বিশেষ প্রতিবেদক :: সামান্য একদিনের টানা বৃষ্টিতে প্রথম শ্রেণীর চকরিয়া পৌরসভা পানি তলিয়ে গেছে। শহরের সড়ক ও অলিগলি প্লাবিত হওয়ায় ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছে পৌরবাসী। শনিবার সন্ধ্যা থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়। রাত থেকেই রোববার বিকেল পর্যন্ত থেমে থেমে মুসলধারে বৃষ্টিতে পৌরসভার অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কিছু এলাকায় সড়কের আশপাশের মাটি সরে গেছে।
এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পৌরসভার নাগরিকরা পৌর কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট দিচ্ছে। অনেকে পৌরসভার মেয়র ও পৌর কর্তৃপক্ষের অদক্ষতার কথা উল্লেখ করে মন্তব্য করছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, অপরিকল্পিত নালা নিমার্ণ করা ফলে নালাগুলো দিয়ে পানি চলাচল করতে পারছে না। মূলত ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ হয়ে বৃষ্টির পানি আটকে আছে বলে অভিযোগ পৌরবাসীর। নিয়মিত ময়লা পরিষ্কার না করার ফলে এতে পৌরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। মূলত পৌরসভার অধিকাংশ নালার অসম্পূর্ণ রেখে দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। যেগুলো শেষ হয়েছে সেগুলো ময়লা-আবর্জনায় পরিপূর্ণ হয়ে চলাফেরা যায় না। অনেক জায়গায় সামান্যটুকু নালা-ড্রেন করে বাকি টুকু এমনিতেই ফেলে রেখেছে পৌরসভা কতৃপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টানা বর্ষণে বৃষ্টির পানিতে চকরিয়া পৌরশহরের থানার রাস্তার মাথা, হাসপাতাল রোড, নিউ মার্কেট, সিটি সেন্টার, বিদ্যাপীঠ রোড, পালাকাটা, লক্ষ্যারচর, পালাকাটা, মগবাজার, উকিলপাড়াসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক এলাকার বড় অংশজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে কোমর সমান পানিতে হাঁটাচলা দায় হয়ে পড়েছে।
পৌরসভার চিরিঙ্গা থেকে পালাকাটায় সড়কের ওপর পানি জমে গেছে। এছাড়া জনতা মার্কেট এলাকায় সড়ক দিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কিছু কিছু স্থানে অতিরিক্ত বৃষ্টির পানিতে সড়কের পাশে মাটি সরে গেছে। শহরের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোডে পানিতে ভাসছে ফামের্সীগুলো। অনেক দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে।
এদিকে পৌর শহরের মূল কেন্দ্র সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় রোড, ওয়াপদা রোড, বালক উচ্চ বিদ্যালয়, জনতা মার্কেট, পৌর কিচেন মার্কেটের সামনে কাদায় কারণে সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারছে না। এই নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের অদক্ষতার জন্য দায়ী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা মুখরোচক ক্যাপশন দিয়ে পোস্ট পৌরসভার অনেক নাগরিক।
পৌর কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে চকরিয়ার সাংবাদিক আব্দুল মতিন তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখেন কক্সবাজার জেলার চকরিয়া পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডের বাঁশঘাটা রোডের বেহাল দশা। এই হচ্ছে প্রথম শ্রেণীর চকরিয়া পৌরসভার উন্নয়নের জোয়ারের রোল মডেল। তার পোস্ট অনেকে পৌর কর্তৃপক্ষের অদক্ষতা ও দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন। শহিদুল ইসলাম নামে একটি ব্যক্তি পোস্টে মন্তব্য করেন, চকরিয়া পৌরসভার সকল রাস্তা-ঘাটের একই অবস্থা।
৮নং ওয়ার্ডের ইমরানুল ইসলাম শিশির নামে পৌরসভার আরেক নাগরিক লেখেন, আমাদের পৌরসভার কোটি কোটি টাকা বাজেট দিয়ে কাজ কি? যদি উন্নয়ন না হয়। তাঁর পোস্টে একাধিক ব্যক্তি পৌর প্রশাসনের নানা অব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরেছেন। তারেকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেন, চরম ব্যর্থতা এটা, বর্ষা মৌসুমে প্রচুর ভোগান্তিতে থাকতে হয় অত্র এলাকার জনসাধারণকে।
চকরিয়া পৌরসভার সজিব মাস-উদ মোরশেদ বলেন, ‘ আজ সারাদিন কাজ চলেছে। থানার রাস্তা মাথা, বাস টার্মিনাল, নিউ মার্কেটসহ বেশ কয়েক জায়গা পানি নিষ্কাশনের জন্য পৌরসভার লোকজন কাজ করেছে। আগামীকালের মধ্যে যে সব স্থানে পানি জমে আছে তা নেমে যাবে বলে আশা করছি।’
পাঠকের মতামত: