ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

নথি গোপন করে লামা উপজেলা পরিষদের জায়গা বিক্রির অভিযোগ

lama upaমোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

বান্দরবান জেলা প্রশাসকের নিষেধাজ্ঞা, উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিস আদেশ ও স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ ফাইল থেকে ছিঁড়ে ফেলে মৃত ব্যাক্তির নামে সাব কবলা করার অভিযোগ উঠেছে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসের অফিস সুপার মংনুপ্রু মার্মা এর বিরুদ্ধে। গত ৫ এপ্রিল ২০১৭ইং বুধবার সকালে মিউট মামলা নং ২২৫/২০১৫ এর সাব কবলা করা হয়েছে বলে অফিস সূত্রে জানা যায়।

জানা গেছে, লামা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের নামে সরকারী রেকর্ডভুক্ত ৬২ একর জায়গা রয়েছে। উক্ত জায়গার পূর্ব সীমান্ত ঘেষে নারকাটা ঝিরি এলাকায় আব্দুল আজিজ পিতা- মৃত ছিদ্দিক আহাং নামক এক ব্যাক্তি ২৯৩ নং ছাগলখাইয়া মৌজার ১৪১নং খতিয়ানের মালিক। উক্ত জায়গার মালিক তার নামীয় জায়গা বিক্রির করার কথা বলে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে গ্রাম্য কাগজ করে উপজেলা পরিষদের সরকারী জায়গা দখল দেয়। এমন গুরুতর অন্যায়টি অভিযোগ আকারে এলাকার লোকজন জেলা প্রশাসক বান্দরবানকে জানায়। জেলা প্রশাসক উক্ত খতিয়ানের সকল ক্রয় বিক্রয় বন্ধ করে নথি তার কার্যালয়ে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এছাড়া লামা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী পরিষদের জায়গা পরিচি‎িহ্নত না করে উল্লেখিত খতিয়ানের সকল বেচাবিক্রয় বন্ধ রাখতে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও রেজিষ্ট্রেশন অফিসারকে অনুরোধ করে। কিন্তু লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসের অফিস সুপার মংনুপ্রু মার্মা উক্ত সাব কবলা ফাইল থেকে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা চেয়ারম্যানের অফিস আদেশ ছিঁড়ে ফেলে গত ৫ এপ্রিল বুধবার সকালে সাব কবলা সম্পাদন করেন। আরো জানা যায়, মিউট মামলা নং ২২৫/২০১৫ এর একজন ক্রেতা মোঃ নাছির উদ্দিন মৃত। মৃত ব্যাক্তি নামে কিভাবে সাব কবলা হয় সেটা সকলকে ভাবিয়ে তুলেছে। রেজিষ্ট্রেশন অফিসের কর্মচারীদের পুকুর চুরির কারণে আজ অনেক মানুষ জায়গা জমি হারিয়ে নিঃস্ব। তাদের কাছে জনগণ ও সরকারী নথি সংরক্ষণ আদৌ নিরাপদ কিনা বলছে জনগণ।

ভুক্তভোগী মোঃ সোহরাব হোসেন ড্রাইভার বলেন, আমি আব্দুল আজিজ থেকে ১৪১নং খতিয়ানের আন্দর ১৫শতক জায়গা ৯০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করি এবং দখলে আছি। আমি লোকাল সার্ভেয়ার নিয়ে জায়গা মাপ দিয়ে দেখি উক্ত জায়গা উপজেলা পরিষদের। কিন্তু আব্দুল আজিজ তার জায়গা বলে আামকে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের জায়গায় দখল দেয়। নারকাটা ঝিরি এলাকার মোঃ স্বপন জানায়, আব্দুল আজিজ একই ভাবে আমার সাথেও প্রতারণা করেছে।

লামা পৌর মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি/সম্পাদক বিষয়টি নিয়ে বলেন, যারা ব্যাক্তি স্বার্থে কারণে সরকারী সম্পত্তি বিক্রয় করে দেয় তাদের কাছে জনগণের জায়গা জমি নিরাপদ নয়।

এবিষয়ে অফিস সুপার মংনুপ্রু মার্মা জানায় সাব কবলা করার সময় আমি কাগজ গুলো দেখিনি। পরে পেয়ে ফাইলে সংযুক্ত করেছি।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও রেজিষ্ট্রেশন অফিসার খিন ওয়ান নু বলেন, কেউ না কেউ অভিযোগ করতে হবে। না হলে আমাদের করার কিছু নাই।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন, বিষয়টি উদ্বেগজনক। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাঠকের মতামত: