ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

জাফর আলমকে আগামীতে মনোনয়ন না দেয়ার দাবী আওয়ামীলীগ নেতাদের

# চকরিয়ায় এমপির ভাতিজা ও ভাগিনার নেতৃত্বে আ.লীগ নেতা মহসিন বাবুল ও ইকবাল বদরীর উপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ
# হামলাকারীদের শাস্তি চেয়ে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন।

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::  কক্সবাজার-১( চকরিয়া ও পেকুয়া) আসনের দলীয় সংসদ সদস্য জাফর আলমের ভাতিজা ও ভাগিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের দুই নেতার ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার চকরিয়া আদালতের আইনজীবীর চেম্বারে দিনেদুপুরে সন্ত্রাসীদের হামলায় এ দুই আওয়ামী লীগ নেতা হামলার শিকার হন। এ দুই নেতা হামলার শাস্তি চেয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপি গতকাল বুধবার কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। হামলার শিকার দুই নেতা হলেন, মাতামুহুরী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাহারবিল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল (৬০) ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল দরবেশী (৪০)।

এ দুই নেতাকে এমপি জাফরের ভাতিজা জিয়াবুল ও ভাগিনা মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এসময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক সহসভাপতি সরওয়ার আলম, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক আহবায়ক প্রফেসর একেএম গিয়াস উদ্দিন,সাবেক সহসভাপতি মোসলেম উদ্দিন মানিক, আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক কক্সবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল আলম বাহার,আলমগীর হোসেন, এডভোকেট ফয়জুল কবির।

সংবাদ সম্মেলন পাঠ করেন হামলার শিকার মহসিন বাবুল। এসময় ইকবাল দরবেশী উপস্থিত ছিলেন।
আহত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল জানান, মঙ্গলবার বেলা দেড়টার ইকবাল দরবেশীকে নিয়ে কিছু পুরনো মামলার ব্যাপারে এড. শহীদুল্লাহ চৌধুরীর চেম্বারে অবস্থান করি।

এড.শহীদুল্লাহ চৌধুরী আদালতে থাকায় তার জন্য অপেক্ষা করি চেম্বারে। ওইসময় স্থানীয় এমপি জাফর আলমের ভাতিজা জিয়াবুল হক, ভাগিনা মিজানুর রহমান ও স্থানীয় যুবলীগ কর্মী শওকত ওসমানের নেতৃত্বে ৪-৫ জন অস্ত্রধারী অতর্কিতভাবে আইনজীবীর চেম্বারে প্রবেশ করে। তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গালিগালাজ করতে থাকে সন্ত্রাসীরা। তাদের হুমকি ধমকিতে অসহায় হয়ে পড়ি। এসময় জিয়াবুল, মিজান ও শওকত সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপির নেতৃত্বাধীন বিভিন্ন সভা সমাবেশে কেন যাচ্ছো তা জানতে চান। এসময় তারা তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা অস্ত্র উঁচিয়ে মারধর করে।

আওয়ামী লীগ নেতা মহসিন বাবুল আরও বলেন, এসময় তারা প্রথমে ইকবাল দরবেশীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। হামলায় আহত হয়ে ইকবাল মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ইকবালকে উদ্ধারে এগিয়ে আসলে এমপি জাফরের ভাগিনা মিজান তাকে সিলভার কালারের একটি পিস্তল দিয়ে গুলি করার হুমকি দেন।

একপর্যায়ে মিজান তাকে মারধর ও শাররিকভাবে লাঞ্চিত করে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহৃ রয়েছে। সন্ত্রাসীরা হুমকি ধমকি দিয়ে মুহুর্তের মধ্যে সটকে পড়েন। পরে সহকর্মীরা তাদেরকে উদ্ধার করে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। ইকবাল দরবেশীর বাম চোঁখে মারাত্মকভাবে আঘাত করা হন। তাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেছে বলে দাবী করেন আওয়মী লীগ নেতা মহসিন বাবুল।

সালাহউদ্দিন আহমেদ সিআইপি বলেন, আওয়ামী লীগ এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তিনবার নির্বাচন করেছি। প্রতিবারই ভোট বেড়েছে। এখন মানুষ এমপি জাফর ও তার লোকজনের অত্যাচারে অসহায় হয়ে পড়েছে। চিংড়ি ঘেরে চাঁদাবাজি দখল-বেদখলে মানুষ অতিষ্ঠ। সবখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

এখন আওয়ামী লীগের নেতাদের ওপর হামলা করছে, মারধর করছে। আমরা বিষয়টি দলের হাইকমান্ডে জানিয়েছি। দলের নেতা মহসিন বাবুল প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে মাঠে ময়দানে কাজ করছেন।

এসময়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে সাংবাদিক সম্মেলনে। আগামী নির্বাচনে জাফর আলমকে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য দাবি জানান আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটির দায়িত্ব পালন করা সাবেক নেতারা।

পাঠকের মতামত: