ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫

চশমা কিনে সমস্যায় পড়ছেন রোগীরা

কক্সবাজার প্রতিনিধি :::
জেলায় চশমা ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যে যার ইচ্ছে মত গড়ে তুলেছেন চশমার দোকান। চোখের চিকিৎসা করে চশমা কিনে অনেকেই বিপাকে পড়ছেন। যার ফলে বিপুল টাকা খরচ করে চোখের চিকিৎসা করে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র মতে চশমা না দিয়ে মনগড়া চশমা দেওয়ায় চোখের সমস্যা আরো  বাড়ছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, চোখের চিকিৎসা করে সমস্যা আরো বেড়েছে। চিকিৎসক ঠিকমত ব্যবস্থাপত্র দিলেও দোকান থেকে চমশা কিনে প্রতারিত হয়েছি। পরিক্ষা করে চোখে যে সমস্যা ধরা পড়েছে সেভাবে চশমা দেয়নি দোকানদার। যার ফলে দুইবার চশমা পরিবর্তন করতে হয়েছে।
মহেশখালী সরকারি বার্মিজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল গফুর জানিয়েছেন, যারা চশমা বিক্রি করেন তাদের কোন অভিজ্ঞতা নেই। ব্যবস্থাপত্র মত চশমা দেওয়ার যোগ্যতা তাদের নেই। তারা মানুষের ক্ষতি হলেও মনগড়া চশমা দিয়ে থাকে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় কক্সবাজার শহরে প্রতিটি চক্ষু হাসপাতাল ও চক্ষু চিকিৎসকের চেম্বারের পাশেই গড়ে উঠেছে অসংখ্য চশমা বিক্রির দোকান। তাদের প্রধান লক্ষ্য যেভাবেই হউক চশমা বিক্রি করে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া। তাদের দেওয়া চশমা ঠিকমত হচ্ছে কিনা তা দেখে না। দুর দুরান্ত থেকে আসা লোকজন চশমা নিয়ে বাড়ি গেলে তা সমস্যা হলেও ব্যবহার করে। ব্যবস্থাপত্রের সাথে মিল নেই এমন চশমা ব্যবহার করে চোখের রোগ আরো জটিল হয়েছে।
চকরিয়া ডুলাহাজারার ফজল করিম জানিয়েছেন, চোখে সমস্যা হওয়ায় কক্সবাজারের একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ থেকে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বের হলেই কয়েকজন লোক এসে বলে ভাল চশমা আমাদের দোকানেই রয়েছে। তাদের কথামত নেওয়া চশমা এক মাস ব্যবহার করার পর সমস্যা আরো বেড়ে যায়। পরে ওই ডাক্তারের কাছে পুনরায় এলে তিনি চশমা পরিক্ষা করে দেখে গরমিল পান। এরপর তিনি পরিবর্তন করে দেন।
বদরখালী বাজারের ব্যবসায়ি নুরুল আমিন জানিয়েছেন এই বাজারেও বিক্রি হচ্ছে পাওয়ার যুক্ত চশমা। তারা কিভাবে দেন আমাদের জানা নেই। গ্রামের লোক হওয়ায় কেউ অভিযোগ নিয়ে আসে না। তবে কোন সচেতন মানুষ বাজার থেকে (পাওয়ার যুক্ত)চশমা নেন না।
কক্সবাজার শহরে কর্মরত একজন চক্ষু চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ব্যবস্থাপত্রের সাথে মিল নেই এমন চশমা ব্যবহার করলে চোখের আরো ক্ষতি হবে। কিন্তু ক্ষতি হবে রোগীর, যারা বিক্রি করে তাদের লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই। ব্যবস্থাপত্রের সাথে গরমিল চশমা শিশুরা ব্যবহার করলে বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। চশমা ক্রয় করে তা পুনরায় ডাক্তারকে দেখানো দরকার। তাই এ ব্যাপারে সকলকে আরো সজাগ হতে হবে। চোখ অমূল্য সম্পদ যা ফিরে পাওয়া যায় না। কিন্তু এই স্পর্শকাতর  চোখ নিয়েও কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। এটি একটি অপরাধ।
এ ব্যাপারে কক্সবাজারের সিভিল সার্জেন ডাঃ পুচনু জানিয়েছেন, কোন প্রকার প্রশিক্ষণ ছাড়া (পাওয়ার যুক্ত) চশমা বিক্রি করা একটি অপরাধ। এতে রোগীর বড় ধরণের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: