কক্সবাজার প্রতিনিধি :: চলে গেছে বন্যা, তবে তার ক্ষত চিহ্ন এখন দৃশ্যমান। গেল বন্যায় জেলার অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আসবাবপত্র, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষা সামগ্রী, বিভিন্ন বই, বিভিন্ন স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট এ ক্ষতির আওতায় রয়েছে। জেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পেকুয়া এবং চকোরিয়া উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমুহ। আংশিক ক্ষতির শিকার হয়েছে রামু উপজেলার এক তৃতীয়াংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় অর্ধকোটি টাকার মতো। গত ৭ থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত টানা বর্ষণে এ বছরের সবচেয়ে বড় বন্যা দেখা দেয় কক্সবাজারে। প্লাবিত হয় উপকূলীয় এলাকা। জেলার ৯ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পেকুয়া উপজেলার ৫০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং চকরিয়া উপজেলার ১৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিভিন্ন দপ্তর তাদের নিজেদের প্রতি নিরূপণ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ক্ষতির চিত্র প্রেরণ করলেও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গত ১৮ আগস্ট প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ের তালিকা এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে তথ্য প্রেরণ করেছে বলে জ্বালিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষার কর্মকর্তা মনসুর আলী চৌধুরী।
তিনি জানান – আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে তালিকা প্রেরণ করার জন্য বন্যা পরবর্তী নির্দেশ দিয়েছিলাম তারা মাঠে যাচাই করে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে খবরা-খবর নিয়ে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলো এবং ক্ষতির পরিমাপ নির্ণয় করে জেলা অফিসে তালিকা প্রেরণ করেছেন। তাদের তালিকা অনুযায়ী পেকুয়া উপজেলার ৫০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষতির পরিমাণ ২৮ লক্ষ বিশ হাজার টাকা এবং চকরিয়া উপজেলার ১৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষতির পরিমাণ ৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। দুই উপজেলার ৬৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৭ লক্ষ বিশ হাজার টাকা।
তিনি জানান, রাম উপজেলায় ও ১০-১৫টির মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলার পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রেরণ করেছি। কোন কোন বিদ্যালয়ে ৩০ হাজার টাকার মত ক্ষতি আবার কোন কোন বিদ্যালয়ে বিশ হাজার টাকার মতো গড়ে আসবাবপত্রের ক্ষতি হয়েছে। আমরা চক আকারে ক্ষতিগ্রস্তের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ অধিদপ্তরে গত ১৮ আগস্ট প্রেরণ করেছি। আশাকরি অধিদপ্তর তালিকাটা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল সমূহের জন্য দ্রুত সহায়তা প্রদানে উদ্যোগী হবেন।
এদিকে বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ের সমূহ ৩/৪ দিন শ্রেণিকার্যক্রম বন্ধ থাকলেও বর্তমানে পুরোদমে চলছে সকল কার্যক্রম। শিক্ষার্থীরাও স্বাচ্ছন্দে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে চকরিয়া এবং পেকুয়া উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ে সমূহ সাজানোর জন্য ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দ্রুত সহায়তা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের শিখন শেখন উপযোগী শ্রেণিকক্ষ এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন আসবাবপত্রের জন্য দ্রুত সহায়তা আসলে আরো পড়ালেখা কার্যক্রম গতি বৃদ্ধি পাবে।তবে বন্যার কারণে শ্রেণী কার্যক্রমের এখন কোন ব্যাঘাত নেই বলেও জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক অধিদপ্তরে প্রেরিত চকরিয়া এবং পেকুয়া উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম গুলো হল মানিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হারবাং বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লোটনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পশ্চিম দিগরপানখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,বগাচতর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজিয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বমু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,বিলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পোকখালী রেডক্রিসেন্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর সুরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাজমা ইয়াছমিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পূর্ব কৈয়ারবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুচ্ছালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ছোট ভেওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মানিকপুর বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাইরাখালী বনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উঃপঃ রাজাখালী মাতবর পাড়া রাজাখালী ফাতেমাখাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাখালী বকশিয়াঘোনা সরকারি প্রাইমারি, রাজাখালী জিসি সরকারি প্রাইমারি, আবুল হোসেন সিকদার বারবাকিয়া সরকারি প্রাইমারি, উঃ বারবাকিয়া সরকারি প্রাইমারি, এম এইচ সরকারি প্রাইমারি, বারবাকিয়া আখতারুজ্জামান চৌং পেকুয়া মডেল সরকারি প্রাইমারি , গোঁয়াখালী সরকারি প্রাইমারি , ডঃ মেহেরনামা সরকারি প্রাইমারি, মেহেরনামা সরকারি প্রাইমারি, সাবেকনদি সরকারি প্রাইমারি ,বাগগুজারা সরকারি প্রাইমারি, ছালেহা কবির সরকারি প্রাইমারি, নন্দীরপাড়া সরকারি প্রাইমারি, পূর্ব গোয়াখালী সরকারি প্রাইমারি , মইয়াদিয়া সরকারি প্রাইমারি, হরিদাাজি মাহামুদুল হক চৌং ছিরাদিয়া সিরাজুল হক চৌং সরকারি প্রাইমারি, বারবাকিয়া ওয়ারেছিয়া সরকারি প্রাইমারি, শিলখালী পেঠান মাতবর পাড়া জারুলবনিয়া সরকারি প্রাইমারি, হাজী ওবাইদুল হাকিম সরকারি প্রাইমারি, সবুজপাড়া আশরাফ নুর সরকারি প্রাইমারি, শীলখালী সরকারি প্রাইমারি, ফাসিয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডা: মনিরুজ্জামান সরকারি প্রাইমারি, কাছারী মোড়া আসাদ নসরত শাহ খিজির সরকারি প্রাইমারি, টইটং সপ্রাবি, নাপিতখালী সপ্রাবি, পঃ সোনাইছড়ি সপ্রাবি, মধ্য মগনামা সপ্রাবি, উঃ মগনামা সপ্রাবি, দঃ মগনামা সপ্রাবি, পূর্ব মগনামা সপ্রাবি, মগনামা ফরিদ আহমদ চৌঃ সপ্রাবি, শেখ আব্দুল আজিজ চৌঃ সপ্রাবি, মটকাভাঙ্গা সরকারি প্রাইমারি, শরৎখোনা মাহামুদুল করিম চৌংসপ্রাবি, সোনালী বাজার গণপাঠশালা সপ্রাবি, পূর্ব উজানটিয়া সপ্রাবি, পঃ উজানটিয়া সপ্রাবি, সুতাচুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, করিয়ারদিয়া সপ্রাবি, উঃ পূর্ব সোনাইছড়ি সপ্রাবি, মধ্যম উজানটিয়া ভেলুয়ারপাড়া পেকুয়ারচর সপ্রাবি, উজানটিয়া খান বাহাদুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
পাঠকের মতামত: