মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া:
পেকুয়া উপজেলায় কথিত ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে অচেনা এক নারীকে দুই ঘন্টা ধরে রশি দিয়ে বেঁেধ রেখে আবারো অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে সংঘবদ্ধ বখাটের দল। ঘটনাটি ঘটে, আজ ১৭ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে বারবাকিয়া ইউনিয়নের ফাশিয়াখালী আন্নর আলী পাড়া গ্রামে। গতকাল শনিবার (১৬এপ্রিল) দুপুরেও একই ইউনিয়নের বারাইয়াকাটা গ্রামের একদল বখাটের দল অচেনা ৫৫ বছর বয়সী এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়েছিল। ওই নারী এখন পেকুয়া সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর উপর কথিত ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে নির্যাতনের এক দিন পরেই ফের একই ইউনিয়নে অপর এক অচেনা নারীর উপর নির্যাতনের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
আজ ১৭ এপ্রিল বিকালে সরেজমিনে বারবাকিয়া ইউনিয়নের ফাশিয়াখালী আন্নর আলী পাড়া গ্রামে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ১৭ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে ওই গ্রামের রাস্তা দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় অচেনা এক নারীকে কথিত ছেলেধরা আখ্যা দিয়ে আটক করে। পরে শওকতের নেতৃত্বে একদল বখাটে সংঘবদ্ধ হয়ে ওই নারীকে রঁশি দিয়ে বেঁধে প্রায় দুই ঘন্টা ধরে নির্যাতন চালায়। তবে অনেক চেষ্টা করেও ওই নির্যাতিত নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় এইচ এম মাহফজ নামের এক যুবক জানান, প্রায় দুই ঘন্টা ধরে আন্নর আলী পাড়া শওকতের দোকানে সামনে ওই নারীকে ছেলেধরা আখ্যা দিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে ওই নারীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আন্নর আলী পাড়া গ্রামে ছেলেধরা আখ্যা দিয়ে ওই গ্রামে অচেনা নারীকে আটকে নির্যাতন করা হলেও এলাকার কোন ব্যক্তির ছেলে বা মেয়ে শিশু ধরে নিয়ে যাচ্ছিলেন সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য কেউ দিতে পারেনি।
জানা গেছে, সম্প্রতি সময়ে পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের কিছু সংঘবদ্ধ বখাটে লোক অচেনা ও মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাদের টার্গেট করে ছেলেধরা আখ্যা দিয়ে নির্যাতন শুরু করেছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পেকুয়ায় কিছু দৃস্কৃতিকারী লোক ছেলেধরা নামে আতংক সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। এলাকায় ছেলেধরার নামে কিছুই হচ্ছেনা। এসব গুজবের নামে এলাকায় আতংক সৃষ্টিকারীরা শিশুদের মাঝে ভয়ভীতি ছড়াতে ছেলেধরা নামে এসব কুৎসা রটনা শুরু করেছে।
পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো. মোস্তাফিজ ভূঁইয়া জানান, পেকুয়ার বিভিন্ন এলাকায় ছেলেধরা নামে অচেনা ও মানসিক ভারসাম্যহীন নারীদের উপর নির্যাতন চালানোর ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। পেকুয়ায় ছেলেধরার বিষয়টি ওসি গুজব বলে উল্লেখ করে এসব ভিত্তিহীন বিষয়ে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
পাঠকের মতামত: