এম. দিদারুল করিম, পেকুয়া ॥
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তফসিল অনুসারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্টিত হবে ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামীলীগ ও মহাজোটের প্রধান শরীকদল জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য জোটগত প্রার্থীর চুড়ান্ত তালিকা আজ কালের মধ্যে প্রকাশ হতে পারে। এতে কক্সবাজার-১ পেকুয়া-চকরিয়া আসনে জাতীয় পার্টি থেকে পুণঃরায় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন বর্তমান সাংসদ মোঃ ইলিয়াছ। দীর্ঘদিন ধরে মাঠে-ময়দানে চষে বেড়িয়ে দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের সূখ-দূ:খের সাথী রূপে আভির্ভুত হয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতা নির্বাচিত হন কক্সবাজার জেলা জাতীয পার্টির সভাপতি আল্হাজ¦ মোহাম্মদ ইলিয়াছ। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (পেকুয়া-চকরিয়া) আসনে মহাজোটের মনোনয়ন লাভ কঠিন লড়াইয়ের সম্মুখিন ও হচ্ছে মনোয়ন প্রত্যাশীরা। মহাজোটের নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে, মনোনয়ন যোগ্যতার দূর্বল প্রচারনার কারণেই মনোনয়ন থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছে অনেকে। এনিয়ে গ্রামগঞ্জের প্রত্যন্ত পাড়া-মহলায় সৃষ্ট তাদের স্ব স্ব দলীয় নিরব-ভক্ত-নেতাকর্মী-সমর্থক-শুভানূধ্যায়ীরা হতাশায়। জানা যায়, আর্থ-সামাজিক দূরদর্শীতা ও নির্বাচন কেন্দ্রীক রাজনীতির বাইরে এলাকার উন্নয়ন বা দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে সু-সম্পর্ক ধরে রাখাই এবারও ক্ষমতায় আসা ইলিয়াছের লক্ষ। উলেখযোগ্য উন্নয়ন ও জনহিতকর কাজের পাশাপাশি নানা কারণে এ আসনটি পূনরুদ্ধারের প্রত্যাশা জেগে উঠে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে। তবে বর্তমান সাংসদ ইলিয়াছকে ঠেকাতে মরিয়া আওয়ামীলীগের একাংশ। যার নেপথ্যে কাজ করছে মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক প্রভাবশালী এক সদস্য।
এদিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইলিয়াছ এমপি’র নেতৃত্বে পেকুয়া-চকরিয়ার সর্বত্র দলকে সূসংগঠিত করন, দলীয় নেতাকর্মীদের সুখ-দূখে পাশে দাড়ানো, সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা, নিষ্কন্টে দিনরাত অভিরত মাঠ চষে রাজনীতিতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করে আসছেন তিনি। এর সূত্র ধরে গত ৫বছরে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া-পেকুয়ায় সৃষ্টি হয়েছে তার অসংখ্য ভক্ত-সমর্থক। দলের নেতাকর্মী ও ব্যক্তিগত ভক্ত-অনুবক্তের উপর ভর করে এ আসনে তার বিজয়ের অমিত সম্ভাবনা জেগে উঠলেও সম্প্রতি দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহের প্রতিযোগীতায় তার প্রার্থীতা অর্জনের সম্ভাবনা যেন দিন দিন ক্ষীন্ন হয়ে উঠছে। এ আসনটিতে ক্ষমতাসীন দলের তৃণমূল নেতাকর্মী ও সচেতন সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার সাথে সঙ্গতি রেখে যদি তিনি দলীয় মনোনয়ন লাভ করেন কোন না কোন ভাবে তার বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ছিল প্রবল। লাঙ্গল প্রতিকে তার বিজয় অর্জন মানে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া)র আসনটি জাতীয় পার্টিকে জুড়িতে তোলা। মনোয়ন প্রত্যাশী হাজ¦ী মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, কক্সবাজার-১ (পেকুয়া-চকরিয়া) আসনটি একসময় জাতীয় পার্টি(এরশাদ)র’ দখলে ছিল। তাছাড়া এতদাঞ্চল ছিল জাপার দূর্গ। সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকে সাবেক প্রধাণ মন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকারের দূ:শাসনে স্বেচ্ছাচারীতায় সাধারণ মানুষ আজ পর্যন্ত হারে হারে অতিষ্ট। তা থেকে মুক্তি ও পলী বন্ধু এরশাদের সু’শাসন ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দেশ ও জাতী উৎসূক আর উদগ্রীব। এমন পরিস্থিতিতে সৎ, যোগ্য ও আদর্শবান এবং দলের নিবেদীতপ্রাণ ব্যক্তিত্বকে মনোনয়ন দিয়ে জাপা(এরশাদ)র’ দলের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এ আসনটি দ্বিতীয় বারের মতো পূনরূদ্ধারের লক্ষ্যকে সামনে রেখে দলের চেয়ারম্যান সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ ও তার দলকে উপহার দিতে চাই। পাশাপাশি এতদাঞ্চলের মাটি ও মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটানোর স্বপ্ন নিয়েই আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাপা(এরশাদ)র’ মনোনয়ন যোগ্য ব্যক্তি হিসাবে প্রার্থীতা ঘোষনা করেই মনোনয়ন সংগ্রহ করেছি।
অপরদিকে জাপা(এরশাদ)র’ পক্ষে কক্সবাজার-১ (পেকুয়া-চকরিয়া) আসনে প্রার্থীতা চেয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দু রহমান রোহান ও চকরিয়া জাপা নেতা সামশুল আলম। তারাও মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে দাবী করছেন এ আসনটিতে।
এদিকে পেকুয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মনোনয়ন সংগ্রহের তীব্র প্রতিযোগীতার মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জনকারী আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইলিয়াছ এমপি’র মনোনয়ন লাভ এখন তীব্র প্রতিদ্বন্ধীতাপূর্ন। তার চেয়ে বড় কথা হলো সাম্প্রতিক সময়ে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের প্রতি তার ভালবাসা এবং নানাবিধ উন্নয়ন কাজ এতদাঞ্চলের মাটি-মানুষের নজর কেড়ে নেয়। তার প্রতি ইশর্^নিত হয়ে মনোনয়নের বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির চলমান সময়ে দলীয় মনোনয়ন যোগ্যতার প্রচারনার কারনে অনাকাংখিত ভাবে ছিটকে পড়তে পারে বলে মন্তব্য তিনি। আবার তা যেন অবাক হওয়ার নয় বলে মনে করেন এলাকার রাজনৈতিক-সামাজিক বোদ্ধারা। তদুপরী বর্তমান এআসনটি পূনরুদ্ধারে লাঙ্গলের জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব হাজ¦ী মোহাম্মদ ইলিয়াছ এমপিই লাভ করুক সেটাই কামনা করছেন দলটির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষ।
অপর দিকে অমিত সম্ভাবনাময়ী জনপদ চকরিয়া-পেকুয়ায় আসনে দলীয় অন্তকোন্দল নিরসন ও সাংগঠনিক শৃংখলা ফিরিয়ে আনা দাবীদার ক্ষমতাসীন দলের নেতা জাফর আলম বিএ আনার্স এমএ চুড়ান্ত মনোনয় প্রত্যাশা করছেন। চকরিয়া- পেকুয়ার মাটি ও মানুষের জন্য সরকারের প্রবর্তিত সকল প্রকার সূযোগ-সুবিধা বরাদ্ধ লাভে অনণ্য ভুমিকা পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নৌকা সমর্থীত এ প্রার্থী। তৃণমূল পর্যায়ের ভোটারদের দাবীর মূখে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে এ আসনটি উপহার দিতেই তার প্রার্থীতা প্রত্যাশায় মনোনয়ন সংগ্রহ করা হয়েছে। অন্যদিকে গত সংসদ নির্বাচনে আলহাজ্ব সাফিয়া খাতুন এমপি ঢাকা-১৬(মিরপূর) আসনে নির্বাচন করতে ও চকিরয়া- পেকুয়া আসনে মনোনয়ন নিয়ে ছিল। চকরিয়া- পেকুয়া আসনের সংরক্ষিত সাবেক মহিলা সাংসদ আল্হাজ¦ সাফিয়া খাতুন এবারেও আরো একটি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা করেছেন বলে সূত্রটি জানিয়েছে। তাছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে আওয়ামীলীগের পক্ষে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমদ সিআইপি সহ ২৪জন মনোনয়ন সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন। তবে স্বচ্ছ পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে আওয়ামীলীগের ৩০০ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় আল্হাজ¦ সালাউদ্দিন আহমদ সিআইপি’র নাম রয়েছে। এবারের মতো মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আল্হাজ¦ জাফর আলমের মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত বলে জানিয়েছে পেকুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। তিনি আরও জানান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত ও শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতা গ্রহণ না করা পর্যন্ত মাঠে থাকবে আওয়ামীলীগ।
পাঠকের মতামত: