নিজস্ব প্রতিবেদক, পেকুয়া ::
৩য় ধাপের ইউপি নির্বাচনে পেকুয়ার ৬ ইউপিতে ভোটগ্রহণ হচ্ছে ২৮ নভেম্বর রবিবার। নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব রকমের প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা নির্বাচন অফিস।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৬ ইউপির ৫৪ কেন্দ্রের ২৮৫টি বুথে ৯৪ হাজার ২৫১ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫০ হাজার ১৭৭ জন ও নারী ভোটার ৪৪ হাজার ৭৪ জন।
৬ ইউনিয়নের ৩৩টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ’র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তৎমধ্যে ৪ ইউনিয়নের ১২টি কেন্দ্র অতিঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত। কেন্দ্রগুলো হলো, মগনামা ইউনিয়নের মটকা ভাঙ্গা ইফাদ সাইক্লোন সেন্টার, চান্দার পাড়া আজিজিয়া মাদ্রাসা, মগনামা কমিউনিটি সেন্টার, দক্ষিণ মগনামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উজানটিয়া ইউনিয়নের পূর্ব উজানটিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় করিয়াদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজাখালী ইউনিয়নের বকশিয়া ঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজাখালী এলাহিয়া এবতেদায়ী মাদ্রাসা, ফাতেমা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বারবাকিয়া ইউনিয়নের রাখাইন পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, এম এইচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বোধামাঝি ঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিলখালী ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত হলেও অতিঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নেই।
ঝুঁপূর্ণ কেন্দ্র গুলোকে শঙ্কার চোখে দেখছেন সচেতন সমাজ। তাঁদের আশঙ্কা এসব কেন্দ্রে ভোট চলাকালীন সহিংসতার মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।
রাজাখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা মামুনুর রশীদ বলেন, ১ম ও ২য় ধাপের ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও কক্সবাজারে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে।
গত জাতীয় নির্বাচনে রাজাখালীতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। অতীতের এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করে আমরা শঙ্কিত। মগনামা ইউনিয়নের বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, পেকুয়ার ৬ ইউপিতে নির্বাচন হলেও সবার নজর মগনামায়। এখানে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিটি কেন্দ্রে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করবে। যা সহিংসতার পর্যায়ে চলে যেতে পারে।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সকল প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুরো উপজেলায় ৪ প্লাটুন বিজিবি, র্যাব-১৫’র দুটি ইউনিট, কোস্ট গার্ডের ১টি ইউনিট, ৯১৮ জন আনসার ভিডিপির সদস্য, ৩৩ জন ব্যাটালিয়ন আনসার ও পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স সমন্বিতভাবে মাঠে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী মাঠ পর্যবেক্ষণে ১৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এরমধ্যে আচরণবিধি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ১২ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট’র দায়িত্বে থাকবেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শনিবার দুপুরের পর থেকে বিজিবি ও পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স নির্বাচনী এলাকায় টহল জোরদার করেছে।
এদিকে আজ শনিবার বিকেলে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মইয়াদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রাঙ্গণে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংবাদ সম্মেলন করেছে র্যাব-১৫। সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৫ এর খায়রুল ইসলাম বলেন, “নির্বাচনে র্যাব স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে আমরা মাঠে কাজ করবো। কেউ নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করতে চাইলে তাঁদের বিরুদ্ধে র্যাব কার্যকরী পদক্ষেপ নিবে। যা দুষ্কৃতকারীদের জন্য কোনভাবেই মঙল হিবেনা।”
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চকরিয়া নিউজকে বলেন, “প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে প্রশাসন ও আমরা বদ্ধপরিকর। তিনি আরও বলেন, ৬ইউপির মধ্যে একমাত্র সদর ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এ ভোটগ্রহণ হবে। এখানে উপজেলার সর্বোচ্চ ৩০ হাজার ১৪১ ভোটার রয়েছে।
পাঠকের মতামত: