কক্সবাজার জেলা বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে “ফাসিয়াখালীতে বিএনপির প্রার্থীকে হত্যার হুমকি দিলেন আ.লীগের প্রার্থী” শিরোনামে গতকাল সোমবার জেলার বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন এ সংবাদ সম্মেলন এবং প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফাসিয়াখালী ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। তিনি প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার আগে বা পরে এই পর্যন্ত সময়ে আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে বা আওয়ামীলীগের কোন নেতাকর্মী ফাসিয়াখালীতে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী বা তার সমর্থকদেরকে কোন ধরণের হামলা করেনি। এমনকি নির্বাচনী প্রচারণার কাজে বাঁধা বা অন্য কোনভাবে প্রতিবন্ধকতা করা হচ্ছেনা। বলতে গেলে তপসিল ঘোনার পর থেকে ইউনিয়নে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেনি। যেখানে কোন ধরণের ঘটনা ঘটেনি, সেখানে বিএনপির প্রার্থীকে হত্যার হুমকি দেয়ার কথাটি একেবারে বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। মুলত জেলা বিএনপির সেই নেতারা কক্সবাজারে এসি রুমে বসে বিএনপির প্রার্থী এহেছানকে দিয়ে সংবাদ সম্মেলনের নামে কল্পকাহিনী সাজিয়ে ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের শান্তিপ্রিয় আপামর জনগন ও আওয়ামীলীগ সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার অভিপ্রায়ে লিপ্ত হয়েছে। যা বিএনপির প্রার্থীর দেয়া বক্তব্যের সাথে বাস্তবতার লেশমাত্র সর্ম্পক নেই। মাঠের রাজনীতির চেয়ে বিএনপির প্রার্থী ও তাদের নেতারা সংবাদ মাধ্যমে অপ্র-প্রচারে রয়েছে।
আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে যাঁরাই কক্সবাজারে বসে সংবাদ সম্মেলনে করেছেন সেই বিএনপির নেতারাই ২০০৩সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকার আমলে ভোট ডাকাতির মহোৎসব কাহাকে বলে জনসাধারণ ও গণমাধ্যমের সামনে দেখিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁরা ওইদিন (নির্বাচনের দিন) সকাল ৯টায় ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের সকল ভোট কেন্দ্র দখলে নেন। সকাল ১০টার মধ্যে সেই আমলে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট পেপারে ছিল মারেন এবং তা বাক্স ভর্তি করে বিকালে তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষনা করেন। ফলে ওইদিন আমার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেয় তাঁরা। তাদের ভোট ডাকাতির মহোৎসব ও কেন্দ্র দখলের এই চিত্র দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। যা দেশজুড়ে সমালোচিত হয়। ওইদিনের সেই বিএনপি নেতারাই এখন ফাসিয়াখালীতে নিজেদের অযোগ্য প্রার্থীর জনপ্রিয়তা নেই দেখে সংবাদ সম্মেলনের নামে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন।
গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আলীকদম থানায় জমি দখলে বাঁধা দেয়ায় কৃষক হত্যা, দুস্যতা ও চকরিয়া থানায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা এবং দখল-বেদখলসহ অন্তত ৮-১০টি মামলার আসামি জনবিচ্ছিন্ন ও অযোগ্য এহেছানুল করিম নামের ওই ব্যক্তিকে জনপ্রিয়তা যাছাই না করে ফাসিয়াখালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষনা করে কক্সবাজার জেলা বিএনপি ও চকরিয়া উপজেলা বিএনপির নেতারা নির্বাচনের নামে তামাশা শুরু করেছে। তার কারন মনোনয়নপত্র দাখিল করার পর থেকে বিএনপির ওই প্রার্থী এলাকায় কোন ধরণের গনসংযোগে নেই, এমনকি ইউনিয়নের কোন একটি মসজিদে গিয়ে মুসল্লীদের সাথে এই পর্যন্ত কুশল বিনিময় পর্যন্ত করেনি। মুলত কারন হলো, বিএনপির এই প্রার্থী এলাকায় তেমন সাংগঠনিক পরিচিতি নেই। তবে ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের কাছে তার পরিবারের পরিচিতি আছে তার বাবা আলী আকবর একজন দখলবাজ লোক। নানা কায়দায় সাধারণ মানুষের জায়গা-জমি দখল করা তার পরিবারের একমাত্র পেশা। বিএনপির প্রার্থীর একভাই ফুয়াদ বাংলাদেশ নামের একটি হাই হাই কোম্পানী খুলে সঞ্চয়ী আমানতের নামে গত কয়েকবছরে শত শত মানুষের অন্তত ২০-২৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখন এলাকা ছেড়ে লাপাত্তা হয়ে গেছেন। জেলা বিএনপির নেতারা নিশ্চয় এসব ফিরিস্তি জানার কথা। কিন্তু ইউনিয়নে তাদের প্রার্থীর জনপ্রিয়তা, পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা কতটুকু আছে তা না জেনে শুধুমাত্র আওয়ামীলীগ সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য পরিকল্পিতভাবে জেলা বিএনপির কতিপয় নেতারা সংবাদ সম্মেলনের নামে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মিথ্যাচার করেছে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রার্থী এহেছান তার বাবা আলী আকবরকে পুলিশ গ্রেফতারের পেছনে আমাকে দায়ী করেছে। কিন্তু এতে তো আমার কোন ধরণের সম্পৃক্ততা নেই। জেলা বিএনপি নেতা এনামুল হকের বাড়ির পাশে কাকারা ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিন কাকারা এলাকার আবদুর রহিমের স্ত্রী শাহিনা আক্তার বাদি হয়ে চারজনকে আসামি করে ২০১৪সালের ১এপ্রিল চকরিয়া থানায় নারী নির্যাতনের অভিযোগে একটি মামলা (১১৫/১৪) দায়ের করেন। ওই মামলায় থানা পুলিশ গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকায় বিএনপির প্রার্থী এহেছানুল করিমের বাবা আলী আকবরকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু তারা সংবাদ সম্মেলনে প্রকৃত সত্যটি গোপন রেখে আমার উপর দাঁয় ছাপানোর চেষ্টা করেছে।
গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, যেহেতু আমি বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান। পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে ফাসিয়াখালী ইউনিয়নে গত ৫বছরে অভুতপুর্ব উন্নয়ন কর্মকান্ড সাধিত হয়েছে। জনগনের মাঝে পরিষদের শতভাগ সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্টা করা হয়েছে। এই কারনে এবারের নির্বাচনে আমি ব্যক্তিগতভাবে এখনো এলাকায় নির্বাচনী গনসংযোগ বা পথসভা করিনি। কারন ফাসিয়াখালী ইউনিয়নবাসির প্রতি আমার অগাদ বিশ্বাস রয়েছে। তবে ইউনিয়নের প্রত্যেক ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দি মেম্বার প্রার্থীরা প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে সর্বদলীয়ভাবে পথসভা করেন। মেম্বার প্রার্থীদের অনুরোধ আমি তাদের সেইসব পথসভায় উপস্থিত হয়ে জনগনের কাছে দোয়া ও সমর্থন প্রত্যাশা করি।
ফাসিয়াখালী ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগের সত্যতা প্রমানের জন্য সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জেলা বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দকে সাংবাদিকদের নিয়ে ফাসিয়াখালী ইউনিয়নে আসার জন্য আহবান জানাই। একই সাথে বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে যে কোন ধরণের বিভ্রান্তিতে থাকলে তা প্রশাসনের সকল বিভাগকে যাছাই-বাছাইয়ের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। তবে অভিযোগের সাথে সত্যতার অমিল থাকলে আমি বলবো আওয়ামীলীগ সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্নের সাথে জড়িতদেরকে চিহিৃত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রদক্ষেপ নিতে হবে প্রশাসনকে। #
পাঠকের মতামত: