ্রামের কালু মিয়ার পুত্র বদিউল আলম (৩৫), নুরুল হোসেনের পুত্র নাছির উদ্দিন (২৮), রাজাখালী বামুলা পাড়া গ্রামের মহি উদ্দিনের পুত্র নুরুচ্ছবি (২৭), বারাইয়াকাটা গ্রামের আহমদ হোসেনের পুত্র নুরুল আবচার (২৮), আউয়ুব আলীর পুত্র রেজাউল করিম (২৬)সহ আরো ৪০/৫০ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামী করা হয়েছে।
মামলার বাদী জয়নাল আবেদীন এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, গত ১৬ এপ্রিল সকালে তার মানসিক ভারসাম্যহীণ বোনকে মামলার আসামীরাসহ আরো অজ্ঞাতনামা লোকজন ছেলেধরা অপবাদ দিয়ে পরনের কাপড়-ছোপড় খুলে পেলে বিবস্ত্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে। তার বোন আগের দিন ১৫ এপ্রিল সকালে তাদের বাড়ী থেকে বের হয়। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় পায়ে হেটে বারাবাকিয়া ইউনিয়নের বারাইয়াকাটা গ্রামের রাস্তায় মাথায় পৌছালে মামলার আসামীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে।
মামলার বাদী অভিযোগ করেছেন, তার বোনের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত মূলহোতা পেকুয়া উপজেলা বিআরডিবি অফিসের পরিদর্শক আবদুল জব্বারের নেতৃত্বে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। মামলা দায়েরের এক সপ্তাহ পার হলেও এ মূলহোতাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আবদুল জব্বার মামলা দায়েরের পর থেকে প্রকাশ্যে ঘুরফেরা করছে এবং প্রতিনিয়তই পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চার তলায় বিআরডিবি অফিসের কর্মস্থলে উপস্থিত থাকলেও পুলিশ তার খোঁজ পাচ্ছেনা! অভিযোগ রয়েছে, পেকুয়া উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা নুরুল আলম মিয়াজী তার অফিসের কর্মচারী আবদুল জব্বারকে ওই মামলা থেকে বাঁচাতে নানা ধরনের তদবীর শুরু করেছে। মামলা হলেও সরকারী চাকুরীতে বহাল তবিয়তে থাকলেও সরকারী বিধি অনুযায়ী আবদুল জব্বারের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা বিআরডিবি কর্মকর্তা নুরুল আলম মিয়াজী।
এ বিষয়ে জানতে পেকুয়া বিআরডিবি কর্মকর্তা নুরুল আলম মিয়াজীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ওই মামলাকে ভূঁয়া বলে মন্তব্য করেছেন এবং ওই বৃদ্ধা নারীকে নিয়ে নানা ধরনের কটাক্ষ মন্তব্য করেছেন। এক পর্যায়ে এ সরকারী কর্মকর্তা দাম্বিকতার সূরে আরো বলেন, ওই মামলায় তার অফিসের মাঠ পরিদর্শক আবদুল জব্বারকে কিছুই করতে পারবেনা। পুলিশও তার অনুমতি ছাড়া গ্রেফতার করতে পারবেনা বলে হুংকার দিয়েছেন তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শফিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মামলাটি তিনি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছেন আর আসামীদের গ্রেফতার করতে তিনি চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
#################
পেকুয়া দূর্বৃত্তদের হামলায় ছাত্র সমাজ নেতা আহত
পেকুয়া প্রতিনিধি :::
পেকুয়া উপজেলা জাতীয় ছাত্র সমাজের সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন দূর্বূত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে। তিনি উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের বারাইয়াকাটা গ্রামের মৃত ঠান্ডা মিয়ার পুত্র বলে জানা গেছে। তাকে পেকুয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে, গতকাল ২৭ এপ্রিল বিকালে পেকুয়া বাজারের ফাশিয়াখালী ব্রীজ এলাকায়। পেকুয়া থানা পুলিশের এসআই সুমনের নেতৃত্বে একদল পুুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
আহত ছাত্র সমাজ নেতা জসিম উদ্দিন জানান, ২৭ এপ্রিল বিকালে তিনিসহ কয়েকজন বন্ধু পেকুয়া ভোলাইয়াঘোনা এলাকায় ক্রিকেটের ম্যাচ খেলতে যায়। এসময় স্থানীয় একদল দূর্র্বূত্ত তাকে জোরপূর্বক পেকুয়া বাজারে অপহরণ করে নিয়ে এসে ব্যাপক মারধর করে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আহত ছাত্র সমাজ নেতা।
পেকুয়া উপজেলা জাতীয় সমাজের আহবায়ক মো. আজিজুর রহমান (এলএলবি (অনার্স এলএমএম) জানান, ছাত্র সমাজ নেতা জসিম উদ্দিনকে অন্যায়ভাবে হামলা করা হয়েছে। তিনি অবিলম্বে হামকারীদের গ্রেফতারসহ দৃন্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
পাঠকের মতামত: