টেকনাফ প্রতিনিধি::
মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাংলাদেশে আশ্রয়ের জন্য পালিয়ে আসতে গিয়ে ধংখালী বালুচরেই ভুমিষ্ট হয়েছে রোহিঙ্গা দম্পতির প্রথম ফুটফুটে সন্তান। তবে প্রসবের তিন দিনের দিন ব্যথা শরীরে ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ভোর রাতে অন্যান্য রোহিঙ্গাদের সাথে নৌকায় নাফ নদ পাড়ি দিয়ে এপারে আসতে সক্ষম হয়েছে প্রসূতি মহিলা। সন্তান সুস্থ থাকলেও মা অসুস্থ শরীরে কাতরাচ্ছে। এখনো পায়নি কোন চিকিৎসা সেবা। তারা হচ্ছে রাখাইনের বুছিডং গুদাম পাড়ার আরিফ উল্লাহর (২০) ও সাবেকুন নাহার (১৮) দম্পতি। গত এক বছর পূর্বে তাদের বিয়ে হয়েছিল। আরিফ উল্লাহ জানায়, গত ১৮ অক্টোবর ঘর থেকে এদেশে আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে গর্ভবতি স্ত্রীকে নিয়ে বের হয়েছি। অনেক কষ্টে লম্বা পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে মংডুর ধংখালী বালুচর সীমান্তে পৌঁছি। সেখানে নৌকার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৯ দিন পর্যন্ত। এ অবস্থায় গত ৬ নভেম্বর স্ত্রী সাবেকুন নাহারের প্রসব বেদনা শুরু হয় এবং রাত ৮ টার দিকে এক ফুটফুটে ছেলে সন্তান ভুমিষ্ট হয়। এ অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ কয়েকটি নৌকা পৌঁছলে জনপ্রতি ৭০ হাজার কিয়াতের বিনিময়ে এপারে আসি। বৃহস্পতিবার ভোর ৫ টার দিকে টেকনাফের মিঠাপানিরছড়া সাগরের সৈকত পয়েন্ট দিয়ে এপারে পৌঁিছ। এখানে টেকনাফ বাস স্টেশনে শরনাথী ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য অবস্থানকালে সন্তানের নাম রাখা হয়েছে জিয়াউর রহমান। এপর্যন্ত চিকিৎসা না পেয়ে প্রসূতি ব্যথায় কাতরাচ্ছে। খোলা আকাশের নীচে ঠান্ডা আবহওয়ায় পর্যাপ্ত কাপড়ের অভাবে সন্তানেরও যতœ নিতে পারছেনা।
শুধু এই দম্পতি নই। এমন আরো অনেক মহেলারা গর্ভবর্তী অবস্থায় এদেশে আশ্রয়ের জন্য আসতে গিয়ে ধংখালী ওই বালুচরে ভুমিষ্ট হয়েছে। এরমধ্যে বুছিডংয়ের কুয়াইচ্ছং পাড়ার মোঃ সালামের স্ত্রী সফিকা বেগম। সেও ৮ দিনের সন্তান নিয়ে এপারে এসেছে। ধংখালী বালুচরেই সেও এক ছেলে সন্তানের জম্ম দেয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে একদিনের ঢুকেছে এক হাজারের অধিক রোহিঙ্গা। তারা সকলে রাখাইনের ধংখালী সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে একমাস, ২০ দিন করে অবস্থান করার পর শাহপরীরদ্বীপ, নাইট্যং পাড়া ও পশ্চিম সাগরের বিভিন্ন সৈকত পায়েন্ট দিয়ে এপারে আসে। পুলিশ তাদেরকে বিভিন্ন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এপারে আসা রোহিঙ্গা শিশুরা বেশীর ভাগ ডায়রিয়া রোগে ভুগছে বলে রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন।
পাঠকের মতামত: