এম.মনছুর আলম, চকরিয়া :: চকরিয়ায় এক হতদরিদ্র মহিলার ১০ শতক জমিতে ফলনকৃত অর্ধশত পেঁপে গাছ কেটে সাবাড় করে দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। এতে অন্তত দুই লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হয় ওই ভুক্তভোগী হতদরিদ্র বাগান মালিকের।
গত ৩ অক্টোবর সোমবার ভোররাতে বিএমচর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাক্কার পাড়ায় নির্মম এ ঘটনাটি ঘটে। পেঁপে বাগানের মালিক ওই এলাকার সফর মুল্লুকের স্ত্রী খোরশেদা বেগম। দুর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে হতদরিদ্র খোরশেদা বেগমের পেঁপে গাছ কেটে ফেলা ঘটনাটি জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় ফলো করে প্রকাশিত হয়। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি নেট দুনিয়া ভাইরাল হলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান ও স্বেচ্চাসেবী মানবিক সংগঠন পিস ফাইন্ডারের উদ্যোক্তা আদনান রামীমের নজরে আসলে তারা হতদরিদ্র মহিলার পাশে মানবিক সহায়তায় হিসেবে পাশে দাঁড়ান। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএমচর ইউনিয়নের বাক্কার পাড়ায় দরিদ্র খোরশেদা বেগমের পেঁপে গাছ কেটে ফেলার খামার বাগানে নির্মম এ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ছুটে যান ইউএনও জেপি দেওয়ান। এসময় স্বেচ্চাসেবী মানবিক সংগঠন পিস ফাইন্ডারের উদ্যোক্তা ও কর্ণধার আদনান রামীম সংগঠনের পক্ষথেকে মানবিক সহায়তা হিসেবে হতদরিদ্র ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন উন্নত জাতের বনজ এবং ফলদ চারা, সার ও বীজ তুলেদেন ইউএনও।
পরে পিস ফাইন্ডারের সদস্যরা গাছ কেটে ফেলা স্থানে বিভিন্ন জাতের ফলদ চারা রোপন করেন। এসময় সাংবাদিক, পিস ফাইন্ডারের সদস্য ও স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
জানাগেছে, খোরশেদা বেগম বাড়ির পাশ্বোক্ত স্বামীর পৈত্রিক ১০ শতক জমিতে বিগত ১ বছর পূর্বে বিভিন্ন জাতের ফলদ ও বনজ চারা রোপন করেন। রোপিত বাগানে প্রায় ৪০ টির মতো উচ্চ ফলনশীল উন্নত জাতের পেঁপে গাছ রোপন করেছিল হতদরিদ্র খোরশেদা বেগম। তিনি ওই বাগানে নানা ধরণের ক্ষেত চাষাবাদ করে অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসা ও পরিবারের সংসারের ঘানি টানিয়ে আসছে। খোরশেদা-সফর মুল্লুকের সংসারে কোন ছেলে সন্তান নেই। তার বাগানের প্রত্যেকটি পেঁপে গাছে থোকায় থোকায় প্রচুর পরিমাণ পেঁপে ধরেছিল। বেশিরভাগ পেঁপে বাজারজাত করার উপযোগী হয়েছিল। এক একটি পেঁপে গাছে এক মণের অধিক ফলন হয়। বাগানের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে স্থানীয় দুর্বৃত্ত কিছু যুবক গত সোমবার ভোর রাতে নির্বিচারে বাগানের ফলনকৃত অন্তত ৩৫টি পেঁপে গাছ কেটে সাবাড় করে নি:শেষ করে দেয় ওই দুর্বৃত্তরা পরিবারের স্বপ্ন।
স্বেচ্চাসেবী সংগঠন পিস ফাইন্ডারের উদ্যোক্তা মানবিক তরুণ আদনান রামীম বলেন, ছেলে সন্তানহীন হতদরিদ্র খোরশেদা বেগমের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন তার ক্ষেতের ফসল। তার বাগানের ফলনকৃত অর্ধশত পেঁপে গাছ কেটে সাবাড় করে দেয় দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেট দুনিয়া জুড়ে ভাইরাল হয়ে পড়ে। মর্মান্তিক এ ঘটনাটি জানার পরে অসহায় ভুক্তভোগী খুরশিদা বেগমের জন্য পিস ফাইন্ডারের পক্ষথেকে উন্নত জাতের দেড়শত বনজ ও ফলদ চারা এবং সার-বীজ নিয়ে মানবিক সহায়তা হিসেবে তার পাশে দাঁড়িয়েছি। এছাড়াও যতদিন পর্যন্ত গাছ গুলো পরিপক্ষ না হবে ততোদিন আমরা তার পাশে সহায়তা করে যাবো ইনশাআল্লাহ।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, বিএমচর বাক্কার পাড়ায় এক দরিদ্র মহিলার ফলনসহ বহু পেঁপে গাছ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি আমাকে সাংবাদিক ও চেয়ারম্যানসহ অনেকে বলেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ কাজটি যারা করেছে তা খুবই নির্মম ঘটনা। যেহেতু মহিলাটি গাছের বিভিন্ন ফলন বিক্রি করে তার সংসার চালায়। যারা এ জগন্য কাজটি করেছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের আইনগত বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঠকের মতামত: