এম.জাহেদ চৌধুরী, চকরিয়া :: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ। একই দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। তারা পরস্পর স্বামী-স্ত্রী। বিএনপির এই দুই নেতা কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে চারবারই বিজয়ী হয়েছেন। তন্মধ্যে স্বামী সালাহউদ্দিন তিনবার ও স্ত্রী হাসিনা আহমদ একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আগামী ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি নির্বাচন করলে স্বামী-স্ত্রীর কোন একজন এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সে লক্ষ্যে স্বামীসহ নিজের জন্য দুটি দলীয় মনোনয়নপত্র
সংগ্রহ করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমদ।
পেকুয়া সদরের বাসিন্দা সালাহউদ্দিন আহমদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএসের দায়িত্ব পালনকালিন পরিচিতি লাভ করেন। পরে ১৯৯৬ সালে অল্প সময়ের ব্যবধানে দুইবার ও ২০০১ সালে একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এসময়ে তিনি অবিভক্ত চকরিয়া থেকে পাঁচটি ইউনিয়ন (বর্তমানে ৭টি) নিয়ে পেকুয়া উপজেলা প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৮ সালে আইনগত জটিলতার কারণে তিনি নির্বাচন করতে পারেননি। তার পরিবর্তে নবম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন তারই স্ত্রী হাসিনা আহমদ। স্বামী-স্ত্রী টানা চার দফায় সংসদ সদস্য থাকাকালিন পিছিয়ে থাকা অবহেলিত পেকুয়াকে নতুন রুপে ঢেলে সাজান। উন্নয়ন করেন ব্যাপক। ওইসময় উন্নয়নের দিক দিয়ে চকরিয়া অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপরও বিএনপি বা খালেদা-তারেক, কিংবা সালাহউদ্দিন আহমদের পরিকল্পনা ও দিক নির্দেশনায় চলে আসছে চকরিয়া-পেকুয়ায় বিএনপি’র কার্যক্রম ও নেতৃত্ব। এমনকি তিনি ২০১৫ সালে নিখোঁজ হয়ে ভারতের শিলংয়ে উদ্ধারের পর অসুস্থতা ও মামলার কারণে সেখানে অবস্থান করেও চকরিয়া-পেকুয়াসহ পুরো কক্সবাজার জেলায় তার দিক নির্দেশনায় সাংগঠনিক কার্যক্রম চলেছে বলে বিএনপি নেতাদের অভিমত।
এরইমধ্যে ঘনিয়ে এসেছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে অংশ নেয়ার লক্ষ্যে হাসিনা আহমদ নিজের জন্য একটি ও স্বামী সালাহউদ্দিন আহমেদের জন্য একটি মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন সালাহউদ্দিন আহমদের প্রেস সচিব সাংবাদিক সফওয়ানুল করিম।
স্থানীয় বিএনপি’র একাধিক নেতা জানান, গত পাঁচ বছর ধরে চকরিয়া-পেকুয়ায় হামলা ও মামলার কারণে দলীয় কর্মকা- এক প্রকার স্থবির রয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আলোকে শান্তিপূর্ণ মিছিল-সভাও করতে দেয়া হয়নি। তবুও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বা তার স্ত্রী হাসিনা আহমদ যেই প্রার্থী হোননা কেন তিনিই বিজয়ী হবেন।
প্রার্থীতা ও নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট হাসিনা আহমেদ জানান, এই আসনটি বিএনপির ঘাঁটি। দলীয় ছাড়াও সাধারণ মানুষ আমার স্বামী সালাহউদ্দিনের ভক্ত। বিএনপি নির্বাচন করলে চকরিয়া-পেকুয়া আসনে আমার স্বামী সালাহউদ্দিন আহমদ প্রার্থী হবেন। তিনি বর্তমানে ভারতের শিলংয়ে অবস্থান করছেন। আইনগত জটিলতার কারণে তিনি নির্বাচন করতে না পারলে তার পরিবর্তে আমি নির্বাচনে অংশ নেব। সে লক্ষ্যে চকরিয়া- পেকুয়ার বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ আমি প্র¯ুÍতি নিয়ে রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, যদি নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়, মানুষ ভোট দেয়ার সুযোগ পায় তাহলে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীই কক্সবাজার-১ আসনে জয়ী হবে।
পাঠকের মতামত: